Everyday - A Pastiche Based On Jibabananda's Poem - Bengali Poem by Malay Roy Choudhury

Everyday - A Pastiche Based On Jibabananda's Poem - Bengali

প্রতিদিন
(জীবনানন্দ দাশ-এর ‘আট বছর আগের একদিন' কবিতার প্যাশটিশ)
শোনা গেলো লাশকাটা ঘরে
নিয়ে গেছে তারে, আর তার বউ ও শিশুকে
কাল রাতে -ফাল্গুনের রাতের আঁধারে
যখন ভাঁড়ারে আর একদানা চাল নেই
বউ-শিশু খুন করে মরতে বাধ্য হলো ।
বধু শুয়েছিল পাশে -শিশুটিও ছিল;
প্রেম ছিল, ছিলনাকো কিছুই খাবার -জ্যোৎস্নায়-
তবু সে দেখিল
ক্ষুধার প্রেতিনী? ঘুম তো আসে না রাতভর
কেননাক্ষুধার্ত পেটে হয়নি ঘুম বহুকাল -লাশকাটা
ঘরে শুয়ে তিনজন ঘুমায় এবার ।

এই ঘুম চেয়েছিল বুঝি!
বিষগ্যাঁজলা-মাখা ঠোঁটে মড়কের ইঁদুরের মতো
আঁধার ঘুঁজির বুকে তিনজন ঘুমায় এবার ঘাড় গুঁজি
কোনোদিন এই পরিবার জাগিবে না আর ।

কোনোদিন জাগিবে না আর
খালি পেটে গাঢ় বেদনার
অবিরাম অবিরাম ক্ষুধা
সহিবে না আর -
এই কথা বলেছিল তারে
চাঁদ ডুবে চলে গেলে -বুভুক্ষু আঁধারে
যেন তার মেটেল দুয়ারে
মোটরসাইকেলবাহী ধর্ষকেরা এসে ।

তবুও তো নেতা জাগে
লুমপেনেরা এসে ভোট মাগে
আরেকটি নির্বাচনের ইশারায় -অনুমেয় উষ্ণ হুমকি দিয়ে

টের পাই যুথচারী আঁধারের গাড় নিরুদ্দেশে
চারিদিকে র‌্যাশনের ক্ষমাহীন বিরুদ্ধতা;
নেতা তার আরামের সঙ্ঘারামে নেশা করে বুকনি ঝাড়তে ভালোবাসে ।

শ্রম ঘাম রক্ত চুষে আবার ফিরে যায় নেতা
অবরোধ করা মোড়ে অ্যাম্বুলেন্সে কান্না দেখিয়াছি ।

কাঠফাটা খরা নয় -যেন কোনো চালের ভাঁড়ার
অধিকার করে আছে ইহাদের ভার
দলীয় গুণ্ডাদের হাতে
বউটি প্রাণপণ লড়িয়াছে
চাঁদ ডুবে গেলে পর নিরন্ন আঁধারে তুমি বউ ও শিশুকে নিয়ে
ফলিডল খেয়েছিলে, শিশুটির গলা টিপে মেরে-
যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের
তা তোমার শৈশব থেকে ছিল জানা ।

পেটের ক্ষুধার ডাক
করেনি কি প্রতিবাদ? ডেঙ্গুর মশা এসে রুক্ষ চামড়ায় বসে
রক্ত না পেয়ে দেয়নি কি গালাগাল?
যুবতী লক্ষ্মীপ্যাঁচা চালাঘরে বসে
বলেনি কি: সংসার গেছে বুঝি দারিদ্র্যে ভেসে?
চমৎকার!
হাড় হাভাতের ঘরে ইঁদুরও আসে না?
জানায়নি পেঁচাবউ এতুমুল ক্ষুব্ধ সমাচার?

জীবনের এই স্বাদ-সুপক্ক ধানের ঘ্রাণ
কতোকাল পাওনিকো তুমি
মর্গে আজ হৃদয় জুড়ালো
মর্গে - - শীতাতপে তিনজন
ফলিডলে গ্যাঁজলাওঠা ঠোঁটে!

শোনো
এ তিন মৃতের গল্প-
ধান কেটে নিয়ে গেছে গাজোয়ারি করে
বি পি এল কার্ডের সাধ
মেটেনি বউকে পাঠিয়েও
দরবারি নাশকতা নিচে টেনে বধু
মধু -আর মননের মধু
যাপনকে করতে পারেনি ক্ষুধাহীন
হাড়হাভাতের গ্লানি বেদনার শীতে
সইতে হয়েছে প্রতিদিন
তাই লাশকাটা ঘরে
চিৎ হয়ে শুয়ে আছে তিনজন টেবিলের পরে ।

তবু রোজ রাতে আমি চেয়ে দেখি, আহা,
যুবতী লক্ষ্মীপ্যাঁচা চালাঘরে বসে
চোখ পালটায়ে কয়, ‘সংসার গেছে বুঝি দারিদ্র্যে ভেসে? '
চমৎকার!
হাঘরের মেটে ঘরে ইঁদুরও আসে না

হে বিদূষী পেঁচাবউ, আজও চমৎকার?
স্বাধীনতার সত্তর বছর পর!
সকলে তোমার মতো সুযোগসন্ধানী আজ- -
বুড়ি চাঁদটাকে তোরা আদিগঙ্গার পাঁকে করে দিলি পার;
যারা আসে তারাই শূন্য করে চলে যায় টাকার ভাঁড়ার ।

Sunday, February 2, 2020
Topic(s) of this poem: dead
COMMENTS OF THE POEM
READ THIS POEM IN OTHER LANGUAGES
Close
Error Success