শিক্ষার উদ্দেশ্য মানুষকে ডানা দেওয়া। যাতে সে খোলা আকাশে উড়তে পারে। সেই উড়া- সদাই যে মৃদু বাতাসে হবে তা নয়। সেই উড়া কখনো কখনো, প্রবল ঝড় বৃষ্টিতেও হতে পারে। সে জন্য মানুষের ডানা শক্ত হতে হবে, আর তার উড়ার ইচ্ছে থাকতে হবে। 'স্বাধীনতা আর সাহস' শব্দ দুটো তাই, অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে। যাদের বুকে সাহস আছে, তারা পা চাঁটা ফেতি কুত্তা হয়ে, দাসত্ব কখনো করবে না। তারা স্বাধীন ভাবে উড়তে চাইবে। আকাশে যদি প্রবল ঝড় বৃষ্টি হয়. তবুও তারা উড়তে চাইবে।
নিজে নিজে আমি একশোবার 'কানে ধরে উঠ বস' করবো। কিন্তু কেউ যদি আমাকে, মাত্র একবার 'কানে ধরে উঠ বস' করতে বলে, আমি তার আন্ডারপ্যান্টে কাঠ পিঁপড়ে ছেড়ে দেবো। কেন? স্বেচ্ছায়- যন্ত্রণা পেয়ে মরবো আমি, সেও ভালো। কিন্তু দাসত্ব করে, ঘি ভাত অমৃতও আমার সহ্য নয়।
যে শিক্ষা- মানুষকে উড়তে না শিখিয়ে, তাকে আরও বেশি দাসত্বের জালে জড়িয়ে ফেলে; তা শিক্ষা নয়। তা নারকীয় দাসত্বকরণ প্রথা। দুর্ভাগ্যের ব্যাপার- ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষা নয়। এ এক দাসত্বকরণ প্রথা। কিভাবে?
আমি গ্রামে বা শহরে, অনেক ছেলেকে জানি। তারা মাস্টার ডিগ্রি করে বসে আছে। আমি বলি- 'ভাই, কিছু তো শুরু করো। আলুর দোকান বা কাপড়ের দোকান- অন্তত কিছু একটা।' তারা ক্ষুব্ধ আর ব্যথিত হয়। যেহেতু তারা ব্যথা পায়, আমি আর কথা বাড়াই না। মানুষকে ব্যথা দেওয়া আমার স্বভাব নয়। কিন্তু, তারা ব্যথা পায় কেন?
'আমি এম এস সি পাশ করে আলুর দোকানে বসবো? ' 'আমি ব্রাহ্মণের সন্তান, আমি জুতোর দোকান করবো? ' অথচ তাদের পরিবার অর্দ্ধাহারে মরছে। চাকরির জন্য তারা, বছর বছর ধরে, ব্যাঙাচির পায়ে ধরছে, বা তেলাপোকার পশ্চাৎদেশ মর্দন করছে।
তাতে, তাদের কোন লজ্জা নেই! কিন্তু জুতোর দোকান করতে তাদের লজ্জা হয়! যার ব্রহ্মজ্ঞান আছে, সে ব্রাহ্মণ। যে শিক্ষা- 'কর্ম্মকে' ঘৃণা করতে শেখায়- তা কি ধরণের ব্রহ্মজ্ঞান? তারা কেমন ব্রাহ্মণ সন্তান? এদের এইসব দুর্বুদ্ধি হলো কেন? কারন- আজকের শিক্ষা আর সংস্কৃতি ব্যবস্থা, মানুষকে কেবল মিথ্যে অহঙ্কার (VANITY) শেখায়। তাকে কর্ম্ম শেখায় না। যে শিক্ষা মানুষকে কর্ম্ম শেখায় না, তা ছারপোকার বিষ্ঠা মাত্র।
আজকের বড় বড় কলেজ আর ইউনিভার্সিটি, কেবল- চরিত্রহীন, কাপুরুষ, কর্ম্মবিমুখ, ছারপোকা তৈরী করে। এদের অহঙ্কার আছে, অনুধাবন নেই। এদের স্বপ্ন/অভিপ্রায় আছে, কর্ম্ম নেই। এদের হিংসে আছে, বুকে সাহস বা ত্যাগ নেই।
এ ধরণের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমার মুতে দিতে ইচ্ছে করে। কিন্তু পারি না। কারন- সরস্বতী সন্তান আমি। মা আমাকে, কান মুলা দেবে। আমার পরিবার যদি অনাহারে মরে, আমি- পায়খানার নলের ভিতর হাত ঢুকিয়ে, 'গু' পরিষ্কার করতেও সহাস্যে তৈরী।
কর্ম্মের কোন শ্রেণী হয় না। কর্ম্মের কোন ধর্ম হয় না। কর্ম্মের কোন বিভেদ হয় না। কর্ম্ম নিজেই ঈশ্বরের বহিঃপ্রকাশ। একদল উল্লুক, উন্নাসিক, অহঙ্কারী মানুষ- কর্ম্মের শ্রেণী বিভাজন করেছে। ইচ্ছে হয়- সেই সব উল্লুকগুলোর পশ্চাৎদেশে, উকুন ছেড়ে দিই আমি।
© অরুণ মাজী
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem