Beat Generation Poet Denise Levertov Translated In Bengali Poem by Malay Roy Choudhury

Beat Generation Poet Denise Levertov Translated In Bengali

বিট জেনারেশনের মহিলা কবি ডেনিসে লেভেরটভ-এর কবিতা (১৯২৩ - ১৯৯৭)
অনুবাদ: মলয় রায়চৌধুরী
ঘোষণা
আমরা দৃশ্যটা জানি: ঘর, নানাভাবে সাজানো,
প্রায় সব সময়েই এক বক্তৃতার টেবিল, একটা বই; সব সময়
দীর্ঘ লিলিফুল ।
বিশাল ডানা মেলে পবিত্র মহিমায় নেমে এলেন,
দৈবিক দূত, দাঁড়িয়ে বা মাথার ওপরে ঘুরছেন,
যাকে উনি চেনেন, এক অতিথি ।
কিন্তু আমাদের বলা হয়েছে ভীরু আনুগত্যের কথা। কেউ বলেনি
সাহস
উৎসারিত তেজোময়তা
তাঁর অনুমতি ছাড়া সামনে যায়নি । ঈশ্বর অপেক্ষা করছিলেন।
উনি স্বাধীন
গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে, বাছবার অধিকার
যা মানবিকতার অঙ্গ ।
কোনো ঘোষণা কি নেই
এক বা অন্য ধরণের বেশিরভাগ জীবনের?
অনেকে অনিচ্ছায় পরম নিয়তি বেছে নেয়,
তাদের কার্যকর করে বিরূপ গর্বে,
বুঝতে না পেরে ।
বেশিরভাগ সময়ে সেই মুহূর্তগুলো
যখন আলো আর ঝড়ের পথএকজন পুরুষ বা নারীর অন্ধকার থেকে বেরোয়,
তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়
আতঙ্কে, দুর্বলতার ঢেউয়ে, বিষণ্ণতায়
আর অসুবিধা লাঘবে।
সাধারণ জীবন চলতে থাকে।
ঈশ্বর তাদের যন্ত্রণা দেন না ।
কিন্তু সিংহদুয়ার বন্ধন হয়ে যায়, লোপাট হয় পথ…
উনি একজন শিশু ছিলেন যিনি খেলা করতেন, খেতেন, বানান
করতেন অন্য শিশুদের মতন -কিন্তু অন্যদের মতন,
দয়া ছাড়া কাঁদতেন না, হাসতেন না
বিজয়ে নয় আনন্দে ।
সমবেদনা ও বুদ্ধি
মেশানো ছিল তাঁর মধ্যে, অবিভাজ্য ।
আরও যুগান্তকারী নিয়তির জন্য ডাক পড়ল
অন্যান্যের চেয়ে বিশেষ সময়ে,
উনি পেছপা হলেন না,
কেবল জিগ্যেস করলেন
সহজভাবে, "কেমন করেই বা এটা হতে পারে? "
আর গম্ভীরমুখে, সৌজন্যে,
দেবদূতের উত্তর হৃদয়ে মান্যতা দিলেন,
তক্ষুনি বুঝতে পারলেন
তাঁকে যে অদ্ভুত মন্ত্রিত্ব উপহার দেয়া হচ্ছিল:
তাঁর গর্ভে ধারণ করতে হবে
অনন্ত ওজন আর ভারহীনতা; বইতে হবে
গোপনে, সীমিত অন্তরে,
নয় মাসের অনন্তকাল; ভেতরে রাখতে হবে
কোমল অস্তিত্ব,
ক্ষমতার যোগফল-
এক মৃদু মাংসে,
আলোর যোগফল ।
তারপর জন্ম দিতে হবে,
বাতাসে ঠেলে বের করতে হবে, এক মানব-শিশুকে
অন্য সকলের মতন যার প্রয়োজন
দুধ আর ভালোবাসা- -
কিন্তু তিনি ছিলেন ঈশ্বর ।

উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়ে ক্যালিফোর্নিয়ায়
ক্ষয়রোগে মৃত ইউকালিপটাস গাছগুলোর মাঝে,
ক্রিসমাসের তুষারে মরচে-পড়া গাছ আর ঝোপের মাঝে
ক্ষেত আর পাহাড়তলি পাঁচ বছরের খরায় হাঁপিয়ে-ওঠা,
এক ধরণের বাতাসি শাদা ফুল নিয়মিত ফুটেছে
পুনরায় ফুটেছে, আর ফিকে গোলাপি, ঘন গোলাপি ঝোপ-
এক সূক্ষ্ম আতিশয্য । তাদের মনে হল
অতিথিরা আনন্দে এসে পড়ছেন পরিচিত
উৎসবের দিনে, বছরের ঘটনাগুলো সম্পর্কে অবিদিত, দেখতে পাননি
চটের পোশাক অন্যেরা পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে ।

আমাদের কয়েকজনের, মনপরা উপত্যকা ভালো সঙ্গ দিচ্ছিল
আমাদের লজ্জা আর তিক্ততার পাশাপাশি । আকাশ চিরকেলে-নীল
প্রতিদিনের সূর্যোদয়, আমাদের বিরক্ত করছিল হাসাবার বোতামের মতন।
কিন্তু ফুটেথাকা ফুলগুলো, সরু ডাল আঁকড়ে
উড়ন্ত পাখিদের চেয়েও বেশি সতর্ক,
ভেঙেপড়া হৃদয়কে উৎসাহিত করছিল
এমনকি তার নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে ।
কিন্তু
আশার প্রতীক হিসাবে নয়: ওরা ছিল ফালতু
অপরাধের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ
- আবার, আবার- - আমাদের নামে; আর হ্যা, তারা ফিরছিল
বছরের পর বছর, আর হ্যাঁ, সংক্ষিপ্ত সময়ের নির্মল আনন্দে উজ্বল হয়ে উঠছিল
অন্ধকার আলোর বিরুদ্ধে
শয়তানি দিনগুলোর। ওরা আছে, আর ওদের উপস্হিতি
স্তব্ধতায় অনির্বচণীয় -আর বোমাবর্ষণ হচ্ছিল, ছিল
সন্দেহ নেই আরও হবে; সেই শান্ত, সেই বিশাল শ্রুতিকটূতা
যুগপৎ । কোনো কথা দেওয়া হবনি, ফুলগুলো
তো পায়রা নয়, কোথাও রামধনুও ছিল না । আর যখন দাবি করা হল
যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে, তা মোটেই শেষ হয়নি ।

প্রেমের কবিতা
হতে পারে আমি একটা অসুস্হ অংশ
একটা অসুস্হ জিনিসের
হয়তো কোনোকিছু
আমাকে ধরে ফেলেছে
নিশ্চয়ই কিছু একটা আছে
আমাদের মাঝে
আমি তো তোমাকে
দেখতেই পাই না
কিন্তু তোমার হাত দুটো
দুটো জানোয়ার যা ঠেলে দেয়
কুয়াশা একপাশে আর আমাকে ছোঁয় ।

বিবাহ সম্পর্কে
আমাকে বিয়ের বাঁধনে জেলে পুরো না, আমি চাই
বিয়ে, একটা
সাক্ষাৎ প্রতিদ্বন্দ্বীতা-
আমি তোমাকে বলেছিলুম
সবুজ আলো
মে মাসের
(নৈশব্দের একটা পরদা ফেলা হয়েছে
শহরের মাঝখানের বাগানে,
গত
শনিবারের পর
দুপুর, দীর্ঘ
ছায়া আর শীতল
বাতাস, সুগন্ধ
নতুন ঘাসের,
নতুন পাতার,
ফুল ফোটার জন্য তৈরি
প্রচুর- -
আর পাখিগুলোকে সেখানে আমি দেখেছিলুম,
উড়ন্ত পাখিরা যাত্রাপথে থামছে,
বিভিন্ন রকমের তিনটি পাখি:
আজেলা-ফুলের রঙ গোল মাথা, কালচে,
চিত্রবিচিত্র, ফুরফুরে, ইঁদুরপেছল পাখি,
আর সবচেয়ে ছোট্ট, সোনালি কাঁটাদার ঝোপের মতন পরে আছে
কালো ভেনিশিয় মুখোশ
আর তাদের সঙ্গে তিনটে সম্ভ্রান্ত গৃহিনী পাখি
কোমল বাদামি জীবন্ত পালকে মোড়া- -

আমি দাঁড়ালুম
আধঘণ্টার মতো জাদুমগ্নতার তলায়,
কেউ কাছ দিয়ে যায়নি
পাখিগুলো আমাকে দেখলো আর
আমাকেযেতে দিলো
তাদের কাছে ।)

এটা
অপ্রাসঙ্গিক নয়:

আমার সঙ্গে
দেখা হবে

আর তোমার সঙ্গে
দেখা করব
তাই,

একটা সবুজ
ফাঁকা জায়গায়, কারারুদ্ধ
থাকতে চাই না ।

মনচলার পর
একবার আমরা খেটেখুটে
আমাদের পুরোনো সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর -
‘ভৌতিক', ‘ঘন', ‘বাস্তব', ‘বস্তুনিচয়' - থেকে মুক্ত হলে
প্রাচীন পরিমাপ থেকে স্বীকার করতে হয় কি,
যদিও খোলাচোখে কিন্তু লুণ্ঠিত
নেত্রগোচর যন্ত্রপাতিতে, দর্শনীয় নয় (ওহ,
সংক্ষেপে দেখা যায় না!)স্বীকার করতে হয়
যে ‘বড়ো' আর ‘ছোটো' ওদের
মর্মার্থ নেই, কেননা বস্তু নয় বরং প্রক্রিয়া, কেবল প্রক্রিয়া,
চেষ্টা করে দেখা দেবার
জ্ঞানযোগ্য: জগতসংসার, ব্রহ্মাণ্ড- -
তারপর আমরা যা অনুভব করি
দুর্বল গ্রেপ্তারের মুহূর্তে,
আতঙ্কের কালো কাপড় পড়ে যাচ্ছে
আমাদের মুখের ওপরে, আমাদের শ্বাসের ওপরে,
তা পাসকালের আতঙ্কের নতুন এক মোচড়,
নিরীক্ষণের এক প্রসারণ,
এর উদ্দেশ্য এখন
আমাদের মাংসের ভেতরে, অনন্ত পরিসর আবিষ্কার
আমাদের নিজের অণুর ভেতরে, নূনতম
কণা যাকে আমরা অনুমান করেছিলুম
আমাদের নশ্বর অহং (আর ভেতরে আর বাইরে,
তারা ঠিক কি?)-তারা এখন উদ্দেশ্য
আগে থেকে ফেলে যাওয়া শূন্যতা
বিলাসের ঘোষণা, পরিমাপের বিরে
আমাদের অশরীরী, কাল্পনিককে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া,
(হ্যাঁ, কিন্তু সংবেদী,)পদার্থের ধারণা,
আমাদের ভাষার মতনই ভ্রমাত্মক,
প্রবহণ যা আত্মা কেবল
পরিব্যপ্ত, এড়িয়ে যায় কিন্তু নাছোড় ।


বিবাহের অবিরাম বেদনা
বিবাহের অবিরাম বেদনা:
উরু আর জিভ, হে প্রিয়,
এর সঙ্গে বেশ ভারি,
তা দাঁতে স্পন্দিত হয়

আমরা আংশিদারীর চেষ্টা করি
কিন্তু ফিরিয়ে দেয়া হয়, হে প্রিয়,
প্রত্যেকে আর প্রত্যেকে

এটা হল প্রকাণ্ড হাঙর আর আমরা
তার পেটের ভেতরে
আনন্দ খুঁজি, কোনও আনন্দ
যা এর বাইরে জানা যাবে না
দুই বনাম দুই এর সিন্দুকের
মধ্যে এর অবিরাম বেদনা ।

নভেম্বর ১৫, ১৯৬৯ বিচার বিভাগে
বাদামি ডিজেল-ধোঁয়া, শাদা
রাস্তার বাতগুলোর তলায় ।
তিন দিকে ছাঁটা, সব জায়গা ভরা
আমাদের দেহ দিয়ে ।
দেহ যা হুমড়ি খেয়ে পড়ে
বাদামি বাতাসহীনতায়, শাদা রঙে রাঙানো
আলোয়, এক ছাতাপড়া বিহ্বল দ্যুতি,
যা হুমড়ি খেয়ে পড়ে
হাতে হাত দিয়ে, অন্ধ-করে-দেয়া, মুখবিকৃতি ।
তাকে চাই, চাইছি
এখানে উপস্হিত থাকতে, দেহ বিশ্বাস করছে নিজের
বিবমিষায় মৃত্যু, আমার মাথা
নিজের বিষণ্ণতায় স্পষ্ট, এক ধরণের আনন্দ,
জানতে পারা যে এটা মোটেই মৃত্যু নয়,
মামুলি, এক দুর্ঘটনা, একটা
ঠুনকো মুহূর্ত। তাকে চাই, চাইছি
আমার যাবতীয় চাহিদা দিয়ে এই ক্ষোভ,
দেহের ভেতরে জানতে পারা
আমরা সকলে কঠোর অস্বাভাবিকতার
বিরুদ্ধে লড়ছি, চাইছি এর বাস্তব রূপ।
নদীর তীরে যেখানে ডিজেলের ধোঁয়া
আইভিলতায় পাক খেলো, পরস্পরকে টেনে নিয়ে
ওপর দিকে, অচেনা, ভাইয়েরা
আর বোনেরা । কিছুই
ঘটবে না কিন্তু
তিক্ততার স্বাদ নেয়া
স্বাদ । নেই জীবন
অন্য, এটা ছাড়া ।

Friday, February 7, 2020
Topic(s) of this poem: sixties
COMMENTS OF THE POEM
READ THIS POEM IN OTHER LANGUAGES
Close
Error Success