ভক্তিতে গদগদ হয়ে
জীবনে অনেক প্রণাম করেছি।
কিন্তু শেষ প্রণাম আমি
'মাতা সোনাগাছি'-কে করবো।
শৈশবে, ভক্তিতে গদগদ হয়ে
হেডমাস্টারকে অনেক প্রণাম করেছি।
সেই হেডমাস্টার কিনা
শিশু বিদ্যালয়ের পাঁউরুটি চুরি করে
তার দুপুরের খাওয়ার সারতো।
যে পুরুত ঠাকুর
গ্রামের মন্দিরে পূজা করতো;
তাকেও প্রণাম করেছি আমি।
কিন্তু সে ব্যাটা
প্রণামরত গৃহবধূর, আলগা বুকের দিকে চেয়ে
ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকতো।
যে মন্ত্রী
সাদা কাপড়ে গান্ধী সেজে থাকতো,
তারও চরণে মাথা ঠুকেছি আমি।
সে ছুঁচোও পরে
ধর্ষণ-চুরির দায়ে জেলে চলে গেলো।
ঘেন্না হয়। নিজেকে ঘেন্না হয়।
যাকেই ভদ্র সাধু ভেবে
ভক্তিতে গদগদ হয়ে
পা ছুঁয়ে প্রণাম করি আমি;
সে-ই পরে, নরকের কীট প্রমান হয়।
অথচ যারা
চোর বাটপার খুনী চণ্ডাল
তাদের প্রতিই, আজ বেশি শ্রদ্ধা হয়।
তারা অন্তত, সঙ সাজে সেজে থাকে না।
তারা পেটের দায়ে চুরি করে;
বৌয়ের সম্ভ্রম বাঁচাতে খুন করে।
কিন্তু ভদ্দরলোক?
নিছক লোভ আর আনন্দের জন্য-
সরকারি তহবিল তছরুপ করে,
শিশু খাদ্য বেচে গাড়ি চড়ে,
মানুষের উপর মানুষকে লেলিয়ে দিয়ে
নিজের কতৃত্ব কায়েম করে,
রাজা সাজতে তারা
গোপনে, সহস্র প্রজা খুন করে।
এ পৃথিবী নিষ্ঠুর,
জেলে বন্দী, খুনী-ডাকাতদের জন্য নয়।
এ পৃথিবী নিষ্ঠুর নোংরা,
সদা পূজ্য, শুভ্র বস্ত্রের ভদ্দরলোকেদের জন্য।
ঘেন্না হয়।
ভদ্দরলোক দেখলে
আমার ভীষণই ঘেন্না হয়।
তাই ভাবছি
এবার বেশ্যা পূজা করবো।
তারা অন্তত
ভদ্দরলোকেদের মতো,
নিজ কামনা লালসার জন্য-
আপন চরিত্র বেচে না।
আমি মরমর হলে
মন্দিরে নিয়ে যেও না আমাকে।
আমাকে বরং, সোনাগাছি নিয়ে যেও।
জীবনের শেষ প্রণাম আমি
সোনাগাছির বেশ্যাকে করবো।
© অরুণ মাজী
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem