একদিন দেখি
অশীতিপর পেন্তীর মা
কুঁজো পিঠ নিয়ে
হনহন করে,
হাঁফাতে হাঁফাতে দৌড়ছে।
জিজ্ঞেস করলাম-
ঠাম্মা, ছুটছো কেন ?
মরবে নাকি?
পেন্তীর মা বললে-
মুখপোড়া, জীবনের কি বুঝিস তুই?
জীবন কি আর
ট্যাঁকে গুঁজে, শুয়ে থাকার জন্য?
জীবনকে ফড়িং বানিয়ে
তার- পিছু ধাওয়া করতে হয়।
জীবনকে কাঁচাগোল্লা বানিয়ে
লোফালুফি খেলতে হয়।
জীবনকে তালপাতার বাঁশি বানিয়ে
ফুঁ দিয়ে সুর বাজাতে হয়।
সে
অনেকদিন আগেকার কথা।
তারপর আমার গোঁফ গজিয়েছে
চুলে, সাদা সাদা পাক ধরেছে;
আর নিম্নদেশে-
থলথলে চর্বি বাসা বেঁধেছে।
একদিন স্বপ্নে
বটুর চায়ের দোকানে,
আমার 'নিচা'-র সাথে দেখা।
(Friedrich Nietzsche, German Philosopher, poet)
নিচা বললে আমায়
'জানিস উন্মাদ,
জীবনে ঘটনা বলে কিছু নেই;
সবই তোদের-
উন্মাদ মস্তিষ্কের বর্ণনা! '
আমি জানতে চাইলাম-
যেমন?
'যেমন বটু বলে-
মদ খেলে
আমাশার নিরাময় হয়,
অথচ এঁচোড়ে পাকা ডাক্তার বলে
মদ খেলে
লিভারে সিরোসিস হয়!
তাহলে ঘটনা কোনটা?
বটুই যে মিথ্যে
তার প্রমাণ কি?
মদ খেলে শরীরের ক্ষয় হয় ঠিকই
কিন্তু তাতে
মানুষের যন্ত্রণার উপশম হয়! '
আমি জিজ্ঞেস করলাম-
সে কারনেই কি
মদ খেয়ে খেয়ে
তুমি পটল তুললে, গুরু?
'নিচা' রেগে কাঁই!
সে বললে-
'তোর মাথায় ছারপোকা!
তুই শালা এসব বুঝবি না!
তুই উন্মাদ
তাই মদ খাস না। '
জীবনটা একটা খোলা আকাশ
মনে রঙ চড়িয়ে, তাকে দেখতে হয়!
মদ না খেলে
মনে রঙ আসবে কত্থেকে? '
আমি বললাম
এ আর নতুন কথা কি?
এ কথা তো পেন্তীর মা-ও জানে!
'নিচা' বললে-
'পেন্তীর মা মুখ্য,
তাই জীবনের সংজ্ঞা
সে ভালো করে জানে!
তুই শালা বক পন্ডিত।
তাই তুই,
খেই হারিয়ে
হাঁড়ি হাঁড়ি খই ভাজছিস!
জীবনে
মুক্তি যদি পেতে চাস
তো- যা শিখেছিস,
সব ভুলে যা।
দেখবি
জীবনটা কেমন ফড়িং হয়ে
পিড়িং পিড়িং করে
তোর গা চুলকে দিচ্ছে!
যারা বক পন্ডিত
তাদেরই কেবল যন্ত্রণা!
এ পৃথিবীতে মুখ্যুরাই
মোক্ষ লাভ করে!
বুদ্ধ যীশু মহম্মদ
মুখ্যু ছিলেন বলেই
মোক্ষের দরজা দেখেছেন! '
জিজ্ঞেস করলাম-
কিন্তু গুরু,
মুখ্যু আমি হই কি করে?
নি: মদ খা শালা
মদ খা! '
আ: মদ যে আমি খাই না!
নি: তুই শালা বেরসিক!
তবে প্রেমের মধু খা!
আ: প্রেমে তো পড়েছি গুরু।
কিন্তু মালবিকা, চুমু যে দেয় না!
নি: তবে কেড়ে খা!
আ: জোর করলে যদি কামড়ে দেয়!
নি: ওরে উন্মাদ
নারীর কামড়েই তো আসল মধু!
© অরুণ মাজী
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem