তোমরা আমাকে প্রশ্ন করো- দাদা তুমি কি ঈশ্বর বিশ্বাসী?
আমার উত্তর, হ্যাঁ।
তখন তোমরা প্রশ্ন করো- "তাহলে তোমার লেখায় নাস্তিকতার ছাপ কেন? "
কয়েকদিন আগে আমি কি লিখেছি? ঈশ্বর যদি থাকেন- তিনি তার চরিত্র পতন রুখতে, তার বিরোধীগোষ্ঠী সৃষ্টি করেছেন। নাস্তিকরা হলো ঈশ্বরের ইচ্ছাকৃত সেই বিরোধী গোষ্ঠী।
তোমরা কি জানো- ঈশ্বর নিজেই একই সঙ্গে, আস্তিক আর নাস্তিক? তার অর্থ? ঈশ্বর চেষ্টা করছেন- যাতে তিনি সব কিছু মঙ্গলের জন্য করেন। সেই মহান চেষ্টার জন্য তিনি নিজে নিজেকে পূজা করেন (আস্তিক গুন) । আবার সেই সঙ্গে সঙ্গে, তিনি গর্বে উদ্ধত না হয়ে, নিজেই নিজের কাজকে সন্দেহের চোখে দেখেন (নাস্তিক গুন) । তিনি তখন তার অস্তিত্ব আর কর্ম্মকে সন্দেহের চোখে দেখেন। তাই ঈশ্বর একই সঙ্গে, আস্তিক আর নাস্তিক।
আমি তা জানলাম কি করে? ঈশ্বর যদি মঙ্গলময় হন, তিনি বিনয়ী আর উদার হতে বাধ্য। এতটাই বিনয়ী যে- তিনি তার নিজের কর্মের সমালোচনা সহাস্যে করেন। এবং তিনি চান- তার তৈরী জীবও, তার কর্ম্মের সমালোচনা করুক।
গর্ব আর ঔদ্ধত্য মানুষের গুণ। ঈশ্বরের নয়। তাই তো কেউ বিনয়ী আর উদার হলে আমরা বলি- আহাঃ লোকটা ভগবানের মতো। কেন বলি? কারন- নম্রতা আর উদারতা ঈশ্বরের গুন।
অথচ ঈশ্বরের দালাল সব জান্তা কিছু ভোঁদড়, তারা "নাস্তিক নাস্তিক" বলে, পাড়া জাগিয়ে বেড়ায়। তারা একে অপরকে, এজন্য খুন করতে থাকে। যারা তা করে, তাদের কি ঈশ্বর সম্বন্ধে বিন্দুমাত্র কোন জ্ঞান আছে? তার ভোঁদড় অপেক্ষাও ভোঁদড়।
এবার আমার আসল কথা। কি সেই কথা? "ঈশ্বর যদি নাও থাকেন, মানুষের মঙ্গলের জন্য, ঈশ্বরকে আবিষ্কার করা খুব দরকার"। কেন? তার উত্তর তোমরা খুঁজে পাবে, আমার নীচের দুটো প্রবন্ধ পড়লে-
"ঈশ্বর মরে যায় নি"
"ঈশ্বর মানুষকে কি যন্ত্রণা মুক্তি দেয়? "
তোমরা এবার জিজ্ঞেস করবে- "ঈশ্বর বিশ্বাসের কারনে পৃথিবীতে এতো রক্তপাত। আর তুমি বলছো মানুষের মঙ্গলের জন্য ঈশ্বরকে আবিষ্কার করা এতো দরকার? তুমি কি গাঁজা টেনেছো না কি হে "?
বিজ্ঞানের কারনে হিরোশিমা নাগাসাকি। বিজ্ঞানের কারনে ইরাকে, ক্ষেপণাস্ত্রে লক্ষ মানুষের মৃত্যু! বলো- তখন কি তোমরা বিজ্ঞানের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন করো? করো না। তাহলে কিছু ধর্মোন্মাদ মানুষ যখন খুন করে বেড়ায়- তখন তোমরা ঈশ্বরকে দোষারোপ করো কেন? তোমার রান্না ঘরের বঁটি দিয়ে, তুমি সব্জি কাটতেও পারো, আবার তা দিয়ে তুমি তোমার প্রতিবেশীর মুন্ডচ্ছেদ করতেও পারো। দোষ কার- তোমার অথবা বঁটির?
© অরুণ মাজী
Painting: Amit Bhar
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem