যারা রাজনীতিক, তাদের অসংখ্য বন্ধু হয় ভক্ত হয়।
যারা মুভি ষ্টার, তাদেরও অসংখ্য বন্ধু হয় ভক্ত হয়।
যারা লেখক, তাদেরও অসংখ্য বন্ধু হয় ভক্ত হয়।
কিন্তু যারা সত্যের যাত্রী?
সত্যকে যারা সপাটে সজোরে বলে,
তাদের কি অবস্থা হয়?
কোপার্নিকাস একা একদিকে
চার্চ আর সারা পৃথিবী অন্যদিকে।
গ্যালিলিও একদিকে
সারা পৃথিবী অন্যদিকে।
ফ্রেডরিক নিচা একদিকে
তার পরিবার, বন্ধু, পৃথিবী অন্যদিকে।
শেষ জীবনে এরা
কি মর্মান্তিক যন্ত্রণা পেয়েছিলো!
কেউ 'বন্ধ কারার' আড়ালে, কেউ পর্দার আড়ালে,
তাদের জীবন কাটিয়েছিলো।
মানুষ তাদেরকে কেবল
ঘৃণা, অবজ্ঞা আর তাচ্ছিল্ল্য দিয়েছিলো।
মানুষ এদের উপর
প্রকাশ্যে থুতু ছিটিয়েছিলো!
অথচ আজকের পৃথিবী
আজকের পৃথিবী হতো না
এদের আত্মার সেই দম্ভ আর প্রতিজ্ঞা ছাড়া।
তবুও মানুষ নিজেকে বুদ্ধিমান বলে!
তবুও মানুষ নিজেকে শ্রেষ্ঠ জীব বলে!
মানুষ যা জানে
তাকে চ্যালেঞ্জ করলেই
সেই ব্যক্তি মানুষের শত্রু হয়ে যায়!
কি অন্ধ এই মানুষ!
কি অসহিষ্ণু এই মানুষ!
কি পশুসুলভ আবেগ প্রবণ এই মানুষ!
জানো?
মাঝে মাঝে একাকী লাগে!
মমতা ব্যানার্জীর মিথ্যেকে চ্যালেঞ্জ করলাম
তো 'মমতা ভক্তরা' গালি দিলো, ছেড়ে পালালো!
যারা হিংসা ধর্মান্ধতা ছড়ায়
সেই সব মানুষ আর সম্প্রদায়কে চ্যালেঞ্জ করলাম
তো তারা ছেড়ে পালালো!
আমার নিজের হিন্দু ধর্মের ভুল নিয়ে কথা বললাম
তো তারাও ছেড়ে পালালো!
যেদিন থেকে লিখতে শুরু করেছি
সেদিন থেকেই
আমার কাছের বন্ধু আর আত্মীয়রাও আমাকে
একটু 'অন্য চোখে' দেখে।
তারাও আমাকে উন্মাদ বলে গালি করেছে!
একাকী হয়ে যাচ্ছি।
সেজন্যই তো মাঝে মাঝে বুকে তুড়ি মেরে
প্রার্থনা করি-
'হে জগজ্জননী মা,
হয় বুকে আগুন দে
নয় আজই তুলে নে।'
এর অর্থ-
বাঁচলে আমি সত্যের যাত্রী হয়ে বাঁচবো, বীর সিংহের মতো বাঁচবো।
ইঁদুর বাচ্চার মতো নয়।
ইঁদুর-কৃমির জীবন, আমার জীবন নয়।
পৃথিবীতে ৮০০ কোটি লোক থাকবে,
কিন্তু আমি তাহলে থাকবো না।
তবে হ্যাঁ, আমার প্রায় সাত হাজার কবিতা থাকবে।
আমার প্রবন্ধ আর উপন্যাস থাকবে।
আমি এমন ব্যবস্থা করে রেখেছি-
সে সব লেখা হাজার বছর ধরে, 'ক্লাউড' আর 'ওয়েবে' দিব্যি থাকবে।
হে মানুষ
আজ তোমরা আমাকে পরিত্যাগ করছো?
কয়েক দশক পর-
তোমরা, তোমাদের সন্তানরা আমার লেখার কাছে ভিক্ষা চাইবে।
© অরুণ মাজী
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem