স্বামীজী, স্বপ্ন আর পার্থিব সুখ Poem by Arun Maji

স্বামীজী, স্বপ্ন আর পার্থিব সুখ

Rating: 5.0

আমার হৃৎপিণ্ডে ATRIUM আর VENTRICLE বলে কিছু নেই, আছে দুই মহামানব- একজন স্বামীজী আর অন্যজন নেতাজী। এনারাই আমার হৃৎপিণ্ডকে দিনের পর দিন, আর বছরের পর বছর স্পন্দিত করে।

আমি চাই পৃথিবীর সমস্ত মানুষ, স্বামীজী আর নেতাজীর মতো পৌরুষযুক্ত মানুষ হোক। পৃথিবীর মানুষ, এনাদের দেখানো পথে এগিয়ে চলুক। এনারা দুজনেই সিংহ পুরুষ- ত্যাগ আর সাহসের দীপ্তিতে চির উজ্জ্বল।

হে মানুষ,
মরবে, সবাই তো মরবে একদিন।
গ্রহ-উপগ্রহ মিলিয়ে যাবে, মায়াবী কোন আঁধারে
নক্ষত্র ফেটে চৌচির হবে, সময়ের বিষ আঁচড়ে।
মরবে, সবাই তো মরবে একদিন
তবে মিছিমিছি, স্বপ্নহীন হয়ে কেন মরা?
তবে ক্রন্দনহীন, আর্তনাদহীন, কেন সুখী ভদ্রলোক হয়ে মরা?

এই কবিতাগুলো আমি যখন লিখেছি- তখন বুকে আমার, নেতাজী আর স্বামীজী ধুকপুক করে স্পন্দিত হয়েছে। তোমাদের মতো আমিও অতি সাধারণ মানুষ। কিন্তু যখনই আমি এনাদেরকে স্মরণ করি, তখনই আমি আমার নিজেকে ছাপিয়ে যাই। আমি তখন, আমার নিজেরই অচেনা, সাহসী এক মানুষ হয়ে উঠি। এনাদের ত্যাগ আর বীরত্ব আমাকে প্রতি মুহূর্তে অনুপ্রাণিত করে।

আজ খুব ভালো লাগলো এই দেখে যে- ভারতবর্ষের মতো মহান এক দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বামী আত্মস্থানন্দের মৃত্যুর খবর পেয়ে, দুঃখে শিশুর মতো আকুল হয়ে কাঁদলেন!

রাজনীতির ছাপ মানুষকে ঘৃণ্য করে তুলে। কাজেই নরেন্দ্র মোদীর প্রতি, অনেক মানুষের ঘৃণা থাকবে, তা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু সামান্য একজন চা বিক্রেতা, এতো সহজে ভারতবর্ষের মতো মহান এক দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে যায় না! নিশ্চয়ই নরেন্দ্র মোদীর সেই উত্তরণের পথে, স্বামীজীর কোন আশীর্বাদ আছে। অনুপ্রেরণা আছে।

তোমাদের সাথে এই ঘটনা আমি শেয়ার করছি, তার কারন- যাতে তোমরাও স্বামীজীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে, সামান্য এক মানুষ থেকে অসামান্য এক মানুষ হয়ে উঠো।

সকলেই বাঁচে। কেউ অন্যের পা চেঁটে, কেঁচো আর কৃমির মতো বাঁচে। কেউ বীর সিংহের মতো গর্জন করে বাঁচে। মরেও সবাই। কেউ কৃমির মতো গলে পচে মাটিতে মিশে যায়। কেউ ধূপের মতো মরতে মরতে তাদের সুগন্ধ দিয়ে যায়।

যে যেমন, তার তেমন পছন্দ। রাস্তার কুকুর- গলিত অথবা উচ্ছিষ্ট কোন কিছু দেখলেই লোভে চাঁটতে শুরু করে। আর ভবঘুরে এক সন্ন্যাসী ত্যাগ নিয়ে ঈশ্বরের দর্শন হেতু বাঁচে। আমি কোনটা হবো- সেই ক্ষমতা কেবল আমার মধ্যেই আছে। তুমি কোনটা হবে, সে ক্ষমতা কেবল তোমার মধ্যেই আছে।

বেশিরভাগ মানুষ- সকালে ঘুম থেকে উঠে বাজারের থলি হাতে বাজারে যায়। তারপর গোগ্রাসে একপেট খাওয়ার গিলে অফিসে যায়। তারপর সন্ধ্যেয় বাড়ি ফিরে, বোতল বোতল মদ গিলে, বৌয়ের নরম বুকে ঘুমিয়ে পড়ে। এই রকম জীবনে- না আছে কোন স্বপ্ন, না আছে কোন কল্পনা, না আছে কোন সংগীত। পশুর জৈবিক বাসনা ছাড়া, এই ধরণের জীবনে আর কিছু নেই। এদের দেহটা মানুষের মতো। কিন্তু এদের জীবন আর চরিত্রটা, মাংশাসী পশুর মতো। মদ মাৎসর্য্য আর নারীদেহের মাংস ছাড়া, জীবনে এরা ভালো কিছু খুঁজে পাই নি।

কি ভয়ঙ্কর অপচয় ঈশ্বর প্রদত্ত ক্ষমতার! ঈশ্বর লক্ষ লক্ষ বছর ধরে নিদ্রাহীন থেকে, মানুষকে- তার দেহ ছাড়াও, তার দেহের মধ্যেই অসীম এক মহাবিশ্ব দিয়েছেন। মানুষের মধ্যে থাকা সেই মহাবিশ্ব হলো তার চেতনা। যার যত বড় চেতনা, তার বিশ্বটা ঠিক ততটা বড়। যে মানুষ পৃথিবী ছেড়ে মহাকাশ নিয়ে ভাবে, তার চেতনা মহাকাশ সমান। যে মানুষ কেবল তার ঘরের দালানকে, শ্বেত পাথরে বাঁধাতে তার জীবন আর যৌবন ব্যয় করে, তার চেতনা তার ঘরের দালানটার মতোই ক্ষুদ্র।

কি হতে চাও হে মানুষ, তুমি কি হতে চাও? তুমি আকাশ হতে চাও? অথবা ছোট্ট ঘরের, ততোধিক ছোট্ট এক দালান হতে চাও?

© অরুণ মাজী

স্বামীজী, স্বপ্ন আর পার্থিব সুখ
Monday, June 19, 2017
Topic(s) of this poem: bangla,consciousness,courage,sacrifice,swami vivekananda
COMMENTS OF THE POEM
READ THIS POEM IN OTHER LANGUAGES
Close
Error Success