ঈশ্বর আমাকে অনেক দিয়েছেন। তার সবচেয়ে বড় দান হলো- উনি আমাকে 'ক্যাবলা, মাথা মোটা' করেছেন। মাথা মোটা হওয়ার অনেক সুবিধে- তখন, পৃথিবীকে ঠিক পৃথিবীর মতো দেখতে লাগে; মিথ্যেকে ঠিক মিথ্যের মতো দেখতে লাগে।
কোন একটা দেশ- কতটা ভালো বা সুখী, তা জানতে- তোমাকে শ্রদ্ধেয় অমর্ত্য সেন, বা জোসেফ স্টিগলিৎস-এর মতো নোবেল বিজয়ী হতে হবে না। তোমাকে শুধু একদিন, সেই দেশের গ্রামে গিয়ে সেখানকার স্ত্রীলোকদের জীবনযাত্রা পর্য্যবেক্ষণ করতে হবে। তাতেই তুমি বুঝতে পারবে, সেই দেশ কতটা সুখী! অঙ্ক শাস্ত্র, রাশি বিজ্ঞান, অর্থনীতির কচকচানি যে সত্য বলতে পারবে না, গ্রামের একজন নারীর- ঘোমটার দৈর্ঘ্য আর তার চোখের কোণে- কালির ঘনত্ব, তোমাকে সেই সত্য এক ফুৎকারে বলে দেবে।
কি বলতে চাই আমি? আমি বলতে চাই- 'দেশকে শিক্ষিত করতে চাও, তাহলে নারীকে শিক্ষা দাও আগে। দেশকে ক্ষমতা শালী করতে চাও? তাহলে নারীকে ক্ষমতা দাও আগে।'
তোমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে? বলো তো- তোমার পড়াশুনার জন্য কে সব সময় তোমার পিছু পিছু ধাওয়া করেছে? তোমার মা। ভাবো তো- তোমার মা যদি, আর একটু বেশি শিক্ষিত হতো, তাহলে তুমি পড়াশুনাতে হয়তো, আরও একটু বেশি তেজী হতে কিনা? অবশ্যই হতে। কেন? কারন- শৈশব আর কৈশোর কালে, তুমি তোমার মা দ্বারা, সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হও। যে মা যত বেশি তেজী, সেই মায়ের সন্তান তত বেশি তেজী।
নারী সত্যিই দশভূজা, দুর্গতিনাশিনী। তবুও দুর্ভাগ্যের ব্যাপার- আজকের নারীরা কেমন যেন বদলে যাচ্ছে। তারা অনেকে শিক্ষিত বটে, কিন্তু তারা তেজী নয়। কেন? কারন- তাদের অনেকেই, অনেক পুরুষদের মতো, চরিত্রগত ভাবে কলঙ্কিত হয়ে যাচ্ছে। নিষ্কলুষ চরিত্র বিনা কেউ তেজী হয় না। তেজী হতে হলে সিংহের মেরুদন্ড দরকার। যে মানুষ চুরি করে, লোক ঠকায়, মিথ্যে বলে- তাদের মেরুদন্ড কেঁচোর মতো লিকলিকে। স্বার্থ দেখেলেই তা নুয়ে যায়। কেঁচোর মেরুদন্ড হলে, লোকে তেজী হবে কিভাবে? এই সব কলঙ্কিত পিতা-মাতার সন্তান যে চরিত্রহীন কলঙ্ক হবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
দেশকে জাগাতে হলে- কেবল পুরুষকে জাগলে চলবে না, নারীকেও জাগতে হবে। জাতিকে জাগাতে হলে- শুধু পুরুষের লড়াইয়ে চলবে না, নারীকেও সেই লড়াইয়ে- রুদ্রমূর্তি চন্ডীরূপিণী মা কালী হতে হবে।
আমি চাই- নারী জাতি এখনই, এই মুহূর্তে জেগে উঠুক। আর দেশে যত সমস্ত, অসুর আর দানব আছে, তাদের মুণ্ডপাত করুক। মা-গো, হারামজাদাগুলোকে তোমার তেলের কড়াইয়ে ফুলুড়ি ভাজা করো।
© অরুণ মাজী
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem