পাপিষ্ঠ ইয়াযিদের নির্দেশে
তার সেনাবাহিনী মেতে উঠেছিল
মুসলিম হত্যালীলায়
সাহাবায়ে কেরামের রক্তে
লাল হয়েছিল মদীনার প্রতিটি গলি
রক্তরঞ্জিত হয়েছিল প্রিয়নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র রওজা মুবারক
কিন্তু কেন?
কী ঘটেছিল মদীনায়?
বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস ও ইতিহাসবিদগণের
প্রসিদ্ধ গ্রন্থ থেকে তা জেনে নেই:
ঘটনাটি ঘটেছিল ৬৩ হিজরিতে
দিন ছিল বুধবার
(আল্লামা ইবনু কাসীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন)
মদীনা মুনাওওয়ারাহ থেকে একটি দল
দামেশকে ইয়াযিদ বিন মুয়াবিয়ার
সাথে সাক্ষাতের জন্য আগমণ করলেন
সে তাদেরকে ভালভাবে আপ্যায়ণ করল এবং অনেক উপহার প্রদান করল
এ দলের আমীর ছিলেন
আব্দুল্লাহ বিন হানযালা
(তিনি সাহাবী ছিলেন। তাঁর
বাবা হানযালা রাদিয়াল্লাহু আনহু উহুদের
যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন)
দামেশকে অবস্থানকালে তাঁরা ইয়াযিদের সীমালঙ্ঘন নিজ চক্ষে দেখেছিলেন
যা তাদেরকে ভীষণভাবে মর্মাহত করেছিল
তাঁরা যখন মদীনায় ফিরে আসলেন,
মদীনা মুনাওওয়ারার সবাইকে জানিয়ে দিলেন
ইয়াজিদের নানান অপকর্মের কাহিনী
বিশেষ করে মদ পান করা, মাতাল হয়ে নামাজ
ছেড়ে দেয়া ছাড়াও আরো বিভিন্ন অপকর্মের কথা
মসজিদে নববীর মিম্বরের সামনে সবাই
এসে উপস্থিত হলেন
ইয়াযিদকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করলেন
তার নিকট বাইয়াত করতে অস্বীকৃতি জানালেন
সংবাদ পৌঁছে গেল ইয়াজিদের নিকট
ইয়াযিদ (ক্ষিপ্ত হয়ে) মুসলিম বিন উকবার অধীনে একটি সেনাদল প্রেরণ করল
যখন দল্টি মদীনায় পৌঁছল, মুসলিম বিন উকবাহ তার বাহিনীকে মদীনা মুনাওওয়ারা তিনদিনের জন্য হালাল ঘোষণা দিল
(অর্থাৎ তিনদিনে তারা মদীনায় ইচ্ছেমত যা কিছু করার করতে পারবে, কোন বাধা থাকবেনা।)
এ তিন দিনে ইয়াজিদের বাহিনী অনেক মানুষ
হত্যা করেছিল
ইমাম মালিক রাহিমাহুল্লাহ বলেন
এসময় ইয়াযিদের বাহিনী ৭০০জন
হাফিযে কোরআনকে হত্যা করেছিল
এর মধ্যে তিনজন ছিলেন সাহাবী
এ ঘটনাকে ইতিহাসে হাররার ঘটনা বলে অভিহিত করা হয়েছে
সুত্রঃ আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ
ষষ্ট খন্ড অধ্যায়ঃ আল ইখবারু আন ওয়াকআতিল হাররাহ
এ ঘটনাকালে ইয়াযিদ বাহিনী মানুষ হত্যা, সম্পদ লুন্ঠন এবং নারী ধর্ষণ-সব কিছুই করেছিল
সুত্রঃ আত তাবারীঃ ৫/৪৮৪ আল কামিলঃ ৪/১১২
আল বিদায়াহঃ৮/২১৮
এ ঘটনাকালে মুসলমানের রক্তে পিচ্ছিল
হয়ে গিয়েছিল মদীনার রাস্তাগুলো
মুসলমানের রক্ত গড়িয়ে গড়িয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের রওযা মোবারক পর্যন্ত
পৌঁছেছিল
মসজিদে নববী রক্তে ভরে গিয়েছিল
১০০০০ মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছিল
ধর্ষণের ফলে ১০০০ জারজ সন্তান জন্ম নিয়েছিল
সুত্রঃ আত তাযকিরাহ ইমাম ইবনুল জাওযী
পেইজঃ ৬৩, ১৬৩
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
ঘটনাটি ঘটবে, তা জানতেন
হযরত আইয়ুব বিন বুশাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেকবার
কোন এক সফরে বের হলেন
অতঃপর হাররা নামক স্থান অতিক্রম করতে গিয়ে থেমে গেলেন অতঃপর ফিরে আসতে চাইলেন
সাহাবীদের নিকট বিষয়টি ঠেকল
উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন,
হে আল্লাহর রাসুল, কী দেখলেন (ওখানে) ?
তিনি বললেন, এটা তোমাদের কোন সফরের পথ
হতে পারেনা
সাহাবাগণ বললেন, সেটা কী হে আল্লাহর রাসুল?
তিনি বললেন, এ হাররা নামক স্থানে আমার সাহাবীদের পর আমার উম্মতের শ্রেষ্ঠ লোকদেরকে হত্যা করা হবে
সুত্রঃ দালাইলুন নুবুওওয়াহ
ইমাম বাইহাকী হাদীস নাম্বারঃ ২৮১৭
তাহলে কী দাঁড়াল?
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
ইয়াজিদের ভবিষ্যৎ অপকর্মের কথা জানতেন
ঘটনাটি কতটুকু সত্য?
হাফিয ইবনে হাজার আসকালানী রাহিমাহুল্লাহ
বলেন, ঐতিহাসিকগণ হাররার ঘটনার সত্যতার ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে ঘটনায় ৮০জন সাহাবী শহীদ হয়েছিলেন
এ ঘটনার পর আর কোন বদরী সাহাবী জীবিত থাকেন নি
সুত্রঃ ফতহুল বারী: ৮/৬৫১
ইবনে তাইমিয়াহ বলেন,
ইয়াজিদের শাসনকালে একটি বড় ঘটনা ঘটেছিল
মদীনাবাসী তার নিকট বাইয়াত গ্রহন অস্বীকার
করেছিলেন এবং সরকারী কর্মকর্তাকে তাঁর
পরিবার সহ মদীনা থেকে বের করে দিয়েছিলেন
(মূলতঃ ফাসিক ইয়াজিদের উপর ক্ষিপ্ত
হয়ে তারা তাকে সপরিবারে বের
করে দিয়েছিলেন, যা ইমাম ইবনে হাজার তাঁর
কিতাবে উল্লেখ করেছেন)
অতঃপর ইয়াযিদ একটি সেনাদল প্রেরণ করল মদীনায় পৌঁছে তারা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল আর এটা ছিল ইয়াজিদের নির্দেশে এক অত্যাচার আর সীমালংঘনের নিদর্শন
সুত্রঃ মাজমুউল ফাতাওয়া: ৩/৪১২
(Collected)
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem