একটা শিশু
একটা শিশু লুকিয়ে আছে,
লুকিয়ে আছে সেই কবে থেকে —
কিছুতেই বড় হয় না,
বলি, এবার অন্তত একটু বড় হও।
ও বলে, যাই একবার মইদুলকে
ডেকে আনি।
সেই কখন থেকে
বীরেন ডাক্তারের মাঠে
জড়ো হয়েছি সকলে,
আর একজন হলেই
শুরু করা যায় খেলাটা ।
বিকেল গড়িয়ে যায়।
কলেজ মাঠে তখনও
সারা আকাশ জুড়ে
চাঁদিয়াল পেটকাটার উড়োউড়ি,
আমার সেমিনার বক্তৃতাময়
শুধু ছুঁয়ে যায়
পড়ন্ত বিকেলের আলো,
ইছামতি জলের ঢেউ,
আমি চশমাটা নাকের ডগায়
ঠিকঠাক করে নিতে নিতে দেখি
তখনও দাড়িয়াবান্দা খেলাটা
শেষ হয় নি।
কদমতলায় তখনও ভিড়,
মইদুল মৃদুল ছানাউল্লা
কী হুল্লোড়!
এলসিডি প্রোজেক্টর থেকে
বিচ্ছুরিত আলোর চ্ছটা,
গুরুগম্ভীর বৈজ্ঞানিক তত্বকথা
আড়াল করে বুকের মধ্যে
লাফিয়ে ওঠে শিশুটা,
সমস্ত স্ক্রীন জুড়ে ডেটা
প্রেজেন্টেশন,
লাফালাফি করে কত সংখ্যা,
অঙ্কের স্যারের ব্ল্যাকবোর্ডে —
আমি চমকে বলি,
বড় জ্বালাতন করিস তো!
ও বলে স্কুল শেষে
ফিরে যাস,
শাহানারা রুটি ভেজে
উনুনের তাপে লালমুখ
মুছে নেবে ওড়নায়,
জাহানারা আপা কপটরাগে
বলবে, বড় দুষ্টু হয়েছিস কিন্তু।
আমার সমস্ত দিন চলে যায় —
মেয়ে বলে তোমাকে নিয়ে
আর পারি না বাবা।
মনে মনে বলি,
আয় তোকে ছুঁয়ে থাকি!
আমার অন্তর জ্বলে
ফিরে যায় কথা,
সব শিশুর বুকে জমে
প্রজন্মের ব্যথা ।
- - - - - - - - - -
© সঞ্জীব সাহা
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem