বিনা মেঘে বজ্রপাত যেমন হয়
ফাটা কপালে তেমনি, অমৃত লাভও হয়।
জীবনটা কোন অঙ্ক শাস্ত্র নয়।
জীবনের খাতায়- দুয়ে দুয়ে চার যেমন হয়,
তেমনি পাঁচও হয়, আবার বড় এক শূন্যও হয়।
কে জানে- পরের মুহূর্তে, আমার কি ঘটবে?
হয়তো মালবিকার কোলে শুয়ে, চাঁদ দেখছি আমি-
আর তখনই- চিরতরে ঘুমিয়ে গেলাম আমি।
হয়তো যন্ত্রণা কাতর, ভাগ্যকে অভিশাপ দিচ্ছি আমি
পরক্ষণেই মালবিকার মধুতে, পরম তৃপ্ত আমি।
জীবনে অনিশ্চয়তা-ই কেবল, একমাত্র নিশ্চয়তা!
কে বলতে পারে- সূর্য এই মুহূর্তে ফেটে চৌচির হবে না?
পৃথিবী ঘুরতে ঘুরতে, এই মুহূর্তে ঘুমিয়ে পড়বে না?
মানুষ, আন্দাজে শুধু ধরে নেয়-
যেহেতু সে দেখেছে, সূর্য কখনো মরে নি;
সেহেতু সে বিশ্বাস করে, সূর্য মরতে কখনো পারে না!
মরে গো, মরে। সকলেই মরে।
গ্রহ নক্ষত্র নদী আকাশ সবাই মরে।
যারা বড়, তারা ঘটা করে মরে।
আর যারা ক্ষুদ্র, তারা কেবল নিঃশব্দে মরে।
অনিশ্চয়তা- যেমন এক নিশ্চয়তা
মৃত্যুও তেমন এক নিশ্চয়তা
জন্মও তেমন এক নিশ্চয়তা।
যা ঝরে, তাই ভরে।
যা উঁচুতে উঠে, তাই ধপাস করে পড়ে।
যা জমা হয়, তাই- এদিক ওদিক, ছিটকে ছিটকে পড়ে।
জীবনের এই অনিশ্চয়তা-
আমাদের প্রাপ্তি অথবা শাস্তি?
সুখ অথবা দুঃখ?
আনন্দ অথবা বেদনা?
তুমি ভেবেছিলে- আজ রোদ হবে
আকাশে তুমি রঙিন রঙিন ঘুড়ি উড়াবে।
কিন্তু সকালেই মেঘ করে মুষল ধারে বৃষ্টি!
তুমি কি তবে, ঘরের কোণে বসে কাঁদবে?
জীবনে-
একটা দরজা বন্ধ হলে, আরেকটা দরজা খুলে।
বৃষ্টিতে ঘুড়ি উড়াতে না পারো, কিন্তু কাদায় ফুটবল খেলতে তো পারো!
রোদে দৌড়তে না পারো, কিন্তু খিঁচুড়ি দিয়ে চড়ুইভাতি করতে তো পারো!
জীবনের এই অনিশ্চয়তা-
তোমার- প্রাপ্তি অথবা শাস্তি?
সবই তোমার উপর-
যে রঙের হৃদয় নিয়ে, জীবনকে দেখো তুমি
জীবন ঠিক সেই রঙের, রঙিন রঙ্গভূমি।
© অরুণ মাজী
Painting: Richard s Johnson
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem