এবং এক যুবা, জানতে চাইলো, ' বন্ধুত্ব বিষয়ে কিছু বলুন আমাদের।'
তোমার চাহিদাগুলোই বন্ধু তোমার, জবাব এলো।
সে হলো তোমার শস্যক্ষেত্র, যেখানে তুমি বপন করো পরম মমতার বীজ আর ফসল তুলে নাও সকৃজ্ঞতার।
আর সে তোমার গৃহজীবনের কাঠের তাক এবং কনকনে শীতে গৃহটির উষ্ণতাবর্ধক অগ্নি-উৎস।
কেননা, বিপুল ক্ষুধা আর অতৃপ্তি নিয়ে তুমি ছুটে আসো তার কাছে, এবং তার কাছেই অণ্বেষণ করো শান্তি।
যখন তোমার বন্ধু কোনও মতামত ব্যক্ত করে, না-বাচকতার কোনও ভীতিই রাখো না মনে, তেমন হলে, হ্যাঁ-বাচকতাতেও স্থির থাকো না তুমি।
আর যখন সে নীরব থাকে, যতি টানো হৃৎপিণ্ডে তোমার, ওই হৃৎপিণ্ডের আওয়াজ অনুমানের জন্য কানও পাতো না।
কেননা, বন্ধুত্বে, নীরবতার মধ্যেই জন্ম নেয় সমস্ত ভাবনা, আকাঙ্খা ও প্রত্যাশাগুলি আর ভাগাভাগি হয়ে যায় দুজনের মনে; আর আনন্দের এই ব্যাপারগুলো ঘটে যায় না চাইতেই।
সাময়িক প্রয়োজনে, বন্ধুর কাছ থেকে যখন দূরে চলে যাও, বিষণ্ণতা নেই কোনও।
কেননা, তার ভেতরের যে যে ব্যাপার ভালো লাগে তোমার, তার অনুপস্থিতিতেই সেগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠে তোমার কাছে; যেমন সমতলের চেয়ে পর্বতারোহীর কাছে পাহাড়কেই অধিক সরল আর স্বচ্ছ মনে হয়।
আর বন্ধুত্বের কাছে চাও, এমন কোনও উদ্দেশ্য, লালন করো না মনের গহীনেও ।
কেননা, যতদূর জানি, ভালোবাসা রহস্যই দাবী করে আর এর উন্মোচন ভালোবাসা নয় বরং লাভের আশায় সামনের দিকে জাল ছুঁড়ে দেয়া: আর সেই জালে, প্রত্যাশার মাছ নয়, অলাভজনক লতাপাতাই উঠে আসে।
আর বন্ধুর জন্য তোমার সর্বোচ্চ ও সর্বত্তোমকে অবারিত করো।
কখনও, সে যদি তোমার মনের ভাটাও টের পেয়ে যায়, অবশ্যই তাকে জোয়ার আর প্লাবণও দেখিয়ে দিও।
কেননা, বন্ধুত্ব কি এজন্য যে, তার প্রহরগুলোকে নষ্ট করতে হবে তোমার?
বরং তার ভেতরে বেঁচে থাকার প্রহরগুলি গুঁজে দাও আর নিজেও অণ্বেষণ করে নাও সেগুলোই।
কেননা, সেই পারে তোমার চাওয়াগুলোর পূর্ণতা দিতে কিন্তু তোমার শূন্যতার নয়।
উপরন্তু, বন্ধুত্ব জুড়ে থাক হাসি-তামাসার উচ্ছ্বলতা আর ভাগাভাগি করে নাও আনন্দগুলি।
কেননা, ঘাসের ডগায় জমা এক বিন্দু শিশিরেই, হৃদয় খুঁজে পায় একটা সুন্দর সকালের সমগ্রতা, আর সজীব হয়ে ওঠে মন।
* Bengalized by Rahman Henry
** Original:
Friendship Ixx- Poem by Khalil Gibran
চমত্কার অনুবাদ // বন্ধুর জন্য তোমার সর্বোচ্চ ও সর্বত্তোমকে অবারিত করো///