(মায়ের ভালোবাসার টানে ছেলে স্বর্গ থেকে মায়ের সাথে দেখা করতে এসেছে।
পড়ুন সেই কথোপকথন।)
- - - - - - -
'মাগো, তুমি কাঁদছো কেনো মা'?
খোকা! চকিতে ফিরে আমি দেখি,
হাতের কাজ- সবই ফেলে রাখি।
তুই চলে গেলি, আমি কাঁদবো না!
বড় যে কষ্ট এ হৃদয়ে, সোনা।
বড় হাহাকার এ আহত পরাণে-
তাই তো এতো শূন্যতা; আমার এ গহনে।
তুই চলে গেলি- আমি কাঁদবো না?
'মাগো, আমারও বড় কষ্ট যে মনে;
ভগবান দাদা- তার দয়ার হাত ধরি
নিয়ে গেলেন আমায়- তার স্বর্গপুরী।
তবুও মা- তুমি ছাড়া বড় কষ্ট এ প্রাণে।'
'স্বর্গপুরী অনবদ্য; অনবদ্য- সে ধাম
ভগবান দাদার- নিগুঢ় ভালোবাসা
হাসি ঠাট্টা আর- যতো তামাশা;
তবুও মা- তুমি ছাড়া কাঁদেএ প্রাণ।'
'তুমি ছাড়া মা-গো, স্বর্গও যে যন্ত্রণা।
তাই- ভগবান দাদারে মিনতি করে
তার হাতে-পায়ে- বহু করে ধরে
এলাম আমি- দেখতে তোমায় মা।'
ওরে পুত্র আমার- হৃদের হৃদয় আমার
তুই বিনা- এ মুমূর্ষু ক্ষুদ্র জীবন-
নরকের যন্ত্রণা- ভীষণ যেমন।
ধন্য আমি; বড় করুণা যে ''তার''!
তুই ছোট্ট কুঁড়ি- নিষ্পাপ এক চন্দ্রসম।
উন্মাদ মানুষের- বন্দুকের গুলি
উড়িয়ে দিল- তোর মাথার খুলি।
সেই থেকে জীবন আমার- শত মৃত্যু সম।
করুণার সে ভগবানে- প্রাণ আমার।
তবুও আমায় কেন, এতো বড় আঘাত?
এ যে বিনা মেঘে- ভীষণ বজ্রপাত;
তবুও ভগবানে-ই, প্রাণ ধায় আমার।
তবুও অভিমানী আমি, হে করুনাময়-
কেড়ে নিলে তুমি আমার হৃদের হৃদয়
কেড়ে নিলে তুমি; আমার সকল সঞ্চয়।
অভিমানী; তবুও পুজি- তোমায় দয়াময়।
'মা-গো, কেঁদোনা না তুমি; কেঁদোনা।
ভগবান দাদা- বলেছে আমায় চুপি চুপি করে
তুমি মহিয়সী; স্বর্গে যাবে এ ধরণী ছেড়ে।
আমি যে মরি মা, তুমি আর কেঁদো না।'
'আজ তবে যাই মা, বড় দেরি হয়।
ভগবান দাদা অপেক্ষায়, বড় চিন্তায় নিশ্চয়।
তোমার-ই মতো হৃদয় তার; জেনো- নিশ্চয়।
আজ যাই মা, আজ যে বড় দেরি হয়।'
'মাগো অনুমতি দাও, এখন তবে যাই।'
দেবো না; দেবো না অনুমতি। পুত্র ওরে-
কেমনে যাবি তুই, এই হতভাগিনীরে ছেড়ে?
চলে যাবি? যা। যা তবে। আমার দুঃখ নাই।
চলে গেলি বাছা আমার; আমার পরাণ কাঁদায়ে।
কাঁদবো না, আমি কাঁদবো না, আমি করুনা মাগি
প্রভুর সৃষ্টি যে তুই; তুই শুধু প্রভুর-ই লাগি।
তবুও তুই- যাস না বাছা আমার পরাণ কাঁদায়ে।
© অরুণ মাজী
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem