তাকে আমি দূরে দূরে রাখি।
এমন একটা ভাব আমার
সে যেন- আমার কাছের কেউ নয়!
তবুও নির্লজ্জের মতো
কাছে এসে, ঘেঁষে ঘেঁষে
আলাপ জমায় সে, একান্তে আমার সাথে।
'আমি গো, আমি।
চিনতে পারছো না তুমি?
সেই যে গো, তোমার একান্ত আমি।
এখনই ভুলে গেলে আমায়? '
রুক্ষ ভাবে খেঁকিয়ে উঠি আমি।
সে তখন বলে-
'আহাঃ রাগ করছো কেন?
তোমার সাথে একটু কথা বলতে পারবো না?
এ কি!
তোমার হাতে রক্তের দাগ কেন?
মানুষ খুন করলে বুঝি?
তোমার নিঃশ্বাস নীল কেন?
কারও বুকে বিষ ঢাললে বুঝি? '
আমি হকচকিয়ে যাই-
তাইতো! হাতে আমার রক্তের দাগ কেন?
গত পরশু-ই তো আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম-
হিংসা আমি আর করবো না।
তার দিকে তাকাই আমি-
চোখে জল, বুকে ব্যথা তার!
সে বলে-
'মানুষ তুমি হলে না অমল!
তুমি না, তোমার মা-কে কথা দিয়েছিলে-
বড় এক মানুষ হবে তুমি?
তবে তোমার মধ্যে, এতো হিংস্রতা কেন? '
একদিন, দুদিন করে
আজ চল্লিশটা বছর হয়ে গেলো।
সে রোজই আসে, পাশে এসে ঘেঁষে ঘেঁষে বসে।
কত কত কথা বলে সে।
কেবলই সে অভিযোগ করে
আমি নাকি তাকে ভুলে যাচ্ছি!
আমি নাকি কেমন যেন-
হিংস্র এক প্রাণী হয়ে যাচ্ছি!
কে গো তুমি?
এতো অবহেলা, তাচ্ছিল্য করি তোমাকে
অথচ এখনও আমাকে ত্যাগ করো নি?
'আমি গো, আমি।
আমি- তোমার আমি।'
(মানুষ ফুল হয়ে জন্মায়, আর হিংস্র জানোয়ার হয়ে মরে। মানুষের এই হিংস্র যাত্রা পথে, তার আত্মা- বিবেকের রূপ ধরে আসে। সে মানুষকে, তার পবিত্র রূপ মনে করিয়ে দিতে চায়। কিন্তু মানুষ বড় লোভী, হিংস্র আর গোঁয়ার। মানুষ তার আত্মার সেই পবিত্র বাণী শুনতে চায় না।)
© অরুণ মাজী
Painting: Iman Maleki
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem