তখন, কথা বলে উঠলো নাজিয়া, বললো, ' আমরা মৃত্যু সম্পর্কে জানতে চাইছি।'
আর, জবাবে, সে বললো:
মৃত্যুর তুমি রহস্য জানতে পারবে।
কিন্তু কীভাবে খুঁজে পাবে, যতক্ষণ না জীবনের হৃৎপিণ্ডে অনুসন্ধান করছো তাকে?
পেঁচা, যাদের চোখগুলো দিনের আলো না-ফোটা পর্যন্ত অন্ধ থাকে, তারা তো আলোর রহস্যময়-অবগুণ্ঠন উন্মোচিত করতে পারে না!
তুমি যদি মৃত্যুর আত্মায় দৃষ্টিপাত করতে চাও, জীবনের বিশাল দেহ পর্যন্ত উন্মুক্ত আর বিস্তৃত করো তোমার হৃদয়।
কেননা, জীবন আর মৃত্যু একই ব্যাপার, ঠিক যে-রকম, নদী ও সমুদ্র একই।
তোমার আশা-আকাঙ্খাগুলির গভীরেই নিঃশব্দে থেকে গেছে তোমার বোধের অতীত জ্ঞানসমূহ।
আর বরফের তলে চাপা পড়ে থাকে থাকা বীজগুলি যেমন স্বপ্ন দ্যাখে, তোমার হৃদয়ও বসন্তের স্বপ্নে বিভোর।
আস্থা স্থাপন করো স্বপ্নগুলোর প্রতি, কেননা, ওগুলোর ভেতরেই লুকিয়ে থাকে অনন্তে পৌঁছাবার গোপন-দরোজা।
তোমাদের মৃত্যুভীতি আর কিছুই নয়, এ হলো রাজার সামনে দাঁড়ানো ভয়ে কাঁপতে থাকা সেই রাখালের ভীতি ও কম্পন, যে বুঝতেই পারেনি, রাজার হাতদুটি শ্রদ্ধায় লুটিয়ে পড়তে যাচ্ছে তার পদতলে।
সেই ভয় ও কম্পন ছাপিয়ে রাখাল কি উল্লসিত হয়ে ওঠেনি, যে, তাকে পরিয়ে দেয়া হবে রাজমুকুট?
তথাপি, সে কি তার আনন্দের চেয়ে, কাঁপতে থাকাতেই অধিক মনোযোগী নয়?
কেননা, বাতাসে নগ্ন হয়ে দাঁড়ানো আর সূর্যের মধ্যে দ্রবীভূত হয়ে যাওয়া বৈ মরে যাওয়া তো আর কিছু নয়!
আর নিঃশ্বাস থেমে যাওয়া্ই বা বিরামহীনতার ঋতু থেকে তাকে মুক্তি দেয়া ছাড়া আর কি, যাতে করে সে জেগে ওঠে আর ছড়িয়ে পড়ে এবং বিনা বাধায় অণ্বেষণে যেতে পারে ঈশ্বরের?
যখন তুমি পান করো নৈঃশব্দ্যের নদীজল, কার্যত, কেবল তখনই, তুমি গাইতে পারো সত্যিকারের গান।
আর যখন তুমি পৌঁছে যাও পর্বতচূড়ায়, তখনই তো শুরু হয় পাহাড়ে চড়া!
এবং পৃথিবীর মাটি যখন তোমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোকেও তার নিজের বলে দাবী করবে, তখনই তো নাচবে তুমি, তোমার প্রকৃত নাচ।
* Bengalized by Rahman Henry
** Original:
Death Xxvii- Poem by Khalil Gibran
চমৎকার বাংলায়ন। খুব ভালো লেগেছে। আন্তরিক কৃতজ্ঞতা কবি রহমান হেনরী।