ঢেউয়ের শব্দে কে যেন চীৎকার করে উঠলো-
"কেমন আছো? কেমন আছো অমল?
কতদিন দেখিনি তোমাকে।"
এরই জন্য তো বেঁচে থাকা মালবিকা।
এরই জন্য তো
লাঠিতে ভর করে নদী পারে আসা
আকাশে কারও প্রতিবিম্ব দেখা
ঠান্ডা বাতাসে কারও সুগন্ধ খোঁজা।
কেউ যে ভালোবাসে
বুঝতে বুঝতে অনেকটা সময় গড়িয়ে যায়।
যৌবন তখন সন্ন্যাস নিয়ে গুহাবাসী
জীবন তখন লাঠিতে ভর করে বানপ্রস্থে।
একটু বেশি দেরী হয়ে গেলো না মালবিকা?
ঠোঁট যে আজ অবশ
অমৃত আস্বাদনও অসম্ভব।
ঊরু আজ অথর্ব
পুস্প স্পর্শও শিহরণ জাগাতে অপারগ।
এ নখে যেদিন
তোমার উপত্যকায় পূর্ণিমা আঁকার ক্ষমতা ছিলো,
এ বাহুতে যেদিন
তোমার ঝর্ণায় সাঁতার দেওয়ার বাসনা ছিলো,
সেদিন তো কেউ বলেনি
"কেমন আছো? কেমন আছো অমল? "
অমাবস্যা দেখেছো?
ঘুটঘুটে রাতে অমাবস্যা দেখেছো মালবিকা?
দেখেছো চাঁদের তরে
রাতের নিদারুন আকুলতা?
কোন এক পূর্ণিমা রাতে চাঁদ আসে ঠিকই
কিন্তু জ্যোৎস্না তখন
রাতকে গ্রাস করে ফেলেছে।
আজ যে কেবল
মরণ প্রতীক্ষার জ্যোৎস্না মালবিকা!
আজ কেবল মৃত্যুর আলো দেখি।
জীবনে যারা আঁধার দেখতে দেখতে ক্লান্ত
মৃত্যুর আলো বড় প্রিয় তাদের।
তাবলে
জীবনে আলো কি কখনো দেখিনি?
দেখেছি। এক আধবার দেখেছি।
যেদিন তোমায় প্রথম দেখেছি
সেদিন স্বপ্নে কত কত আলো দেখেছি।
স্বপ্নের আলো বড় ক্ষণস্থায়ী।
জেগে উঠলে
আলো মাখা ছাই থাকলেও আলো আর থাকে না।
বাস্তব আর স্বপ্নের দ্বন্দ্বে
নির্মম বাস্তবই চিরকাল জেতে।
স্বপ্ন জিততে পারে না বলেই
তার নাম স্বপ্ন।
কেবল আঁধারই জিতেছে এ জীবনে।
তাই মৃত্যুর জ্যোৎস্না আমার এতো প্রিয় মালবিকা
তাই মৃত্যুর জ্যোৎস্না আমার এতো প্রিয়।
© অরুণ মাজী
Painting: Alfred Edward Chalon
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem
Simahin bhalo lekha