আঁতোনা আতো-র কবিতা (Antonin Artaud)[ ১৮৯৬ - ১৯৪৮ ]
অনুবাদ: মলয় রায়চৌধুরী
নিরংশু কবি
নিরংশু কবি, একটি তরুণীর বুক
তোমাকে হানা দিয়ে বেড়ায়,
তিক্ত কবি, জীবন ফেনিয়ে ওঠে
আর জীবন পুড়তে থাকে,
আর আকাশ নিজেকে বৃষ্টিতে শুষে নেয়,
জীবনের হৃদয়ে নখের আঁচড় কাটে তোমার কলম ।
অরণ্য, বনানী, তোমার চোখ দিয়ে প্রাণবন্ত
অজস্র ছেঁড়া পালকের ওপরে;
ঝড় দিয়ে বাঁধা চুলে কবি চাপেন ঘোড়ায়, কুকুরের ওপরে ।
চোখ থেকে ধোঁয়া বেরোয়, জিভ নড়তে থাকে
আমাদের সংবেদনে স্বর্গ উথালপাথাল ঘটায়
মায়ের নীল দুধের মতন;
নারীরা, ভিনগারের কর্কশ হৃদয়,
তোমাদের মুখগহ্বর থেকে আমি ঝুলে থাকি ।
আমার টাকাকড়ি নেই
আমার টাকাকড়ি নেই কিন্তু
আমি
আঁতোনা আতো
আর আমি ধনী হতে পারি
ব্যাপকভাবে আর এক্ষুনি ধনী হতে পারি
যদি আমি তার জন্য প্রয়াস করতুম ।
সমস্যা হলো আমি চিরকাল টাকাকড়িকে,
ধনদৌলতকে, বৈভবকে ঘৃণা করেছি ।
কালো বাগান
এই কালো পাপড়িগুলোর ভারতে আকাশেরঘুর্ণাবর্তকে ঘোরাও।
ছায়ারা পৃথিবীকে ঢেকে ফেলেছে যা আমাদের সহ্য করে ।
তোমার নক্ষত্রদের মাঝে চাষের জমিতে পথ খুলে দাও ।
আমাদের আলোকিত করো, নিয়ে চলো তোমার নিমন্ত্রণকর্তার কাছে,
চাঁদির সৈন্যবাহিনী, নশ্বর গতিপথে
আমরা রাতের কেন্দ্রের দিকে যেতে চেষ্টা করি ।
আমি কে
আমি কে?
আমি কোথা থেকে এসেছি?
আমি আঁতোনা আতো
আর আমি একথা বলছি
কেননা আমি জানি তা কেমন করে বলতে হয়
তাৎক্ষণিকভাবে
তুমি আমার বর্তমান শরীরকে দেখবে
ফেটে গিয়ে বহু টুকরো হয়ে গেছে
আর তাকে আবার গড়ে ফেলবে
দশ হাজার কুখ্যাত পরিপ্রেক্ষিতে
এক নতুন শরীর
তখন তুমি আমাকে
কখনও ভুলতে পারবে না ।
স্নায়ু ছন্দ
একজন অভিনেতাকে দেখা হয় যেন স্ফটিকের ভেতর দিয়ে ।
মঞ্চের ওপরে অনুপ্রেরণা ।
সাহিত্যকে বেশি প্রবেশ করতে দেয়া উচিত নয় ।
আমি আত্মার ঘড়ি ধরে কাজ করা ছাড়া আর কোনো চেষ্টা করিনি,
আমি কেবল নিষ্ফল সমন্বয়ের যন্ত্রণাকে লিপ্যন্তর করেছি ।
আমি একজন সম্পূর্ণ রসাতল ।
যারা ভেবেছিল আমি সমগ্র যন্ত্রণার যোগ্য, এক সুন্দর যন্ত্রণা,
এক ঘন আর মাংসল পীড়া, এমন এক পীড়া যা বিভিন্ন বস্তুর মিশ্রণ,
বুদবুদ-ভরা একটি নিষ্পেশিত ক্ষমতা
ঝুলিয়ে রাখা বিন্দু নয় - - আর তবু অস্হির, উপড়ে-তোলা স্পন্দনের সাহায্যে
যা আমার ক্ষমতা আর রসাতলের দ্বন্দ্ব থেকে আসে
শেষতমের উৎসার দেয় (ক্ষমতার তেজের দ্বন্দ্বের মাপ বেশি) ,
আর কোনও কিছু বাকি থাকে না বিশাল রসাতলগুলো ছাড়া,
স্হবিরতা, শীতলতা-
সংক্ষেপে, যারা আমাকে অত্যধিক জীবনের অধিকারী মনে করেছিল
আত্মপতনের আগে আমার সম্পর্কে ভেবেছিল,
যারা মনে করেছিল আমি যন্ত্রণাদায়ক আওয়াজের হাতে নির্যাতিত,
আমি এক হিংস্র অন্ধকারে লড়াই করেছি
তারা সবাই মানুষের ছায়ায় হারিয়ে গেছে ।
ঘুমের ঘোরে, আমার পুরো পায়ে স্নায়ুগুলো প্রসারিত হয়েছে ।
ঘুম এসেছে বিশ্বাসের বদল থেকে, চাপ কমেছে,
অসম্ভাব্যতা আমার পায়ের আঙুলে জুতো-পরা পা ফেলেছে ।
মনে রাখা দরকার যে সমগ্র বুদ্ধিমত্তা কেবল এক বিশাল অনিশ্চিত ঘটনা,
আর যে কেউ তা খুইয়ে ফেলতে পারে, পাগল বা মৃতের মতন নয়,
বরং জীবিত মানুষের মতন, যে বেঁচে আছে
আর যে অনুভব করে জীবনের আকর্ষণ আর তার অনুপ্রেরণা
তার ওপর কাজ করে চলেছে ।
বুদ্ধিমত্তার সুড়সুড়ি আর এইপ্রতিযোগী পক্ষের আকস্মিক প্রতিবর্তন ।
বুদ্ধিমত্তার মাঝপথে শব্দেরা ।
চিন্তার প্রতিবর্তন প্রক্রিয়ার সম্ভাবনা একজনের চিন্তাকে হঠাৎ নোংরামিতে পালটে দ্যায় ।
এই সংলাপটি চিন্তার অন্তর্গত ।
ভেতরে ঢুকিয়ে নেয়া, সবকিছু ভেঙে ফেলা ।
আর হঠাৎ আগ্নেয়গিরিতে এই পাতলা জলের স্রোত, মনের সরু, আস্তে-আস্তে পতন ।
আরেকবার নিজেকে ভয়ঙ্কর অভিঘাতের মুখোমুখি আবিষ্কার করা, অবাস্তবের দ্বারা নিরসিত, নিজের একটা কোনে, বাস্তব জগতের কয়েকটা টুকরো-টাকরা ।
আমিই একমাত্র মানুষ যে এর পরিমাপ করতে পারি ।
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem