T. S. Eliot's "Love Song Of J Alfred Prufrock Translated In Bengali Poem by Malay Roy Choudhury

T. S. Eliot's "Love Song Of J Alfred Prufrock Translated In Bengali

লাভ সং অভ জে আলফ্রেড প্রুফ্রক - টি এস এলিয়ট

চলো যাই, তুমি আর আমি
যখন বিকেল ছড়িয়ে পড়ে আকাশের বিপরীতে
টেবিলে শোয়ানো অর্ধচেতন মুমূর্ষু রোগির মতন
চলো যাই, আধমরা কোন পথ দিয়ে
অস্থির রাতের চিন্তার বিদ্রোহী পিছুহটা
কোনও এক রাতের সস্তা হোটেলে
চারদিকে ঝিনুকের খোল আর করাত গুঁড়োর ধুলো
এঁকাবেঁকা পথ বক্র তর্কে পিছু নেয়
সর্পিল অভিপ্রায়
তোমায় আমায় নিয়ে যায় চেতনাগ্রাসী সে প্রশ্নের কিনারায়.
জানতে চেয়ো না সে প্রশ্ন কী
তারচেয়ে বরং এসো শেষ করি বিকেলের পায়চারি।
ঘরটায় মহিলারা যাওয়া-আসা করেন।
মাইকেল অ্যাঞ্জেলোর কথা সকলের মুখে-মুখে।
হলুদ কুয়াশা জানালার শার্সিতে পিঠ ঘষে,
হলুদ ধোয়া জানালার কাচে মুখ ঘষে,
বিকেলের প্রান্তে জিভে দেহ চাটে,
বিকেল থমকে যায় নর্দমার নোংরা জলের ওপরে,
চিমনির ফুল ঝরে পড়তে দেয় পিঠের ওপরে,
ছাদের ঢাল থেকে হঠাৎ লাফ দেয়
আর হেমন্তের সন্ধ্যা আসন্ন দেখে
কোনো বাড়ির প্রান্তে গিয়ে ক্রমে কুঁকড়ে গিয়ে সুখে ঘুমোয়
আরসময় তো বস্তুত থাকবে
রাস্তায় পিছলে পড়া হলুদ ধোঁয়ার
জানালার কাচে পিঠ ঘষবার;
সময় থাকবে, সময় থাকবে
চেনা মুখগুলোর সঙ্গে দেখা করতে নিজ মুখটি সাজাবার;
সময় থাকবে সৃষ্টি ও সংহারের,
সময় থাকবে দিনের অবশিষ্ট সব কাজ সেরে ফেলার
প্রশ্নতুলে ধরবার, থালার ওপর ফেলবার,
শত শত সিদ্ধান্তহীনতার
শত শত ঝাপসা চিন্তার বার বার ফিরে আসবার
অনেক আগেই একটু চা-খাবার।
ঘরটিতে মহিলারা আসেন আর যান
মাইকেল এঞ্জেলোর কথা বলে বেড়ান।
আর সময় তো থাকবে
বিস্ময়ে ভাববার, ‘সাহস আছে কি'? ‘সাহস আছে কি আমার'?
পিছু ফিরে তাকাবার এবং সিঁড়ি বেয়ে নামবার,
যেহেতু এক টুকরো টাক মাথার মাঝে আমার
(ওরা বলবে: ‘ঝরে ঝরে পাতলা হচ্ছে ওর সব চুল')
যদিও আমার সকালবেলার কোট, চিবুকের কাছে, কলারে টাইটা নিপাট
আমার নেকটাই দামি আর শোভন, সাদামাটা টাই-পিনটাসব শ্রী নষ্ট করে দেয়
(ওরা বলবে, " ওর হাত সরু , পাগুলোও", কেমন বিভ্রাট!)
সাহস হবে কি আমার
জগতকে বিরক্ত করার?
এক মিনিটেও সুযোগ গড়ে ওঠে
সিদ্ধান্ত নেবার এবং এক মিনিটেই তা বদলে ফেলার।
কার্যত, সেই ফাঁকে, ওদের সবাইকে চিনে ফেলেছি
সব সকাল, বিকেল আর সন্ধ্যাকে চিনে ফেলেছি
জীবনকে মেপেছি কফির চামচে;
সব কণ্ঠস্বরই চেনা হয়ে গেছেদিনে দিনে
সব স্বর চাপা পড়ে দূর থেকে ভেসে আসা সঙ্গীতের সুরে
এমন সময়ে আমিই বা ভাবব কেমন করে?
সব চোখই চেনা চোখ
আমায় বেঁধে রাখে চেনা এক ছকে
পিন দিয়ে গেঁথাসেই ছকে কুঁকড়ে মরি
দেয়ালে বিদ্ধ হয়ে কাতরে মরি যন্ত্রণায়
তাহলে আমি কী করেই বা শুরু করি।
জীবনের যেটুকু বাকি রয়ে গেল, যেটুকু ভাববার।
কী করেই বা শুরু করি পুনর্ভাবনার?
সুডৌল বাহুমূল সব চিনে গেছি, চিনেছি ওসব
শাদা বাহু চুড়ি-পরা বা নগ্ন, নধর
(প্রদীপের আলোয় দেখেছি, বাদামি আলুলায়িত চুলের ভার)
কারো পোশাকের সুগন্ধ কি আমায়
আনমনা করে ফেলবে আলাদা চিন্তায়?
আলতো করে টেবিলে শোয়ানো বা শালে জড়ানো হাত সব
শুরু করব কি পুনর্ভাবনার?
কী করেই বা শুরু করব?
বলব কি সরু গলি পথে হেঁটেছি গোধুলি বেলায়
পাইপ থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখেছি
নিঃসঙ্গ লোকটার, জামার হাতা যার জানালার বাইরেঅবহেলায় ঝোলে? ..
তারচেয়েভালো হতো, যদিরুক্ষ নখের কোনো প্রাণী হতুম
ঢেউহীন সমুদ্রের তলায়বোধহীন ঘুরে বেড়াতুম চিরকাল।
এই বিকেল আর সন্ধ্যাকী গভীর শান্তিতে ঘুমোচ্ছে!
দীঘল আঙুলের কোমল ছোঁয়ায়
সে ঘুমোয়... ক্লান্ত... বা রুগ্নতার ভান করে,
তোমার আমার পাশে, সাষ্টাঙ্গ ছড়িয়ে মেঝের ওপরে
আমি কি চা, কেক, আইসক্রিম খেয়ে
সঙ্কট মোচনেরশক্তি পেয়ে যাব?
কিন্তু যদিও আমি কেঁদেছি, খালিপেটে থেকেছি, কেঁদে কেঁদে উপাসনাও করেছি
যদিও আমার টেকো মাথা দেখেছি আমার থালায়,
আমি কোনো গুরু নই, এমন কোনো মহাসমস্যায় পড়িনি;
আমার মাহাত্ম্যের ক্ষণগুলো উধাও হয়ে গেছে
দুর্দশা দেখে, শ্বাশত সহকারী বিদ্রুপ হাসি হেসেছে,
আর আমি সন্ত্রস্ত বোধ করেছি সে হাসিতে ।
আরএরপর কি মানাতো
চা, আচার খেয়ে এসব
চীনামাটির কাপের ভিড়ে তোমার আমার আলাপ জমত কি?
তখন কি মানাতো আর
সে সব বিষয়গুলো হেসে এড়াবার
বা পৃথিবীটাকে দুমড়েমুচড়ে গোলাকার পিণ্ড বানাবার,
গড়ানো পিণ্ডটা যেন গড়ায় সর্বগ্রাসী প্রশ্নের দিকে,
যেন বলা যায় "আমি ল্যাজারাস' শব থেকে পুনরুজ্জীবিত
বলতে এসেছি সকলকে, তোমাদের সকলকে-"
তখন যদি কেউ বালিশটি ঠিক করে, মাথা তুলে
বলে ওঠেঃ "এমন কথা তো আমি বলতে চাইনি কাউকে
এমন তো বোঝাতে চাইনি কাউকে"।
আর শোভন হত কি শেষকালেএমন কিছু বলা
শোভন হতো কি শেষে
অনেক সূর্যাস্ত, উঠোন এবং বৃষ্টি ভেজা রাস্তার প্রান্তে
অনেক উপন্যাস-পাঠ, অনেক চা-পান শেষে, অনেক ঘাগরার-
মেঝেতে লেপ্টানো শেষে
একথা বা অন্য অনেক কথা?
যা বলতে চাই, তা তো বলা সম্ভব নয় মোটেই!
সে সব কথা অগোছালো করে দেয় চেতনাকে
কোনো জাদুর পর্দায় সব ফোটে:
শোভন হতো কি, তা বলা
যদি কেউ বালিশটা ঠিক করে গায়ে ছোঁড়ে শালটা
জানালার দিকে মুখ ফিরিয়ে বলতো
"তা নয় মোটেও
এসব আমি বুঝাতে চাইনি মোটেও।
নাঃ, আমি রাজপুত্র হ্যামলেট নই
বড়োজোর রাজার হুকুম তামিল করি এমন একজন, যার কাজ
রঙ্গমঞ্চের অনুষঙ্গ বা দু'এক দৃশ্যের বাড়ানো সাজ
রাজপুত্রকের পরামর্শ দেয়া এক-আধটু, এক সহজলভ্য স্যাঙাত,
সদা বিনয়ী, তাঁবেদারিতেই ধন্য,
কুটকুশলী সতর্ক আার
বাক্যালঙ্কারী; অর্থ বোঝা তার, সহজ কাজ নয়;
কখনো হাস্যকর কাজ কারবার
কখনো পুরোদস্তুর ভাঁড়মার্কা রাজার।
বুড়ো হয়ে যাচ্ছি... বুড়ো হচ্ছি প্রতিদিন
তবুও প্যান্টের প্রান্তে ভাঁজ দেবার আশা আছে ক্ষীণ
পেছনে সিঁথে কাটব কি? একটা জলপাইখাব?
সাদা ফ্রানেলের প্যান্ট পরে সাগরতীরে হাঁটব
হয়তো-বা মৎস্যকন্যাদের গান শুনতে পাব।
আমি মনে করি না, তারা আমায় গান শোনাবে
তাদের দেখেছি ঢেউয়ের মাঝে সাগরে ভেসে যেতে
ঢেউয়ের সাদা চুলগুলোকে আঁচড়ে দূরে নিয়ে যায়
বাতাস তাড়িত জলরাশি যখন কখনও শাদা কখনও কালো।
দীর্ঘকাল কাটিয়েছি সাগরকন্যার ঘরে
লাল আর বাদামী সমুদ্র-শৈবালের মালা দিয়ে সাগরকন্যা বরণ করেছিল আমায়

মানবকণ্ঠ আমায় জাগানোর আগে এরই মাঝে ডুবে ছিলুম।

Saturday, February 8, 2020
Topic(s) of this poem: modern
COMMENTS OF THE POEM
ANIRBAN pal 11 September 2022

Good

1 0 Reply
READ THIS POEM IN OTHER LANGUAGES
Close
Error Success