চোখ বন্ধ করে অনুভব করার চেষ্টা করলাম আমি। কিন্তু দেখি, আমার বুকে উপর শুয়েই, নিজের উর্ধভাগ উন্মুক্ত করতে উদ্যত হলো তৃষ্ণা। ওকে বাধা দিতে ওর হাত চেপে ধরলাম আমি।
কিন্তু কোন বাধা মানলো না তৃষ্ণা। ওর ফ্রকের বোতামগুলো, নিজে নিজেই খুলে ফেললো ও। আমার নগ্ন বুকের উপর ওর নগ্ন দেহ উন্মুক্ত করে, আবার শুয়ে পড়লো ও।
কোন কথা না বলে, ওর স্পর্শ অনুভব করলাম আমি। বড় কোমল ওর স্পর্শ। যেমন কোমল প্রস্ফুটিত পুষ্পের স্পর্শ। বড় উষ্ণ ওর আবেশ। যেমন আগ্নেয় গিরির উষ্ণ প্রসবন। বড় কোমল ওর বক্ষ। যেমন কোমল করুণাময়ী মাতার মাতৃবক্ষ।
আহঃ কি আনন্দ আমার! কি আরাম! কি নিরাময়!
নারী স্পর্শে নিরাময় আছে। পুরুষ যন্ত্রণার লাঘব ঘটে তাতে। নারী স্পর্শে সঞ্জীবনী মন্ত্র আছে। পুরুষ অবসাদের সমাপ্তি ঘটে তাতে।
এক ঘন্টা কেটে গেলো। দুঘন্টা কেটে গেলো। তিনঘন্টা কেটে গেলো। তবুও তৃষ্ণা নড়লো না। ঠিক একইভাবে আমার বুকের উপর শুয়ে রইলো ও।
বুঝলাম, সন্ধ্যা শেষ হয়ে রাত্রি নেমেছে এখন। কিন্তু তৃষ্ণাকে ছাড়তে পারলাম না আমি। ভাবলাম, বেচারা কাল চলে যাবে। আমাকে যদি, ও এমন করে জড়িয়ে ধরতে চায়, তো আমি তাতে বাধা দেবো কেন?
হটাৎ নীচ থেকে কাকীমার গলার আওয়াজ ভেসে এলো-
তৃষ্ণা, নীচে আয় তোরা।
তৃষ্ণা কোন উত্তর করলো না। আমাকে বরং আরও গভীর ভাবে জড়িয়ে ধরলো ও।
ও সাড়া দিলো না দেখে, সাড়া দিতে উদ্যত হলাম আমি। কিন্তু তৃষ্ণা বাধা দিলো আমাকে। আমার মুখের উপর হাত চেপে ধরলো ও।
ওকে জিজ্ঞেস করলাম-
কিরে, খিদে পাচ্ছে না তোর?
তৃষ্ণা কোন উত্তর করলো না। আমার ঠোঁটে গভীর এক কামড় দিলো ও। হাসলাম আমি। ও বললো-
'তোকে খেয়েই পেট ভরাবো আজ। '
কথাটা বলেই, আমাকে গভীর ভাবে চুম্বন করলো ও। প্রথমে কপালে। তারপর গালে। তারও পরে চিবুকে।
অবশেষে, ঠোঁটে। দীর্ঘক্ষণ ধরে। গভীর এক তৃষ্ণা নিয়ে। অতৃপ্ত এক তৃষ্ণা নিয়ে।
ওর গালে আঁচড় কাটতে কাটতে আমি বললাম-
আজ এত দিচ্ছিস, কিন্তু কাল কি করবো?
'এক বছরেরটা আজই দিয়ে দেবো তোকে।'
হাসলাম আমি। বললাম-
ভালোবাসা যদি এত সহজ হত, তো ভালোবাসাহীনতার যন্ত্রণা পেত না মানুষ।
'কেন? '
নারী দেহ এক রহস্যময় আগুন। পুরুষ যত বেশি পুড়বে পুরুষ, সে তত বেশি পুড়তে চাইবে।
'আর পুরুষ দেহ? '
জানি না।
'পুরুষ দেহ এক যন্ত্রণা। যত বেশি যন্ত্রণা পাবে নারী, সে তত বেশি যন্ত্রণা পেতে চাইবে।'
কথাটা বলেই, ওর বুকের পাহাড় দুটো, আমার মুখের সামনে মেলে ধরলো তৃষ্ণা। তারপর দুষ্টু হাসি হেসে অদ্ভুত ভঙ্গীতে ও আমন্ত্রণ করলো আমাকে। বললো-
'কিরে, পাহাড়ে চড়বি না? '
ওর পাহাড় শৃঙ্গ ঠোঁট দিয়ে স্পর্শ করলাম আমি। অতি যত্নে। অতি সন্তর্পনে। আমার ঠোঁটের স্পর্শে, ওর পর্বত শৃঙ্গ মাথা তুলে জেগে উঠলো। দুষ্টু হাসি হেসে তৃষ্ণা বললো-
'দেখলি? পুরুষ স্পর্শ কি সাংঘাতিক! শৃঙ্গ দুটো জেগে উঠলো আমার।'
হাসলাম আমি। কোন কথা না বলে, ওর পাহাড়দুটো মুখের ওপর চেপে ধরলাম আমি। নাহঃ নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার কোন চেষ্টা করলো না তৃষ্ণা। আমার ইচ্ছের কাছে, নিজেকে সমর্পন করলো ও। সব্বান্তঃকরণে সমর্পন করলো ও।
কিছুক্ষণ কাটলো। আমি বললাম-
চল, দেরী হয়। কিছুই গুছানো হয় নি আমার।
আবার ওর বুকটাকে আমার মুখের উপর আরও জোরে চেপে ধরলো তৃষ্ণা। তারপর বললো-
'সে তোকে ভাবতে হবে না। সব গুছিয়ে দিয়েছি তোর।'
তাই? আমি নিশ্চিৎ, একটা জিনিস ভুলে গেছিস তুই।
'কোন জিনিস? '
আমার প্রিয় একটা জিনিস।
'হতেই পারে না। দু দিন ধরে তোর জিনিসপত্র প্যাক করেছি আমি।'
বেশ, বাজি ধর। হারলে আমাকে আর জ্বালাবি না তুই।
হাসলো তৃষ্ণা। বললো-
'বেশ, যদি আমি জিতি তো আজ সারা রাত জ্বালাবো তোকে।'
রাজি হলাম আমি। বললাম-
বেশ, তাই হবে।
বিছানা ছেড়ে নামলাম আমরা। তৃষ্ণা আমাকে ওর ঘরে নিয়ে যেতে চাইলো। আমি বললাম-
তোর ঘরে যেতে হবে না, এখানেই দেখাচ্ছি তোকে।
অবাক হলো তৃষ্ণা। বিস্ময় দৃষ্টিতে আমার দিকে চেয়ে হাসলো ও। জিজ্ঞেস করলো-
'এখানে? কি? '
দেওয়ালের ফটো ফ্রেমের পিছনে, ছোট্ট একটুকরো কাপড় লুকানো ছিলো। সাত বছর আগে, তৃষ্ণা প্রথম কিস করেছিলো আমাকে। সেদিন, ঠোঁটে ওর লাল লিপস্টিক মাখা ছিলো। আমার ঠোঁটে লিপস্টিক মুছতে, কাপড়ের টুকরোটা ব্যবহার করেছিলো তৃষ্ণা।
লিপস্টিক লেগে থাকা, সেই ছোট্ট কাপড়ের টুকরোটা বের করলাম আমি। সেটা তৃষ্ণার হাতে দিয়ে বললাম-
'দেখলি, এটা প্যাক করতে ভুলে গেছিস তুই?
অবাক হলো তৃষ্ণা। জিজ্ঞেস করলো-
'এটা? এটা কি? '
বিবর্ণ হয়ে যাওয়া কাপড়টা ওর সামনে মেলে ধরলাম আমি। কাপড়টার দিকে এক দৃষ্টিতে বেশ কিছুক্ষণ চেয়ে রইলো ও। তারপর মিষ্টি হাসি হাসলো তৃষ্ণা।
ওকে জিজ্ঞেস করলাম-
চিনতে পারিস এটা?
জেনেও না জানার ভান করলো তৃষ্ণা। আবার জিজ্ঞেস করলো ও-
'কি এটা? '
ওর ঠোঁটে, আলতো করে চুমু দিয়ে বললাম-
তোর প্রথম দুষ্টুমি।
'মানে? '
সাত বছর আগে, সিঁড়ির দেওয়ালে চেপে, আমাকে কিস করেছিলি তুই।
আবার দুষ্টু হাসি হাসলো তৃষ্ণা। আমার গলা জড়িয়ে, আবার আমাকে কিস করলো ও। একবার দুবার নয়। পাঁচবার। নাহঃ পাঁচবার নয়। দশবার তো হবেই।
© অরুণ মাজী
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem