মানুষের কবি, সাম্যের কবি, মানবতার কবি, বিদ্রোহী কবি নজরুল
স্বদেশ প্রেমিক দুরন্ত চঞ্চল নির্ভিক, জাতীয় কবি নজরুল।
ব্রিটিশ বিরোধী স্বদেশী লড়াইয়ে, দুঃসাহসী দুর্জয় এক সৈনিক
স্বাধীনতার এক আতœপ্রত্যয়ী অগ্নি শিখা, জ্বলে উঠেছিল দিগ্বিদিক।
ব্রিটিশ শোষণের উত্তপ্ত অনল যখন, জ্বলে উঠেছিল উপমহাদেশে
হুঙ্কার ছেড়ে গর্জে উঠেছিল তখন, তরুণ এক কবি বিদ্রোহী বেশে।
পশ্চিম বাংলার বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে, হয়েছিল যাঁর জন্ম
মসজিদে মাদ্রাসায় পিতার সনে, খেদমতে মিশে ছিল যাঁর কর্ম।
একে একে চার সন্তানের পর, এল এক পুত্র মা-বাবার ঘরে
দুখু তাঁর নাম রাখলেন তাঁরা, বড় আনন্দ-দুঃখ বেদনায় ভরে।
আট বছর বয়সে পিতাকে হারিয়ে, কবি হয়ে গেলেন অভিভাবক হারা
সংসারের বিশাল টানা পোড়নে, কিছুই দেখলেন না অন্ধকার ছাড়া।
দিশেহারা মনে একাকী তখন, বের হয়ে গেলেন কাজের সন্ধানে
রানীগঞ্জে রেলওয়ে গার্ডের বাসায়-বাবুর্চীর কাজে, আসানসোলে রুটির দোকানে।
অর্থের অভাবে পারেনিকো কবি, লেখাপড়ায় বেশীদূর এগুতে
দশম শ্রেণীর প্রান্তে এসে, বাধ্য করেছে তাঁকে চিরতরে থেমে যেতে।
একের পর এক, স্কুলের পর স্কুল পরিবর্তন
বাঁধা ধরা নিয়ম ভাল লাগছিল না তাঁর, বসছিলনা কিছুতেই পড়া-লেখায় মন।
বন্ধু বান্ধব সহপাঠী নিয়ে, সর্বত্র ছিল যাঁর সদা বিচরণ
হৈ হুল্লোড় করে লেটর দলে, সদা পড়ে থাকতো যাঁর দুরন্ত মন।
মুসলিম হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান, লেখনীতে যাঁর পেয়েছে স্থান
মানবতার এক অক্ষয় নজির, কবির পরিচিত করেছিল প্রমাণ।
দেশের স্বাধীনতা লভিতে যেমন, গর্জে উঠেছিল কবির লেখনী
সৈনিক বেশে রাইফেল কাঁধে, উঠেছিল ঠিক যুদ্ধে তেমনি।
সিপাহী থেকে হাবীলদার পদে, পদোন্নতি হয়েছিল যুদ্ধে যাঁর
দেশের কঠিন ক্রান্তি লগ্নে, সময় ছিলনাকো নীরব থাকার।
এদেশ ছাড়বি কিনা বল্? নইলে কিলের চোটে হাড় করিব জল
বিদ্রোহী কবির অগ্নিঝরা লেখনী সেদিন, ব্রিটিশেরে করেছিল উন্মাদ পাগল।
বন্দী কারাগারে ব্রিটিশ উৎখাতে, লিখিত হয়েছিল কবির যে বিদ্রোহী কবিতা গান
স্বাধীনতা প্রিয় স্বদেশ বাসীকে, যুগিয়েছিল সে সব উৎসাহ প্রদান।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সেদিন, উজ্জিবীত হয়েছিল সমগ্র জাতি
জাতীয় কবির বিদ্রোহী লেখনী সেদিন, ছিনিয়ে এনেছিল বিজয়ের খ্যাতি।
অন্যায় অত্যাচার অনাচারের বিরুদ্ধে, গর্জে উঠেছে সদা কবির কলম
দুর্বল যত মজলুম মানুষের পক্ষে, কবির লেখনী ছিল বন্ধু চরম।
ইসলামী কবিতা-হামদ্ ও নাথ কবির, পৌঁছে দেয় যেন এক আধ্যাতিœক স্তরে
আল্লাহ্ ও রসুলের প্রেমে যিনি, লিখতে পেরেছেন আপনার করে।
নজরুল গীতি যেন করে প্রাণ সঞ্চার, মনের মাধুরী মিশিয়ে
প্রেম ভালবাসায় আবেগে ভরা, সবার হৃদয়ে আছে যেন ছুঁয়ে।
১১ই জৈষ্ঠ্য ১৩০৬ সালে, বর্ধমানে যে কবি করেছিলেন জন্ম গ্রহণ
২৯শে আগষ্ট ১৯৭৬ এ, সেই কবি ঢাকায় করলেন মৃত্যু বরণ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে আজি, চির নিদ্রায় শায়িত কবি
জাতির গর্ব অহংকার, স্বাধীন বাংলাদেশের উজ্জ্বল নক্ষত্র, প্রজ্জ্বলিত এক রবি।
বিশ্বের কোথাও যাবে নাকো পাওয়া, এমন তরো কবির দেখা
যুগিয়েছে প্রেরণা প্রতিটি লেখনী যাঁর, হৃদয়ে সবার থাকবে লেখা।
সেইতো মোদের জাতীয় কবি, বিদ্রোহী কবি নজরুল
সাম্যের কবি, মানবতার কবি, মানুষের কবি নজরুল।
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem