মনে পড়ে অনেক না ভোলা কথা মোর আজ
যখন ভাবি দুচোখ বুজে, থাকে নাকো কাজ।
কয়েক বছর আগে হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি
ফিরে আসে আমার মনের পটে নিয়ে রংতুলি।
মনে পরে সেই ছোট্ট বাঁধানো তুলসী তলা,
আমার শৈশবের সাথী আমার ভাইয়ের গলা।
খেলতাম দুজনে আড়ি ভাবকে সঙ্গে নিয়ে,
খুনসুটি তো লেগেই থাকতো ভালোবাসা দিয়ে।
মনে পরে সকালের শালিকের মিষ্টি ডাক,
আরও জোরে ডাকত কালো কুচকুচে কাক।
আমরা খেলতাম সারাটা সকাল ক্লান্তিহীন দেহে,
পড়ার বালাই কমই ছিল উঠতাম গাছে বেয়ে।
সাড়ে নটার ঘন্টা শোনাতো মায়ের কণ্ঠের স্বর,
ভাঙতে হতো মোদের ছোট্ট স্বপ্নের বিচিত্র খেলাঘর।
পুকুরে স্নান সেরে মায়ের হাতে খেয়ে যেতাম স্কুলে রেগে,
দশটা-তিনটের আন্দামান থেকে ফিরতাম বেগে।
বিকালবেলায় আমরা মুক্ত ওই খেলার সবুজ মাঠে,
কিংবা নেশায় ধরতাম মাছ গোঁসাইদের পকুর ঘাটে।
কখনো বা আমার সম্বল ব্রেকহীন দুচাকা বার করে,
যেতাম বেগে পাশের গ্রামের মোড়ম রাস্তা ধরে।
সন্ধ্যা হলেই বাড়ি ফেরা, জ্বলে উঠত প্রদীপের আলো,
ঝোলা নিয়ে পড়তে ছুটতাম, আসতো মাস্টার কালো।
খুনসুটি, নৌকা তৈরি হতো বেশ, পড়াশোনা হতো কম,
নটা-দশ বাজলেই সবাই পায়ে লাগতো বেজায় দম।
বাড়ি ফিরে মায়ের কোল আমার ছিল নিত্য বাঁধা,
রাগ হতো বেজায় মোর নিলে ভাগ তার দাদা।
হয়তো আমি ঘুমিয়ে যেতাম, কিংবা যেতাম না,
রাতের খাবার কখন খেতাম হদিস পেতাম না।
এগারোটা থেকে ভোর চারটে আমার ছিল বাঁধা,
সারা দিনের ক্লান্ত শরীর যেন ঘুমানো এক গাধা।
ভোর চারটের মুরগিগুলো ডাকত যখন ধরে নাম,
বিছানা ছেড়ে মাঠে যেতাম হতে ব্যায়ামবীর শ্যাম।
কিন্তু হায়! এখন আমি বসে পৌঁনে একটার কোলে,
মা-শৈশব গেছে চলে, বার্ধক্য আমার মনে দোলে।
নেই তুলসিতলা, আন্দামান, কালো মাস্টারের বকুনি,
সয়ে চলি প্রতি পদে বৃদ্ধাশ্রমের ভারাক্রান্ত ঝাঁকুনি।
তাইতো আজও আমি লিখি আমার মনের গাঁথা,
কেউ যদি বোঝে আমার হারানো মনের করুন ব্যাথা।
ফিরে পেতে চাই আমি ফেলে আসা সেই কটা দিন
হয়তো আমি পাব ফিরে যখন হব আমি শূন্যে বিলীন।
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem