A Flaneur In Maximum City Poem by Malay Roy Choudhury

A Flaneur In Maximum City

ম্যাক্সিমাম সিটিতে এক পথচারী
মলয় রায়চৌধুরী
১.
রাস্তায় ঘুরে বেড়াই,আমার লুচ্চা চোখচলে যায়
ছুকরি উরুর দিকে, মিনির তলায় এতোটা জায়গা ফাঁকা
ওখানে বিজ্ঞাপনকোং দিতে তো পারেন ছাপ্পা
কোক কনডোম তেল চা সাবানগুঁড়ো মশলার
সহজেই যেদিকে ক্রেতার লোভি চাউনি ঠোকরাবে
২.
জয় শ্রীরাম বলেনি বলে পেটাচ্ছে দাড়ি-সিঁদুর ভিড়
ওহ কি শ্লেষ্মা-কান্না বাঁচবার শেষ চিৎকার
ভাবি, ইমলিতলায় লোকে দেখা হলে নিজেদের
বলতো জয় সীতারাম । পুংটিকি পুতনা-ছোঁড়ারা
সীতাকেই রামায়ণ থেকে ছিঁড়ে বাদ দিয়ে দিলো
৩.
কালকে বিকেলে দেখেছিলুম ম্যানেক্যুইন ল্যাংটো শরীরে
বেগুনি ইজের আর বুকে বাঁধা হলুদ বডিস
সোকেশের শার্শি ভাঙার পর আজকে তার দেহ ঢেকে
পরানো হয়েছে চুড়িদার, তার ওপরে সবুজ ইজের
বুকে সবুজ বডিস, দু-দুটো বিমারু হুমকি এক সাথে
৪.
জিমে যাই, বিনে পয়সায় স্ট্রেস টেস্ট সেরে নেবো ভেবে
দেখি দুই পালোয়ান তেলালো ছোকরা কোথা থেকে
পাইথন সাপ এনে ওয়েট-লিফটিঙ করছে কাঁধে তাকে নিয়ে
ম্যাক্সিমাম সিটি নামে খ্যাত গ্যাঞ্জামে কোথা থেকে এলো এ-ময়াল
৫.
বৃষ্টি অঝোরে পড়লেও একপো পটল আলু কিনতে বেরোতেই হয়
হাঁটুজলে ছপছপে চলেছে কলেজের ছোকরা-ছুকরিরা
রাজপথ ট্রেনপথ সবই জলে ডুবে সামনের বন্ধ গাড়িতে
লোকদুটো নাকি মরে পড়ে আছে কাল রাত থেকে
বচসা চলছে দুই পুলিশ দলের মড়া দুটো কার এলাকায়
মৃত্যু যে কি কুত্তা চিজ দুদুটো মড়া তা বুঝেও বোঝেনি
৬.
ট্রেন-বাস কিচ্ছুতে চাপি না শুনি প্রতিদিন ট্রেন থেকে
কয়েকটা মানুষ নিশ্চিত ঝরে মরে আজকে মরেছে হিজড়ে
মেরিন ড্রাইভের ধনীদের অপদস্হ করে টাকা তোলবার ধান্দায়
হিজড়ের লাশ বলে পড়ে আছে সহজে ছোঁবে না কেউ এ-শহরে
ম্যাক্সিমাম সিটিতে শুধু মৃত্যুই খচ্চর প্রাণী সারাক্ষণ বেঁচে
ভালোবাসা মানে নিজেকেই ভালোবাসা প্রেম বিক্রির এ-শহরে
৭.
কামড়াবে আঁচ করে জলাতঙ্কের ভয়ে লোহার রড দিয়ে
দশজনের বেশি লোক পিটিয়ে মারছে দেখি রাস্তার কুকুর
বিস্কুট খাওয়াতুম মাঝে-মধ্যে মুরগির চর্বচোষ্য ঠ্যাঙ
শ্লেষ্মা-কান্না নয় মানুষের মতো, কেবল মাংস নাড়িভুঁড়ি রক্ত
ছিৎরে যাবার যন্ত্রণা এই ম্যাক্সিমাম সিটির গূঢ় আর্তনাদ
কুকুর তো জানতে পারে না মৃত্যু যে কি কুত্তা চিজ
৮.
মর্নিঙ ওয়াক করতে সাবওয়ে দিয়ে গেলে শর্টকাট হয়
দেখি পা ফেলার জায়গা নেই রাস্তা সারাবার জন্য মজুরেরা
অন্ধ্র-তেলেঙ্গানা থেকে এসেছে বউ বাচ্চা হাঁড়িকুড়ি নিয়ে
সারারাত কাজ করে তারাই ঘুমোচ্ছে এখন উঠবে দুপুরে
সবজিঅলাদের ফেলে দেয়া পচাধসা আইটেম রাঁধবে কুড়িয়ে
জলেতে চোবানো রোজ তাজা করা কীটনাশকের সবজি
পচবেই তা সে ম্যাক্সিমাম সিটি হোক বা পুরোনো নগর
৯.
হাঁটার বালিয়াড়ি নেই সমুদ্র ফিরিয়ে দেয় কয়েক হাজার টন
প্লা্টিকের পাঁক তবু তারই ওপরে বসে বাইরে থেকে আসা মজুরেরা
হাগে ভোরবেলা কাছিম মায়েরা যেখানে বছর তিরিশ আগে
পেড়ে যেতো ডিম আর বাচ্চারা ডানা মেলে ঢেউয়ে দৌড়োতো
লক্ষ ফ্ল্যাট ফাঁকা পড়েবিল্ডারের কালোকেল্টে টাকার দৌলতে
আকাশ ছুঁচ্ছে যতো বাড়িগুলো তার চেয়ে বাড়ছে বস্তিবাসী
তারা না থাকলে চাকর-চাকরানি পাবে না ৪০-৫০-তলাউলি
১০.
গেলুম ভিড় দেখে প্লাস্টিকের ঢাকনা খোলা ময়লা গাদায় রাতে
ভ্রূণ ফেলে গিয়েছিল ফুটফুটে মরে পড়ে আছে দমবন্ধ হয়ে
খাবার টঙ্কা নেই কনডোম হরমোন পিল কিনবে কোথ্থেকে
বাচ্চাটার ভাগ্য ভালো অন্তত কুড়িতলা বিল্ডিঙের জঞ্জালে
জায়গা করে দিয়ে গেছে কোনো দয়ালু নাচার ধার্ষণিক
১১.
কাকের সঙ্গম নাকি দেখতে নেই দিন খারাপ যায়, তাই হলো
মরেছে উনিশতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে সক্কালবেলা গুজ্জুভায়া
দেনার ধাক্কায় চিৎপাত চোকসি মোদি বিজয় মল্লের মতো
দেশ থেকে কেটে পড়বার প্যাঁচ কষতে পারেনি বেচ্চারা
এতো ভোরে পৌঁছে গেছে যে গুজ্জুরা হুণ্ডি কেটে ধার দিয়েছিল
মড়াটার খুলিফাটা মুখ দেখে টের পাই জীবনও কতো কুত্তা চিজ

১২
নরক নরক নরক নরক নরক নরক নরক নরক নরক নরক
অনেকেই পরামর্শ দিয়েছিল বিকল্প নরকে চলে যান অন্তত
চারটে কাঁধ পাবেন আপনার বা বুড়ির গতি করে দেবে তারা
হয়তো কাচের বাক্সে শুয়ে নাকে তুলো গুঁজে যাবেন টোরিয়ামে
এখানে হাসপাতালে ঢুকলেই ছেঁকে ধরবে রক্তচোষা ডাক্তারের দল
মরার পর আর নরকে যাবো না আমরা দুই বুড়ো-বুড়ি
জীবদ্দশায় নরকের ভোগান্তি ভুগে ছাই হয়ে আরব সাগরে গিয়ে
খেলবো শুশুক তিমি ম্যাকারেল মুম্বিলের রঙিন জলসায়

Saturday, February 8, 2020
Topic(s) of this poem: modern
COMMENTS OF THE POEM
READ THIS POEM IN OTHER LANGUAGES
Close
Error Success