হাড়ের উপর মাংস
তার মধ্যে, একটু গরম রক্ত ঢেলে
তাকে মন দিয়ে জুড়ে দিলে
একটা সুপুরুষ মানুষ হয়।
পাথর কেটে কেটে মূর্তি বানিয়ে
তার মধ্যে মানুষের নিষিদ্ধ কল্পনা এঁকে দিলে
একটা নখ দন্তহীন দেবতা হয়।
বোমার উপর ঈশ্বরের নাম লিখে
তার মধ্যে শিশু-রক্তের পিপাসা এঁকে দিলে
মানুষের আরাধ্য 'বেহেস্ত' হয়।
পুরুষের অন্ডকোষ কেটে
তার পৌরুষত্বকে, বিঁড়ির ছ্যাঁকায় পুড়িয়ে দিলে
একটা সন্মানীয় ভদ্দরলোক হয়।
নন্দীগ্রাম আর সিঙ্গুরের
গরীব চাষার ক্ষুধার্ত স্বপ্নের মধ্যে
আস্ত একটা মিথ্যের ফড়িং ঢুকিয়ে দিলে
একটা নতুন সরকার হয়।
গরীব মানুষের মূল্যহীন রক্ত দিয়ে
রাস্তায় রাস্তায় সাম্যবাদের আলপনা এঁকে দিলে
লাল ফিতের 'কমিউনিজম' হয়।
জনগণকে জুতো পেটার ভয় দেখিয়ে
ভোটবাক্স ভরে, নিজের পেট মোটা করলে
একটা মহৎ গণতন্ত্র হয়।
ধর্মগুরুদের পাছায় তেল মাখিয়ে
জনগণকে ধর্মের আফিম খাইয়ে দিলে
ধর্ম নিরপেক্ষ একটা দেশ হয়।
রাতের আঁধারে, শীৎকারে শীৎকারে
কোন নারী, প্রতিবেশীর ঘুম ভাঙালে
সমাজ কথিত একটা বেশ্যা হয়।
কাঁধে মদের বোতল নিয়ে
মাতলামি করতে করতে, পাড়ার লোকের
গুষ্ঠির ষষ্ঠী পূজা করলে
একজন সত্যিকারের মরদ হয়।
পৃথিবীটা ঘুরছে। বনবন করে ঘুরছে।
পেন্তীর মা তেঁতুল গাছের গুঁড়িতে
ঘুঁটে দিতে দিতে, অনাহারে ঘুমিয়ে পড়ছে।
নগেন মাস্টার, তার ছাত্রীর বুকে হাত ঢুকিয়ে
ত্রিকোণমিতির- জটিল জটিল অঙ্ক কষছে।
ভোলা মাতাল, বউয়ের গয়না বন্দক দিয়ে
মদ খেয়ে খেয়ে, পেটের যন্ত্রণায় ভুগছে।
নেতারা, তাদের সেক্রেটারির বুকের সুগন্ধ
আপন যৌনাঙ্গে মেখে,
তাদের বৌ-দের জন্য, দামী দামী গয়না কিনছে।
আমাদের মতো চরিত্রহীন কবিরা
ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে, ত্রিশূলে কন্ডোম চড়াচ্ছে।
পৃথিবীটা ঘুরছে। বনবন করে ঘুরছে।
চেঁখে যা ভাই, চেঁখে যা।
এখনই, একটু তোরা চেঁখে যা।
গণতন্ত্রের গরম গরম ঘুগনি
ফুরিয়ে গেলে আর পাবি না।
© অরুণ মাজী
Painting: Hnas Zatzka
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem