কি ভাবে একটা জাতিকে বীর গড়তে হয়(How To Make A Nation Strong) Poem by Arun Maji

কি ভাবে একটা জাতিকে বীর গড়তে হয়(How To Make A Nation Strong)

Rating: 5.0

পিতা বীর হলে- তার সন্তান বীর হতে পারে, আবার নাও হতে পারে।
কিন্তু মাতা বীর হলে, তার সন্তান বীর হবেই।কেন?

যে কুঁড়ি শুরুতেই শক্ত, তার সুন্দর এক ফুল হওয়া প্রায় নিশ্চিৎ।
মানুষের জীবনে- তার শিশুকাল, তার মায়ের সান্নিধ্যে বেশি কাটে। তাই মায়ের যা গুন- সেই গুন, তার সন্তানের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা তখন। কাজেই মা যদি বীর আর সাহসী হয়, তাহলে- তার সন্তানও, বীর আর সাহসী হতে বাধ্য।

কাজেই কোন জাতিকে যদি বীর আর সাহসী গড়তে হয়, তাহলে- সেই জাতির নারীকে আগে, বীর আর সাহসী হতে হবে।

আনন্দের কথা এই যে- প্রাচীন ভারতবর্ষ এই সত্যটা খুব ভালোভাবে জানতো। তাই দেবতারা যখন অসুর দ্বারা আক্রান্ত, দেবতারা অসুরবিনাশিনী দেবী দুর্গার হাতে সমস্ত অস্ত্র তুলে দিয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের ব্যাপার এই যে- এই ব্যাপারটা ভারতীয়রা বুঝেও বোঝে না। তারা কখনো প্রশ্ন করে না- আমাদের পূর্ব পুরুষরা কেন একজন নারীকে সর্ব্বশক্তিময়ী দেবী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করলো, কিন্তু একজন পুরুষকে করলো না?

তার কারন- ঋষিরা বুঝতে পেরেছিলেন, কেবল একটা জাতির মুক্তি নয়, সমগ্র মানব জাতির মুক্তির জন্য নারী শক্তির উন্মেষ অপরিহার্য্য। এর কোন ব্যতিক্রম হয় না। তোমরা দেখেছো- দুর্বল রুগ্ণ মায়ের, কেমন দুর্বল রুগ্ণ সন্তান হয়!

আমি নারী জাতিকে যেমন গভীর ভাবে শ্রদ্ধা করি, তেমনি কোন নারী যদি কোন হীন কাজ করে, আমি চরম অসুস্থ বোধ করি। নারী জাতির দ্বারা কোন হীন কাজ আমার মেনে নিতে খুবই কষ্ট হয়। হীন লোকের দ্বারা হীন কাজে হলে তত গায়ে লাগে না, কিন্তু আমার পূজ্য লোকের দ্বারা হীন কাজ হলে, আমি অসুস্থ বোধ করি।

আমার কষ্ট হয় যখন দেখি-
ভারতীয় নারীরা সারাদিন টিভির সামনে বসে সিরিয়াল দেখছে!
স্থূলকায় চেহারা নিয়ে পথ হেঁটে যাচ্ছে!
সারাদিন গুজব ছড়িয়ে জীবন কাটাচ্ছে!
হিংসে, লোভ ইত্যাদিতে আচ্ছাদিত হয়ে হীন কাজ করছে!

হে নারী,
তোমরা আমার সর্ব্বোচ্চ দেবতা। আমি চাই-
তোমরা বীর আর সাহসী হও আগে।
কোন অন্যায়ের সাথে আপোষ তোমরা করো না।
দেহে তোমরা শক্ত হও। শরীরচর্চা করো। ক্যারাটে, জিমন্যাসিয়াম ইত্যাদিতে ভর্তি হও। বাড়িতে এক্সারসাইজ বাইক রাখো। সকালে বা সন্ধ্যায় ছুটতে যাও। তোমাদের পায়ে পড়ি, স্থূলকায় চেহারা নিয়ে পথ হেঁটে যেও না। জাতি যে আমাদের দুর্বল- তোমাদের এই আবির্ভাবেই আমি বুঝতে পারি। আমি লজ্জা পাই।

তোমাদের শিশুদেরকেও তোমরা- ক্যারাটে, জিমন্যাসিয়াম, খেলাধূলা ইত্যাদিতে ভর্তি করো। তোমাদের সন্তানেরা গাদাগাদা ডিগ্রি নিয়ে কি করবে- কলিজায় যদি তারা হীন আর দুর্বল? দেহে শক্ত হওয়া, গাদাগাদা ডিগ্রীর চেয়ে বেশি প্রয়োজনীয়।

প্রমাণ চাও? ভারতে যত বেশি, গ্রাডুয়েট আর পোস্টগ্রাডুয়েট ডিগ্রীধারী আছে, আমেরিকাতে তার এক দশমাংশও নেই। তবু আমেরিকা ভারতের চেয়ে, সবদিকে শক্তিশালী! কেন?

যারা দেহে বীর, তাদের- মনের দিক থেকেও বীর হওয়া বেশি সম্ভব। দেহে শক্তি গড়তে, বুকে সাহস আর ত্যাগ লাগে। মনের সাহস ছাড়া দেহে বীর হওয়া যায় না। দেহে বীর হওয়া যদি এতোই সোজা, তাহলে স্থূলকায় চেহারা নিয়ে, সঙ সেজে তোমরা পথ হাঁটো কেন? যে নারী দেহে শক্তিমান, সেই নারীই সবচেয়ে সুন্দরী। মুখে একগাদা স্নো আর পাউডার ঘষলেই- কেউ সুন্দরী হয়ে যায় না। বীর হও হে নারী, বীর হও।

পুরুষভাইদের কাছে আমার অনুরোধ- তোমরাও নিছক বাতেলাবাজ, "মুখে মারিতং জগৎ" না হয়ে, তোমরা সত্যিকারের পুরুষ সিংহ হও। তোমরাও নিজেদেরকে- ক্যারাটে, জিমন্যাসিয়াম, খেলাধূলা ইত্যাদিতে ভর্তি করো। আমি চাই- আগামী পাঁচ বছরে, রাস্তার প্রতিটা কোণে একটা করে শরীর আর ব্যায়াম চর্চার কেন্দ্র গড়ে উঠুক। প্রতিটা পাড়ায়, একটা করে খেলার মাঠ গড়ে উঠুক।

তোমরা তোমাদের বাড়ির মেয়েদেরকে, শক্ত আর সমর্থ হতে সাহায্য করো। তাদেরকে ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি করো। তাদের শিক্ষার জন্য টিউটর রাখো। কোন বয়সই শেখার জন্য বুড়ো নয়। তোমার সত্তর বছরের মা- তাকেও স্কুলে ভর্তি করে দাও। এই সামান্য হিম্মৎটুকু যদি তোমার না থাকে, তুমি শালা কিসের পুরুষ? বীর হও হে ভাই, বীর হও। নইলে- তোমার লম্বা গোঁফওয়ালা বিড়াল মার্কা মুখ আমাকে দেখিও না। গোঁফ থাকলেই কেউ পুরুষ হয় না, কলিজায় দম থাকতে হয়। বীর হও, পুরুষ হও।

তোমরা এজন্য সরকারের কাছে আবেদন করো। তারা তা না পারলে, নেতাদের আন্ডারপ্যান্টে কাঁকড়া বিছে ঢুকিয়ে দাও। এর মধ্যে তোমরা আবার রাজীনীতি টেনে এনো না।তোমরা শালা এতোই অপদার্থ- অরুণ মাজী যা বলে, তার মধ্যেই তোমরা রাজনীতির গন্ধ শুঁকো। ইচ্ছে হয়- নেতাদের আগে, তোমাদের আন্ডারপ্যান্টে কাঁকড়া বিছে ঢুকিয়ে দিই।

রাতারাতি সব কিছু হবে না, কিন্তু ধীরে ধীরে এই লক্ষ্যের দিকে এগোও। এই চেতনা সবার মধ্যে গড়ে তুলো। এই চেতনা সবার সঙ্গে শেয়ার করো- রাস্তায় আড্ডা দিতে দিতে, বটুর চায়ের দোকানে, আলস্যে হুঁকো টানতে টানতে। আজ থেকেই এই কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ো।

আমার বিশ্বাস তোমরা স্বামীজী আর নেতাজীর সন্তান। তোমরা তা পারবে। জয় বীর বাংলা। জয় বীর ভারতবর্ষ।

© অরুণ মাজী

কি ভাবে একটা জাতিকে বীর গড়তে হয়(How To Make A Nation Strong)
Monday, October 30, 2017
Topic(s) of this poem: bangla,courage,nation
COMMENTS OF THE POEM
READ THIS POEM IN OTHER LANGUAGES
Close
Error Success