জানো মালবিকা
তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করে।
অনেক করে দেখতে ইচ্ছে করে;
আর আলতো করে
একটু ছুঁতে ইচ্ছে করে।
ঘেঁষে ঘেঁষে তোমার পাশে বসে
একটু ছুঁতে ইচ্ছে করে।
জানতে ইচ্ছে করে
তোমার কি কখনো চূর্ণীর কথা মনে পড়ে?
মনে পড়ে সেই মাঝি মল্লার গান
চূর্ণীর হাসি, তার নিঃশব্দ অভিমান?
মনে পড়ে, বালুচরে
তোমার পা ছড়িয়ে বসে থাকা
আনমনে ঝিনুক দিয়ে
তোমার আমার- নামের প্রথম অক্ষর লেখা?
আমার অবশ্য
তোমাকেই কেবল
আবছা আবছা মনে পড়ে।
আচ্ছা, হাসলে
গালে তোমার, এখনো কি টোল পড়ে?
তাকালে
চোখে তোমার, এখনো কি আগুন ঝরে?
হাঁটলে
নিতম্বে তোমার, এখনো কি বান ভাসে?
আঁচল উড়লে
বুকে তোমার এখনো কি পাহাড় হাসে?
আমার অবশ্য
তোমাকেই কেবল
আবছা আবছা মনে পড়ে।
কি যেন তিথি ছিলো সেদিন?
ওঃ হ্যাঁ, শুক্লপক্ষের চতুর্দশী!
পরদিন তোমাদের বাড়িতে
নারায়ণ পূজা। তাই না?
তুমি এসেছিলে আমায় নিমন্ত্রণ দিতে।
আচ্ছা, বাড়িতে না এসে
চূর্ণীর তীরে কেন ডাকলে আমায়?
ভাবি নি
তোমার কোন অভিসন্ধি ছিলো!
ভাবি নি তোমার বুকে
এতো তৃষ্ণা ছিলো! এতো হাহাকার ছিলো!
আমি পৌঁছতেই,
ধাক্কা দিয়ে বালুচরে ফেলে দিলে আমায়।
বুকের উপর চড়ে বসে
গাঢ় করে জড়িয়ে ধরলে আমায়!
ভাবো তো
কেউ যদি দেখে ফেলতো!
তাহলে কি কেলেঙ্কারীই না হতো!
বাধা আর শুনলে কই!
আমার জামা ছিঁড়ে
বুকে আঁচড় দিলে এঁকে।
আমার সুপ্ত পৌরুষত্বে
জয় তিলক দিলে এঁকে।
ভয় করে নি?
একবারও তোমার ভয় করে নি?
যে আগুন জ্বেলেছিলে সেদিন
সে আগুন
এখনো দাউ দাউ করে জ্বলছে।
যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলে সেদিন
সেই স্বপ্ন এখনো
ঘুমের মধ্যে বারবার হাসছে।
কিন্তু কোথায় তুমি? কোথায়?
তেইশটা বছর হয়ে গেলো মালবিকা-
তোমার জ্বলানো আগুন বুকে ঘুরছি
তোমার দেখানো স্বপ্ন চোখে ঘুরছি।
তোমার আঁকা ক্ষত বুকে ঘুরছি।
বড় জ্বালা মালবিকা,
বড় জ্বালা এ বুকে।
যে নারীকে
জীবন যৌবন স্বপ্ন
সব কিছু দিয়ে নিঃস্ব হয়ে ঘুরছি;
সে নারী কখনো তো আমায়
একবারও মনে করে না!
হে নারী
কেন তবে জ্বেলেছিলে আগুন
আমার শীতল বুকে?
সমুদ্র হয়ে যদি
না-ই বা নেভালে সে আগুন
কেন তবে জ্বেলেছিলে আগুন
আমার শীতল বুকে?
© অরুণ মাজী
Painting: Amit Bhar
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem