কবিরা সব উন্মাদ, দেশদ্রোহী, মাওবাদী, উগ্রবাদী।
কবিদের অন্তর্বাসে, তবে কাঠ পিঁপড়ে ছেড়ে দেওয়া হোক।
কথা হলো- কবিরা যন্ত্রণায় আর্তনাদ না করলে
সাধারণ মানুষের মুখে কোন কথা ফুটে না।
কবিদের আর্তনাদ হলো
মানুষের- বিবেক, বুদ্ধি, সাহস, ত্যাগ আর বিপ্লব।
সকলেই তো বাঁচে।
সাপও বাঁচে, টিকটিকিও বাঁচে, ছাড়পোকাও বাঁচে, আর ছত্রাকও বাঁচে।
পেন্তীর মা- শীতের দিনে, দশ গ্লাস তাড়ি খেয়ে, বুঁদ হয়ে বাঁচে।
নগেন মাস্টার- প্যারালাইসিস অবস্থায়, আলু বেগুন উচ্ছের মতো বাঁচে।
কালু মস্তান- মদের ঘোরে, কালীঘাটের ঊর্বশীর নরম নরম বুকে, মুখ গুঁজে বাঁচে।
বাঁচে। সকলেই বাঁচে।
কেউ ইঁদুরের মতো বাঁচে, কেউ সিংহের মতো বাঁচে।
কেউ জন্তুর মতো বাঁচে, কেউ যোগীর মতো বাঁচে।
বাঁচলেই হলো! বাঁচার আবার ভেদাভেদ কি?
বিশেষ করে, এই গণতন্ত্রের সাম্যের দিনে!
বাঁচলেই হলো রে পচা, বাঁচলেই হলো।
ভালো ভাবে বাঁচলে কি, তোর আলাদা করে লেজ গজাবে?
জানোয়ার আর মানুষের মধ্যে, আমি কোন তফাৎ দেখি না।
দুজনেই- খায়, দায়, ঘুমায়;
আর বাই উঠলেই, মেয়েদের পানে দৌড়ে যায়।
ওহে মানুষ, এতো বড়াই তো করো!
তোমার সাথে জানোয়ারের তফাৎ কি?
তফাৎ সত্যিই কি আছে?
আছে, আবার নেই ও।
যারা মানুষের চামড়া গায়ে, জানোয়ারের মতো বাঁচে;
তারা বলবে- কোন তফাৎ নেই।
আর যারা মানুষ হয়ে, মানুষের মতো বাঁচে;
তারা বলবে- আছে। আলবৎ আছে। হাজারবার আছে।
কি সেই তফাৎ?
মানুষ কবিতা পড়তে পারে, লিখতে পারে।
কিন্তু জানোয়ার তা পারে না।
মানুষ কবিতার ছন্দে জেগে উঠে
মহাবিশ্বে একটা বিপ্লব আনতে পারে,
কিন্তু জানোয়ার তা পারে না।
তবে, আমি যেহেতু এক উন্মাদ কবি,
আমি জানোয়ারকেও এবার কবিতা শেখাবো।
আমি ওদের মধ্যেও স্বর্গীয় চেতনা আনবো
ওদের মধ্যেও যুগান্তকারী বিপ্লব আনবো।
ফৌজে চাকরী করেছি কি না।
ভবিষ্যতের বিপ্লবের ছক, আমি আগে করে রাখি।
'মানুষ' যদি অধঃপতনের পথে, 'জানোয়ার' হয়ে যায়
তবে 'জানোয়ারগুলোকে' টেনে তুলে- 'মানুষ' করবো আমি।
আজকের বিশ্ব কবিতা দিবসে
এই আমার স্পর্ধাভরা অঙ্গীকার।
© অরুণ মাজী
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem