"অমল
বাড়ি আছো? বাড়ি আছো তুমি? "
চেনা চেনা গলায়
কে যেন
হেঁকে হেঁকে ডেকে যায় আমায়!
কে গো? কে গো তুমি?
চেনা চেনা লাগে। মনে পড়ে না মোটে।
মালবিকা হাঁকে তারস্বরে
"ওগো শুনছো? চাল নেই বাড়িতে।"
ঘড়ির টিক টিক ধ্বনির সাথে
নেচে নেচে হেঁটে যায় সময়।
মালবিকার অশ্রুত কঙ্কনধ্বনির সাথে
বিলাপ করতে করতে
অতীতে আস্তানা বাঁধে অবহেলিত যৌবন।
বাড়ির বুড়ো তেঁতুল গাছটার ছালের সাথে
আর্তনাদ করতে করতে
শুকিয়ে যায় অতৃপ্ত জীবন।
"জানো অমল? তুমি সিংহ শিশু।
বুকে তোমার, মায়ের অকুন্ঠ স্নেহ।
গালে তোমার, ঠাম্মার পান খাওয়া গালের চুমু।
আজ একি দশা তোমার অমল?
আজ একি দশা তোমার? "
কে গো? কোন মুখপোড়া তুমি
আমায় কেবল জ্ঞান দিতে আসো?
ভেসে আসে কান্না
রান্না ঘর থেকে।
তোমার কেবল কান্না মালবিকা
তোমার কেবল কান্না!
কি নেই? কি নেই আমাদের বাড়িতে?
তবে এতো কান্না কেন তোমার?
তোমরা কেবল হাড় জ্বালাচ্ছো আমার!
ধীরে ধীরে সন্ধ্যে ঘনিয়ে আসে।
উত্তর হতে
ঠান্ডা হাওয়া ভেসে আসে।
উত্তরের রাস্তা ধরে
কিছুটা আমি হেঁটে যাই।
গাব গাছে ঢাকা আমার মায়ের শ্মশান হেথায়।
শ্মশানের সামনে দাঁড়ালে
মৃদু ব্যথাতুর গলায় কে যেন বলে আমায়-
"কষ্ট হচ্ছে? কোথায় কষ্ট হচ্ছে অমল?
আয় বাছা আয়। তুই বুকে আয়।"
পাশের গাব গাছটার নীচে
আমার বাবার শ্মশান।
দমকা হওয়ার সাথে ভেসে আসে দীপ্ত এক কণ্ঠ
"হাল ছেড়ে তুই দিবি না অমল
হাল ছেড়ে তুই দিবি না।"
আচ্ছা মালবিকা
আমাকে চিনতে পারো তুমি?
আমি কি অমল বোস?
এক্কেবারে ঠিক করে দেখে বলো তো
আমি সত্যিই কি অমল বোস?
"তুমি মরে গেছো অমল বোস
তুমি মরে গেছো।
লোভ হিংসে বিদ্বেষ বিভীষিকা মাঝে
তুমি মরে ভূত হয়ে গেছো।"
ভীষণ একটা চেনা চেনা গলায়
কাঁদতে কাঁদতে
কে যেন তিরস্কার করে যায় আমায়।
© অরুণ মাজী
Painting: Pablo Picasso
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem