পেটের প্রাচীন যন্ত্রনা Poem by Soumen Chattopadhyay

পেটের প্রাচীন যন্ত্রনা

হে মানুষ
আর কতকাল পরে সমবেত হবে
আর কতকাল পরে উপেক্ষার আগুন
শরীরে শরীরে বিস্তৃত হবে
আর কতকাল পরে আমার
সকল প্রিয় কণ্ঠস্বর হতে
অন্যায় ও বিদ্রোহের বিরুদ্ধে বুলেট ছুটবে
ঘৃণার সম্মুখ সমরে

মধ্যরাতের নিষ্ঠুর সমুদ্র বাতাসে
নির্জন দ্বীপের্ বিচ্ছেদ যন্ত্রনা কি দেখেছো

গ্রামে গ্রামে শিশুর পেটের গহ্বরে
ভাতের আর্তনাদে— কেন হৃদয়ের সেই
বুনো সন্ধ্যার আকাশ কাঁপে না এখন

ঘুমন্তের চেতনার স্ফুরণ
এমন দুঃসময়ে কেন
ঘটেনা আবার
অতীতের অন্ধকারের মানব স্নায়ুর
রক্তের স্রোতে ভালোবাসার স্মৃতির চিহ্ন গুলি
বিকলাঙ্গ হ'য়ে শুয়ে আছে

ব্যথিতের বিস্ময় জাগে না আর
মানুষের মাথার শরীরে

এখানে এখন ক্ষুধার্ত
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন
আদি গুহা মানবের মতন কঠিন

তারা মশাল জ্বেলেছে নিজের দেহের মাংসে;
বিনিময় করেছে উত্তাপ
নিজেকে বেচেছে রোজ...
উপেক্ষার কষ্ট তারা জেনেছে আতীব্র

দেখেছি শিশুর ছোট্ট নীল চোখে
ভাসে দেবতাদের খিধের গোধূলি আকাশ

নষ্ট সময়ে রাষ্ট্রের নির্মম ক্ষমতা
বিপ্লবের কণ্ঠ রোধ করে
মুখ ক্ষত বিক্ষত রক্তাক্ত ক'রে
কেড়ে নেয় প্রতিবাদের সকল অস্ত্র

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা সকলে
ভাষার তীব্রতা ক্ষিপ্রতার মুখে
বুলেট ও বিস্ফোরক ছুঁড়ে দিয়ে
ছেয়ে দেয় শান্ত ভোরের বাতাস

যারা দু'বেলা দু'মুঠো
স্নেহের অন্নের অধিকার
ছিনিয়ে নিয়েছে, সেইসব
অমানুষদের মুখে আমি
ঘৃণার প্রস্রাব ছুড়ে দিয়েছি,
বর্বরদের মুখে থুতু ছুড়েছি
পীড়িত মানুষদের প্রতিনিধি হয়ে

যখন নির্জন দ্বীপের বিচ্ছেদ বেদনা
আমার কবিতার বুক বিদ্ধ করে—
মধ্যদুপুরে পেটের প্রাচীন যন্ত্রণা
হাহাকারের নিষ্ঠুর সমুদ্র বাতাসে
রাজবন্দী নর্তকীর নূপুরের মতো আর্তনাদ করে
আমাদের বুকে তখনো বাজেনা কেন!

আর কতকাল পরে
জেগে উঠবো আমরা
আমাদের মতো করে
আর বারবার
হৃদয়ের সেই বুনো সন্ধ্যার আকাশ
কাঁপাবো এমন দুঃসময়ে মানুষকে ভালোবেসে

পেটের প্রাচীন যন্ত্রনা
Monday, March 9, 2020
Topic(s) of this poem: revolution
COMMENTS OF THE POEM
READ THIS POEM IN OTHER LANGUAGES
Soumen Chattopadhyay

Soumen Chattopadhyay

Raghunathpur, purulia west Bengal
Close
Error Success