জলে ভেসে ভেসে, ছটফট করতে করতে
পিঁপড়েটা অবশেষে স্থির হয়ে গেলো।
ছোট্ট শিশুর, ছোট্ট ছোট্ট চোখ দুখানি
ফোঁটা ফোঁটা জলে ভরে গেলো!
শালুকের উপর জলের ফোঁটা
যেমন- পবিত্র অথচ ব্যাথাতুর
নির্ব্বাক অথচ প্রতিবাদ মুখর;
ছোট্ট শিশুর চোখে বিন্দু বিন্দু অশ্রু
তেমনি নির্ব্বাক অথচ প্রশ্নমুখর।
জলে ভেসে ভেসে, ছটফট করতে করতে
পিঁপড়েটা অবশেষে স্থির হয়ে গেলো।
কেন? সব কিছু কি এমনই-
ছটফট করতে করতে, অবশেষে স্থির হয়ে যায়?
বিজুর বাপের বুকে ব্যথা হয়েছিলো।
সেও কেমন ছটফট করতে করতে,
ক্লান্ত হয়ে অবশেষে স্থির হয়ে গেলো!
পেন্তীর মায়ের হাঁফানি হয়েছিলো।
সেও কেমন ছটফট করতে করতে,
নীল হয়ে অবশেষে স্থির হয়ে গেলো!
গতবছর ভূকম্পের সকালেও
পৃথিবীটা কেমন ছটফট করতে করতে
শান্ত হয়ে অবশেষে স্থির হয়ে গেলো!
সব কিছু কি এমনই-
ছটফট করতে করতে, অবশেষে স্থির হয়ে যায়?
রান্না ঘর থেকে মায়ের চীৎকার
কি করছিস অমল? তোর শুধু খেলা আর খেলা!
একটু পড়াশুনা করবি নে তুই?
টেবিলে বই খোলা, অথচ শিশুর মাথার মধ্যে কেবল-
সব কিছু কি এমনই-
ছটফট করতে করতে, অবশেষে স্থির হয়ে যায়?
চোখে ফোঁটা ফোঁটা জল,
রান্না ঘরে মাকে জড়িয়ে ধরে সে।
আচ্ছা মা, পৃথিবীর সব কিছুই কি
ছটফট করতে করতে, অবশেষে স্থির হয়ে যায়?
মা দেখে, ছোট্ট শিশুর চোখে জল-
'কি শেষ হয়ে যায় বাবা? '
ঐ যে
জলে ভেসে ভেসে, ছটফট করতে করতে
পিঁপড়েটা অবশেষে স্থির হয়ে গেলো।
আচ্ছা মা, পৃথিবীর সব কিছুই কি
ছটফট করতে করতে, অবশেষে স্থির হয়ে যায়?
পেন্তীর মায়ের হাঁফানি হয়েছিলো।
সেও কেমন ছটফট করতে করতে,
নীল হয়ে অবশেষে স্থির হয়ে গেলো!
আচ্ছা মা, তুমিও কি ছটফট করতে করতে,
নীল হয়ে অবশেষে স্থির হয়ে যাবে?
তোমাকে ডাকলে, আর সাড়া দেবে না?
তুমি আর আমাকে, বুকে জড়িয়ে ধরবে না?
পেন্তীর মা স্থির হয়ে যেতে,
সকলের কি উচ্চৈঃস্বরে কান্না!
বাড়ি শুদ্ধ, সকল লোকের কান্না!
জানো মা, ওদেরকে কাঁদতে দেখে
আমিও অনেক কেঁদেছিলাম!
অবশ্য তুমি ছটফট করতে করতে,
নীল হয়ে, অবশেষে স্থির হয়ে গেলে-
আমি কাঁদবোই না। একটুও কাঁদবো না।
আমি কেবল তোমাকে বুকে আগলে রাখবো।
দিন রাত তোমাকে বুকে আগলে রাখবো।
আমি যেতে না দিলে
তুমি কি কোথাও যেতে পারবে, মা?
© অরুণ মাজী
Painting: William-Adolphe Bouguereau
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem