আঘাত যেখানকার সেখানে - একটি পোস্টমডার্ন কবিতা
উৎসর্গ: জয়িতা ভট্টাচার্য
১.
শিশিরপতনের নীলচে ঘণ্টাধ্বনি থামলে আসন্নপ্রসবা শালিক
অথৈ ঝড়ে কাহিল মোবিল-প্যাচপেচে গোধুলীবেলায়
নদীতে চেপে চলেছেন কফ-হলুদ হিলহিলে কুয়াশা মেখে
অন্ধকার রঙের ঝকঝকে ঘোড়াপুরুষ
যাঁর তুলতুলে পায়ে কনকনে সোহাগশীত
ছাপ নিয়ে ফিরেছের ঝলমলে জলসবুজ
তিরতিরে হাওয়ায় নাচিয়েছে পোখরাজ -খড়ের ফিনফিনে চড়ুই
যিনি ছিঁচকে প্রার্থনার চুনো লিকলিকে দেবতাকে
শিখিয়েছিলেন নড়বড়ে নশ্বরের অপমানবোধ
কেননা ভাঁটার নদীতে পা ধরে গেছে হেঁটে-হেঁটে
তখনকার দিনে জলের সঙ্গে মন খুলে কথা বলত নৌকো
২.
চামর-দোলানো জড়োসড়ি চৈত্রদিনে
উলকাচিকন আলোমাখা কানলতি
ছিঁড়ে খেয়েছে রুটির কানা যেন যৌতুকে পাওয়া ময়না
সাপের হাঁ-এ শিশুমোরগ
আর খাদিপোশাক নরককর্মী ধরেছে নাভিহীন পুরুষদের
সেটা হাওড়াপোলের লোহাচোরদের স্বদেশ
৩.
ঈশ্বরের বোটকাগন্ধে ম-ম মাদি ও পুং-মল্লিকার
ভ্রূণের বীজলিঙ্গে জ্যোতির্ময় শাবল
ধুঁকতে থাকা জ্যোৎস্নায়
যখন বসন্ধ সন্ধেকে দড়ি বেঁধে লাঙলহীন দেশে এনে ফেলেছিল
চাঁদের পাতলা ফিতেয় তৈরি আলপথে
গাধাডাকের দোমড়ানো আগুনে প্রতিধ্বনিত বর্তমান
ডানাসুখি চিলপাখিদের পালক আঁচড়িয়ে পেয়েছিল জোনাকখুকি
৪.
গ্রীষ্মল্যাংটো গাঁও-বালকরা নাচমাগির ঠাণ্ডা-কবর ডুগির তালে
যাদের হাত-পা ছড়িয়ে ঘুমোবার শেষ স্মৃতি
মোষের শিঙে ফুঁ দিয়ে ডেকেছে হাফ-লাল নেকড়েদের
কিন্তু জোয়ারে ঘর বেঁধেছিল নরুণপাড় গোঁফের তরুণরা
দিললি থেকে দূরে নিচুজাতের হললাবোল শহরে
আধমরা পায়রার অন্ধকার সিঁড়িতে ধুঁয়াধার খানাপিনায়
ধুলো হয়ে গেছে ঘাস যেন সমুদ্রনুনে লুকোনো কান্না
নারী পেলেই কোলে রেখেছে মাথা
যেভাবে নিজের আলকাৎরা লুকোয় পৃথিবী
৫.
শিশিরে পা-ফুটে রক্তাক্ত রাত্তির রাস্তা হারিয়ে চোরাগলিতে
গোবরকুড়ুনিয়ারা তুলে নিয়ে গেছে দেশটাকে
উত্তরাধিকারে পাওয়া ঝড়ে খুঁটে খেয়েছে নাভিফুলের কুঁড়ি
কালিদাসের খুঁতখুঁতে মেঘ বলেছিল, "আইস আমি তোমাদিগে শান্তি দিব
ওং মণিপদ্মে গুড়ুম ওং পণিপদ্মে ঢিশুম"
আঁতুড়সজনী এসো গো চিনিপুতুলের দেশে
ভ্রমরের মুখে হৃদয়-পচা দুর্গন্ধে
যেখানে আগামী প্রজন্মের দুঃখে নিজের ঘনত্ব মাপছিল অন্ধকার
সেখানে চোখের জলে ভেজা গনগনে স্ফূলিঙ্গে
সবুজ ঘোড়ারা নেমেছে সুতোকাটা আলোর মিছিল-বাজনায়।
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem