'আরে শাশ্বত না,
না মানে আপনি শাশ্বত তো? '
চলন্ত ট্রেনে লাল শাড়ি পরা এক মহিলা
কোলে মেয়েকে নিয়ে উঠেই প্রথম প্রশ্ন।
ঘুমন্ত এক ডি. এস.পি কর্মীর চোখ তখন হতচকিত,
ঠিক যেন স্টেশনে ধারা পরা এক পকেটমারের মুখ।
'ও মোহনা না? 'এক মুখ হেসে, 'বাপরে চিনতেই পারিনি,
কত বদলে গেছিস', আবার হেসে, 'কোলে কে? মেয়ে বুঝি? '
'আমার নদী, একমাত্র মেয়ে, কি করছিস এখন?
ইউনিভার্সিটি ছেড়ে তো তোর আর পাত্তাই নেই! '
'ডি. এস.পি-তে আছি, সকাল আটটার যাত্রী, ছটায় ফিরি,
তোর খবর কি, মডার্ন মোহনা আজ যে পুরোদস্তুর গৃহকর্তী! '
'আমি এখন আর সেই স্বাধীন মোহনা নেই রে', একটু বিষন্ন,
'চাকরি ছেড়ে আজ আমি গাঙ্গুলি বাড়ির কুলবধূ,
নদীর মা, শ্বশুর-শাশুড়ির বৌমা, দেওরের প্রিয় বৌদি,
আমার এখন অনেক রোল।ইউনিভার্সিটির স্বাধীন, চপল,
দুরন্ত, বদমাইশ, রাগী, অভিমানী মোহনা কে চিনতে অসুবিধা
হচ্ছে না রে? যাইহোক আমাকে নামতে হবে, এই কাছেই বাড়ি,
'আনন্দপীঠ', একদিন যাস পুরোনো বন্ধুর বাড়ি'।
টাটা দিয়ে ঘাড় দুলিয়ে জীবনের সমুদ্রে নেমে গেল নদী-মোহনা।
চলমানট্রেনে হাত নাড়তে নাড়তে শাশ্বতর চোখ হতে পালিয়ে
গেল সিনেমা দেখা, ক্লাস পালানো সেই অতীত শাশ্বত বন্ধুত্বটি।
ট্রেনের দুলুনিতে চোখে আবার নামল ঢুলুনি।চোখ বুজল শাশ্বত।
বন্ধ চোখে স্মৃতি বোঝাই মস্তিষ্কের প্যাচালো নিউরনের সক্রিয়তায়
তার কানে ট্রেনের ঝিকঝিকে শুনলো-'অনন্ত বন্ধুত্ব, শাশ্বত বন্ধুত্ব'।
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem