নিঃস্বার্থ কর্মের জন্ম করুণার গর্ভে।
করুণার জন্ম ভালোবাসার গর্ভে।
ভালোবাসার জন্ম প্রশান্তির গর্ভে।
কাজেই, তুমি যদি অন্যের জন্য নিঃস্বার্থ কর্ম করতে চাও, তাহলে তোমাকে আগে প্রশান্ত হতে হবে। প্রশান্তি না থাকলে তুমি অন্যের জন্য, নিঃস্বার্থ কিছু করতে পারবে না।
পার্থিব সুখ আর প্রশান্তি এক জিনিস নয়। যারা মহান, তাদের জীবনে অনেক দুঃখ আছে, কিন্তু তবুও তারা প্রশান্ত। সেই প্রশান্তির কারনেই, তারা স্থিতধী, অবিচল, করুণাময়।
দুর্ভাগ্যবশতঃ রাজনীতি কোন প্রশান্তির জায়গা নয়। বর্তমান রাজনীতি তো নয়-ই। রাজনীতি হলো শিকারভূমি। যে যখন সুযোগ পায়, সেই তখন গুলি চালিয়ে দেয়। কাজেই রাজনীতিকরা প্রশান্ত হবে কি করে? তারা যদি প্রশান্ত না হয়, তাহলে তারা মানুষকে ভালোবাসবে কি করে? ভালোবাসা না থাকলে, তাদের করুণা হবে কি করে? করুণা না থাকলে, তারা মানুষের মঙ্গল সাধন করবে কি করে?
রাজনীতিকদের কাছ থেকে, নিঃস্বার্থ পরহিত কর্ম্ম আশা করা, হিংস্র পশুর কাছ থেকে বৈরাগ্য আশা করার মতো। রাজনীতিকরা, মানুষকে ভালোবাসার রঙিন রঙিন নাটক করতে পারবে। কিন্তু মানুষকে ভালোবাসতে কোনদিন পারবে না। সেই নিয়মের ব্যতিক্রম কেউ নয়। না মোদীজী, না মমতাদি।
রাজনীতিকদের জন্য আমার ঘৃণা হয় না। আমার করুণা হয়। কি সাংঘাতিক বিষময় এদের জীবন। সব সময় এদেরকে শিকারের তোড়জোড় করতে হয়। বন্দুকে গুলি ভরতে হয়। শকুন পুষতে হয়। কবর খুঁড়তে হয়। মিথ্যে ইতিহাস লিখতে হয়।
ভালো মানুষ পৃথিবীতে অনেক আছে। তাদের ভালো ভালো ইচ্ছেও আছে। তারা যদি রাজীনীতির জন্য রাজনীতিতে আসে, তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু তারা যদি মানুষের মঙ্গল সাধনের জন্য রাজনীতিতে আসে, তাহলে তারা ভুল করবে। আজকের রাজনীতির বাতাবরণ এমন, শান্তির কবুতরও, এখানে হিংস্র শকুন হয়ে যাবে।
দুঃখজনক। খুবই দুঃখজনক। রাজনীতির জন্ম মানুষের মঙ্গল সাধনের জন্য। কিন্তু রাজনীতি আজ মানুষের দুঃখ যন্ত্রণা আর মৃত্যুর কারন।
তোমরা যারা সত্যি সত্যি মানুষের মঙ্গল করতে চাও, তাদেরকে বলছি- তোমরা রাজনীতি সম্পর্কে জ্ঞান রাখো, কিন্তু রাজনীতির মাকড়সার জালে ফেঁসে যেও না। রাজনীতিতে ডুবে গেলে নিজেকে হারিয়ে ফেলবে তোমরা। তোমাদের মধ্যেকার প্রশান্তি, ভালোবাসা, করুণা সবই খুইয়ে ফেলবে। তখন তোমরা মানুষ থেকে হিংস্র এক শকুন হয়ে যাবে।
এ কারনেই গান্ধীজী, নেহেরু রাজনীতিক। কিন্তু সুভাষ বসু নয়।
© অরুণ মাজী
Painting: William Adolphe Bouguereau
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem