যখন ছোট্ট ছিলাম
কত রঙ ছিলো চোখে!
হুল্লোড় করা আকাশ ভর্তি তারা
হৈচৈ করা গাছ ভর্তি চামচিকে
ম ম করা বাতাস ভর্তি সুগন্ধ।
কত যৌবন ছিলো জীবনে!
কত ছেলেখেলা ছিলো জীবনে!
কত উদ্দাম উচ্ছৃঙ্খলতা ছিলো জীবনে!
কত বাঁধনহারা উচ্ছ্বাস ছিলো জীবনে!
ফড়িং লেজে দূর্বা বেঁধে
ঘুড়ি উড়ানো।
পাখির পাখনায় চৌকি বেঁধে
পক্ষীরাজ সাজা।
চাঁদমামাকে ভেংচি কেটে
মায়ের সঙ্গে লড়াই।
মায়ের সঙ্গে লড়াই করে
চাঁদকে ভেংচি কেটে বলতাম-
দেখো দেখো
কেমন ক্যাবলা তোমার ভাই!
যা কিছু ছিলো না
তাই যেন বড় বেশি ছিলো।
সূর্য্যি মামাকে হাতে ছুঁতে না পারলেও
বুকে সে গেঁথে ছিলো।
রামধণুকে আঁকতে না পারলেও
চোখ সে ছেয়ে ছিলো।
পাখি নদীর ভাষা না বুঝলেও
কত ভাব ছিলো তাদের সঙ্গে!
মানুষ একে একে যা ছুঁতে থাকে,
তাই সে দূরে ঠেলে ফেলে।
আকাশ ছুঁতে গিয়ে সে
আকাশকে খাটো করে দিলো।
চাঁদমামাকে ছুঁতে গিয়ে সে
মামা-ভাগ্নের সম্পর্ক ঘুঁচিয়ে দিলো।
প্রাচুর্য্য ছুঁতে গিয়ে সে
প্রাচুর্য্যকে কিঞ্চিৎ করে ফেললো।
প্রেমকে ছুঁতে গিয়ে সে
প্রেমকে পণ্য বানিয়ে ফেললো।
মানুষ যা ছোঁয়, তারই মৃত্যু ঘটে।
তবুও মানুষ ছুঁতে চায়!
নারী-ওষ্ঠ একসময়
স্বপ্নের রামধনু থাকে।
মানুষ যখনই তা ছুঁয়ে ফেলে
নারী-ওষ্ঠকে সে
আঁশটে মাংস বানিয়ে ফেলে।
ছোঁয়াতে সুখ নেই হে মানুষ
ছোঁয়াতে সুখ নেই।
সুখ কেবল রঙিন রঙিন কল্পনায়
আর রামধনু রঙ স্বপ্নে।
© অরুণ মাজী
Painting: Morteza Katouzia
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem