নির্ঝরা নীলা-কে
তুমি তো জানোই, নীলা, আমার সেই পলাতক অরণ্যজীবনের কথা! সর্বনাশের মতো জ্যোৎস্নায়, সেই যে উড়ে উঠলাম আর পৌঁছে গেলাম পাহাড়ঘেরা এক অরণ্যের দিনে। পাখিদের তখন ডানা থাকতো না; লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁটতো আর গেয়ে উঠতো কী আর্দ্র এক বিষন্নতা! ওরাই তো আমাকে শিখিয়েছিলো বৃক্ষ, পুষ্প ও লতাপাতাদের নাম! শিখিয়েছিলো, কী প্রতিশ্রুতি উচ্চারণ করে ঝরনাও ছেড়ে যায় পর্বতের বুক, তারপর আর ফিরেও আসে না! প্রকৃতির মধ্যে, এই যে, মানুষের চেয়েও জটিল সব নিষ্ঠুরতার গল্প... পাখিরাই তো শোনালো আমাকে! একটা রূপসী পাখির কথা বলি তোমাকে, ফাল্গুনীজ্যোৎস্নায় আমাকে উড়তে দেখে, খুব মনোভার হলো তার। অগত্যা, পীঠের পাখনা দুটো থেকে খুলে ফেললাম ডানা; পরিয়ে দিলাম পক্ষীরূপসীকে। সেই থেকে ডানা পেলো পাখিরা; আর আমি, ওদেরই সাবেক চলনে, লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁটতে থাকলাম। অরণ্যের এই পলাতক জীবন, হয়তো কোনওদিনও আর শেষ হবে না আমার। অনেক কিছুই স্মরণে নেই আমার। কোন বিষুবরেখা থেকে আমি যে উড়ে উঠেছিলাম, সত্যি বলছি নীলা, আমি তার নিশানাও জানি না! মানুষের পৃথিবী থেকে, একদিন অচেনা পাখিদেরই ডানায় চেপে উড়ে এলো তোমার নাম; আমি জানলাম, মানুষের নাম থেকে থাকে; জানলাম, কোনওদিকে মানুষের বসবাস আছে। সেই পক্ষিনীকে আমি তো আর খুঁজেই পাচ্ছি না! আর এই বাতাসের উড়ো চিঠি, আমি জানি, কোনওদিন খুঁজেই পাবে না কারও বিহিত ঠিকানা। তবু আজ তোমারই উদ্দেশ্যে লিখি, বিস্মৃতি-বিখ্যাত এই হৃদয়ের লোহিত-লিপিকা!
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem