একেকটা দিন, আমি একেকরকম।
আমি তেলতেলে মসৃন কোন পিচ রাস্তা নই;
আমি বরং ঝর্ণার ধারে থাকা
কোন নুড়ি পাথর ঢাকা, উঁচু নীচু জমি।
নিজের উপর, নিজে হাঁটতে হাঁটতে
আমি নিজেই কখনো কখনো, মুখ থুবড়ে পড়ি।
দাঁত ভাঙে। চোয়াল ফেটে রক্ত বেরোয়।
নিজের চরিত্রের তীক্ষ্ণ ধারালো কোণগুলো
নিজেরই হৃৎপিণ্ডকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয়।
আমি বৃষ্টি নামলে শীতল হই। খরা এলে রুক্ষ হই।
বান এলে প্লাবিত হই। ঝঞ্ঝা এলে বিক্ষুব্ধ হই।
জোয়ার ভাঁটার সাথে সাথে
আমার চরিত্রেও জোয়ার ভাঁটা ঘটে।
সূর্য চন্দ্র গ্রহণের সাথে সাথে
আমার চরিত্রেও পূর্ণ আংশিক গ্রহণ ঘটে।
আমার চরিত্রের- আমি কেবল একা;
তবুও আমি একাকী নই।
সূর্যের সাথে আমার অনেকটা মিল আছে
আমারও বুকে অনেক আগুন আছে।
চাঁদের সাথে আমার অনেক সখ্য আছে
আমার বদনেও অনেক হাসি আছে।
ফুলের সাথে আমার পরিচিতি আছে
আমার বুকেও অনেক গন্ধ আছে।
ফণীমনসার সাথে আমার ভাব আছে
আমার নখেও অনেক বিষ আছে।
একেকটা মুহূর্ত, আমি একেকরকম।
আমি মাখনের মতো শুধু মোলায়েম নই।
আমি বরং কাঁটায় ঢাকা গোলাপ।
মালবিকা শুধু গন্ধ চেয়েছিলো
আমার কাঁটার আঁচড় সে চায় নি।
তাই মালবিকা আমাকে ভালোবাসে নি
মালবিকা আমাকে ভালোবাসতে পারে নি।
কাঁটাহীন গোলাপের সাধনা করে
মানুষ তার- সারা জীবন কাটিয়ে দেয়।
তারপর একদিন-
বাইরে যখন প্রিয়জনের কান্নার রোল
আর বাতাসে- 'বলো হরি, হরি বোল ধ্বনি'
তখন সে মৃত্যুর উপত্যকা থেকে ফিরে এসে
তার সারা জীবনের ভুল ভাঙতে চায়!
ক্ষমাহীন মৃত্যু, তার হাত টেনে বলে-
'চল চল, বড্ড দেরী হয়
জীবনটাকে অনেক পিছনে ফেলে এসেছিস বাছা! '
আমি তো এতো তত্ত্ব জানি, মালবিকা।
তবুও আমিও কেন, তোমার কাঁটা চাই না?
© অরুণ মাজী
Painting by John William Goodward
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem