যে জাতির জাত্যভিমান নেই সেই জাতি নপুংসক' (দ্বিতীয় খন্ড) Poem by Arun Maji

যে জাতির জাত্যভিমান নেই সেই জাতি নপুংসক' (দ্বিতীয় খন্ড)

Rating: 5.0

হে ভারত, ভুলিও না- নীচজাতি, মূর্খ, দরিদ্র, অজ্ঞ, মুচি, মেথর তোমার রক্ত, তোমার ভাই।
হে বীর সাহস অবলম্বন কর, সদর্পে বল- আমি ভারতবাসী, ভারতবাসী আমার ভাই।
বল- মূর্খ ভারতবাসী, দরিদ্র ভারতবাসী, ব্রাহ্মন ভারতবাসী, চণ্ডাল ভারতবাসী আমার ভাই।
সদর্পে ডাকিয়া বল, ভারতবাসী আমার ভাই, ভারতবাসী আমার প্রান, ভারতের দেবদেবী আমার ঈশ্বর, ভারতের সমাজ আমার শিশুশয্যা, আমার যৌবনের উপবন, আমার বার্ধক্যের বারানসী।
বল ভাই- ভারতের মৃত্তিকা আমার স্বর্গ। ভারতের কল্যান, আমার কল্যান।

অনেকদিন আগে, এই কথা গুলো বলে, স্বামীজী আমাদেরকে জাগাতে চেয়েছিলেন। আমরা কি জেগেছি? না। না না, আমরা এখনো জাগি নি। কেন জাগি নি? কারন- ভারতীয়রা স্বাধীন হওয়ার পরই, এক বিশেষ পরিবারের অধীনে, দাসত্ব শুরু করলো। ভারত তখন এক দেশ রইলো না, ভারত হয়ে গেলো- এক পরিবারের জমিদারি। ভারতবাসী আর স্বাধীন চেতনার মানুষ রইলো না; তারা হয়ে গেলো- এক বিশেষ পরিবারের ভৃত্য। ভারতবর্ষের তাবড় তাবড় হীন চরিত্রের নেতারা, দীর্ঘ ষাট বছর ধরে সেই বিশেষ পরিবারের পা চাঁটছে।

এই সেই পরিবার- যার জন্মদাতার চক্রান্তে- সুভাষ বসু হয়ে যায় এক নিছক উগ্রপন্থী। ভগৎ সিং, ক্ষুদিরাম বসু, মাতঙ্গিনী হাজরা হয়ে যায়- ইতিহাসের ছেঁড়া ছেঁড়া পাতা! পৃথিবী ভুলতে পারে সুভাষ বসুকে, ভারত ভুলতে পারে ক্ষুদিরাম বসুকে। কিন্তু বাঙালী হয়ে, কিভাবে ভুলি আমরা- আমাদের দেবতা সুভাষ বসুকে, কিভাবে ভুলতে পারি আমাদের প্রেরণা ক্ষুদিরাম বসুকে? লজ্জা হয় গো, লজ্জা হয়! সুভাষ বসুর অপমানে, বাঙালী হিসেবে লজ্জায়, আমার মরতে ইচ্ছে করে!

নিজের মা-কে ভালোবাসা কি পাপ? নিজের ভাইকে ভালোবাসা কি পাপ? নিজের মাতৃভূমিকে ভালোবাসা কি পাপ? ছদ্ম ধর্ম নিরপেক্ষ নেতা আর বুদ্ধিজিবীরা- যুগযুগ ধরে, সেই প্রচার-ই করছে। তারা আমাদেরকে শিখিয়েছে- নিজের দেশকে ভালোবাসা অন্যায়। নিজের মা-কে ভালোবাসা অন্যায়। নিজের ভাইকে ভালোবাসা অন্যায়। শোনো হে মানুষ, শোনো- এই সেই বামপন্থী বুদ্ধিমত্তা! যা মানুষকে শেখায়- নিজের মা-কে ভালোবাসা পাপ!

তুমি যদি তোমার মা আর ভাইকে ভালো না বাসো, তোমার পরিবারের শ্রীবৃদ্ধি কি ভাবে হবে? তুমি যদি তোমার দেশকে ভালো না বাসো, তাহলে তোমার দেশের শ্রীবৃদ্ধি কি ভাবে হবে? চোখ মেলে দেখো হে বন্ধু, চোখ মেলে দেখো- পৃথিবীর মধ্যে যেসব দেশ- সভ্য আর সুসংহত- তাদের প্রত্যেকেই নিজের দেশকে ভালোবাসে। পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র দেশ ভারতবর্ষ- যেখানে ভারতকে ভালোবাসার অর্থ হয়ে যায়- সাম্প্রদায়িকতা! দ্বিধা হও হে ধরিত্রী, দ্বিধা হও!

এই সেই কমিনউনিস্ট নেতৃবৃন্দ- যারা জনসমক্ষে আমেরিকাকে ঘৃণা করে, আর তাদের পরিবারের মেয়েরাই- আমেরিকান ছেলেকে বিয়ে করে, আমেরিকান হয়ে যায়; আর তাদের গরবিনী গিন্নীরা, বুক ফুলিয়ে রাস্তায় রাস্তায় তা বলে বেড়ায়। এই সেই কমিউনিস্ট নেতৃবৃন্দ- চীন-দেশে বৃষ্টি হলে যারা ছাতা মাথায় দেয়, আর কার্গিলে যুদ্ধে আমাদের বীর সৈনিকদের মৃত্যু হলে, তারা আরাম কেদারায় বসে, স্বপ্নের- বিপ্লবের কবিতা লেখে। এই সেই বুদ্ধিজীবীর দল- যারা ফিদেল কাস্ত্রোকে নিয়ে রঙ মেখে সঙ সেজে, টিভিতে বিপ্লবের জয়গান করে, আর সুভাষ বসু বা বিবেকানন্দের অখণ্ড ভারতের স্বপ্ন ভুলে যায়। এই সেই ভন্ড মানবতাবাদীরা দল, যারা- বোম্বে বিস্ফোরণে, শিশু নারীর মৃত্যু হলে মুখে কুলুপ এঁটে থাকে- আর কোন জাতীয়তাবাদী দল রাজ্যে ক্ষমতা দখল করলে, এরা পবিত্র ত্রিশূলে কন্ডোম চড়ায়!

কতদিন, আর কতদিন তোমাদের এই ভণ্ডামি চলবে- হে মুখোশ-পরা স্বার্থপর, হীন, দুর্বৃত্তের দল? কতদিন আর তোমাদের ছদ্ম দেবত্ব লাভের জন্য, সহস্র সহস্র নিরীহ নারী আর শিশু- উগ্রপন্থীদের হাতে প্রাণ দেবে? কতদিন আর তোমাদের ছদ্ম ধর্ম নিরপেক্ষ কবিতা লেখার জন্য- বীর ভারতীয় সৈনিকরা শত্রুদের বোমাতে ঝলসে ঝলসে পুড়ে মরবে?

জাগো বাঙালী, জাগো। জাগো ভারতবাসী, জাগো। জাগো- এইসব তস্কর, লম্পটদের হাত থেকে ভারতমাতাকে রক্ষা করতে। জাগো- এই সব ঘোমটা ঢাকা, স্বার্থপর উগ্রবাদীদের হাত থেকে ভারতভূমিকে রক্ষা করতে।

হে ভাই, তোমরা আমাদেরকে প্রতিবাদের স্পর্ধা দাও, আমরা তোমাদেরকে অখণ্ড মাতৃভূমি দেবো। তোমরা আমাদেরকে তোমাদের আর্তনাদ দাও, আমরা তোমাদেরকে শস্য শ্যামলা বাংলা দেবো। তোমরা আমাদেরকে হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন দাও, আমরা তোমাদেরকে উগ্রবাদী-মুক্ত ভারতভূমি দেবো।

হে ভাই- তোমরা ভারতীয়, তোমরা অমৃতের সন্তান। তোমার বীর পুরুষ, তোমরা নেতাজির সন্তান। তোমরা সত্য দ্রষ্টা, তোমরা বিবেকানন্দের সন্তান। তোমরা ইঁদুর বাচ্চা নও, তোমরা সিংহশাবক। জাগো হে বীর, জাগো। কতদিন আর ছদ্ম ধর্ম নিরপেক্ষতার আফিমে, বুঁদ হয়ে ঘুমোবে তোমরা? কতদিন আর ছদ্ম মানবপ্রেমী, ছাড়পোকাদের- লোভের পদপৃষ্ঠে দলিত আর মর্দিত হবে তোমরা? কতদিন আর তোমরা দেখবে- বোম্বে বিস্ফোরণে তোমার ভাইদের পুড়ে ছাড়খার হওয়া, ঝলসানো দেহ? কতদিন আর তোমরা দেখবে- তাজ হোটেলে তোমার বোনেদের ছিন্ন ভিন্ন রক্তাক্ত দেহ? পায়ে পড়ি, হে বীর সন্তান- তোমার এখনই জাগো।

হে মানুষ,
মরবে, সবাই তো মরবে একদিন।
গ্রহ-উপগ্রহ মিলিয়ে যাবে, মায়াবী কোন আঁধারে
নক্ষত্র ফেটে চৌচির হবে, সময়ের বিষ আঁচড়ে।
মরবে, সবাই তো মরবে একদিন
তবে মিছিমিছি, স্বপ্নহীন হয়ে কেন মরা?
তবে ক্রন্দনহীন, আর্তনাদহীন, কেন সুখী ভদ্রলোক হয়ে মরা?

মরবে, তুমি মরবেই যদি,
তবে মিছিমিছি কেন মরা?
কেন ভন্ড ইঁদুর ছুঁচো টিকটিকি হয়ে মরা?
কেন হুঁকো টানতে টানতে, মিথ্যে ধর্মনিরপেক্ষতার বুলি আওড়ে মরা?
কেন যতসব কেন্নো কেঁচো ছাড়পোকার পা চেঁটে মরা?

হে বঙ্গমাতা, হে বাঙালী-
তোমরা আমাদেরকে কিছু উলঙ্গ শিশু দাও
যে ন্যাংটো রাজাকে বলবে- রাজা রাজা, তোমার নংকু দেখা যাচ্ছে!

তোমরা আমাদেরকে কিছু দুষ্টু শিশু দাও
যে ভন্ড ধর্মনিরপেক্ষদের, ঢাকা ঘোমটা খুলে দিয়ে,
হি হি করে দুষ্টু হাসি হেসে বলবে- তোরা ভন্ড, তোরা ইতর, তোরা নেমকহারাম!

তোমরা আমাদেরকে কিছু সিংহ শিশু দাও
যে গাইবে-
'মরবে, সবাই তো মরবে একদিন
তবে মিছিমিছি, স্বপ্নহীন হয়ে কেন মরা?
তবে ক্রন্দনহীন, আর্তনাদহীন, কেন সুখী ভদ্রলোক হয়ে মরা? '

অরুণ মাজী

যে জাতির জাত্যভিমান নেই  সেই জাতি নপুংসক'  (দ্বিতীয় খন্ড)
Friday, April 7, 2017
Topic(s) of this poem: bangla
COMMENTS OF THE POEM
READ THIS POEM IN OTHER LANGUAGES
Close
Error Success