কিছু কথা— অনন্ত শ্রদ্ধা
২
বল্মীকে সেবার প্রথম পুজো। মাত্র ক’মাস আমরা এই আবাসনে এসেছি। প্রায় সকলের সঙ্গে আগে থেকেই চেনা জানা আছে। হৃদ্যতাও আছে কারও কারও সাথে। একটা সাহিত্যপ্রীতি প্রায় সকলের মধ্যে ছিল বলেই একত্র হওয়া। তবু সকলের সঙ্গে তো সমান হৃদ্যতা ছিল না। এই পুজোটা সেই সুযোগ এনে দিল। অমলেন্দুদা তো আগেই বলেছিলেন, বল্মীককে আদর্শ গ্রাম করে গড়ে তোলার কথা। এই উপলক্ষে দারুণ উৎসাহ আর উদ্দীপনা নিয়ে সকলে লেগে পড়লেন। ছোট বড় সবাই। প্রথম বছর আলোদি সম্পাদকের দয়িত্ব নিলেন। প্রত্যেক শনিবার সন্ধ্যায় আমরা মিলিত হতাম অফিসঘরে। । আসলে পুজো তো একটা উপলক্ষমাত্র। চলত আড্ডা। তারপর শুরু হল রিহার্সেল। বল্মীকের বাচ্চাদের দিয়ে তৈরি হবে নাটক। কী নাটক হয়েছিল এখন মনে পড়ছে না। তারপর বাচ্চা এবং বড়দের গানের অনুষ্ঠান। সকলে মিলে হৈ হৈ করে ঠাকুর বায়না দিতে যাওয়া। পুজোর আগের দিন সারারাত ধরে আড্ডা আর মন্ডপ সাজানো। মহিলারা সেই সব দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলেন। সে দায়িত্ব আজও তাঁরা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে চলেছেন। আর সব কিছুর উপর আমাদের দেবদত্ত এখনো পুজো পরিচালনা করে চলেছে। দেবদত্ত এখন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার। এত কাজের মধ্যেও ওঁর পুজোর সবদিক দেখার খামতি নেই। বল্মীকের পুজোর মূল আকর্ষন আড্ডা। এ আড্ডা তো যে সে আড্ডা নয়। এত বড় বড় রথী মহারথীদের আড্ডা। এখনও আমরা সকলে এই আড্ডার জন্যে হা পিত্যেশ করে থাকি সারা বছর। সে বছর প্রথম পুজোর আগের রাতে অমলেন্দুদা পুজোমন্ডপে আলপনা আঁকলেন। সকলে মিলে সেই আলপনার আঁকিবুকির উপর রঙ বুলালাম আমরা। কারণ অমলেন্দুদা তাঁর দরাজ গলায় দারুণ আবেগে সবাইকে ডাকলেন — তোমরা সবাই এসো হাত লাগাও। সেই আলপনাটা আজও একইরকম আছে। আজও প্রতি পুজোয় আমরা ঐ আলপনার উপর নতুন রঙ চড়ায়।
—————————————-
সঞ্জীব.
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem