(এটা এক বিশাল বিশাল দৈর্ঘ্যের কবিতা। শুধু এই কবিতাটাই বই আকারে পরে প্রকাশ করবো। কবিতাটার প্রথমের ক্ষুদ্র একটু অংশ এখানে দিলাম। এই কবিতার মধ্যে যেমন মানুষের জীবনের দর্শন থাকবে, তেমনি অনেক রগরগে জৈবিক ব্যাপারও থাকবে।)
- - - - - - - - - - - - -
তখনও তোমাকে দেখি নি।
হৃৎপিণ্ড বলে কিছু যে একটা আছে;
সেটাও যে মাঝে মাঝে- ধকপক করে
চিনচিন করে, হৈ হুল্লোড় আর চড়ুইভাতি করে
সে সব তখনও আমি জানি নি।
ভাবো তো- কি অর্বাচীন
আর বোকা ছিলাম আমি!
চাঁদ তো তখনও ছিলো,
কিন্তু তারও যে মায়াবী হাসি আছে
তা তো আগে বুঝি নি।
নদী তো তখনও ছিলো
কিন্তু নদীর নৃত্য যে, নারী নিতম্বের উচ্ছ্বাস
তা তো আগে বুঝি নি!
রাত তো তখনও ছিলো
কিন্তু রাত যে, উপোষী নারীর শান্ত অবয়ব
তা তো আগে বুঝি নি!
তখন সবই ছিলো
কিন্তু কেমন জানি, কিছুই ছিলো না।
আকাশে রামধনু ছিলো না
বাতাসে সুগন্ধ ছিলো না
উচ্ছ্বাসে, হৃদয়ের সংগীত ছিলো না।
অথচ এরা সেই একই আকাশ, একই বাতাস
একই পৃথিবী, একই নদী।
যখন তুমি ছিলে না
তখন কিছুতে, কিছুই ছিলো না।
জীবনে যৌবন ছিলো না
বাগানে ফুল ছিলো না
শিশিরে সৌন্দর্য্য ছিলো না
নিদ্রাতে স্বপ্ন ছিলো না।
অথচ দেখো- সেই আমি, একই আমি।
সেই একই নাক, একই চোখ
সেই একই হৃৎপিণ্ড।
অথচ তোমার আগে
আমার জীবনে, এদের অস্তিত্ব
কেমন যেন থেকেও থাকে নি।
এখন বুঝি-
পৃথিবীতে শুধু পৃথিবী থাকলে হবে না
তার সাথে একটা তুমি থাকতে হবে।
স্বপ্নে শুধু স্বপ্ন থাকলে হবে না
তার সাথে তোমার একটা হাসি থাকতে হবে।
নদীতে নদী থাকলে হবে না
তার সাথে তোমার নিতম্বের গীত থাকতে হবে।
আমাতে শুধু আমি থাকলে হবে না
আমার মধ্যে একটা তুমি থাকতে হবে।
মোদ্দা কথা হলো, সবকিছু থাকলেও
তবুও কিছুরই অস্তিত্ব থাকবে না;
যতক্ষণ না তার সাথে, 'তোমার' একটা কিছু থাকে।
এমন কেন হয় মালবিকা, এমন কেন হয়?
কেন তুমি বিনা, চাঁদ একটা নিছকই উপগ্রহ হয়
নদী একটা অনভিপ্রেত জলরাশি হয়
জীবন একটা যন্ত্রণাময় রাজপথ হয়
যৌবন একটা নিষ্ঠুর নির্মম আগ্নেয়গিরি হয়?
মানুষ কেবল দিশাহীন স্বপ্ন দেখে!
হীরকের জ্যোতিতে, সে জীবনের দ্যুতি খুঁজে মরে।
সে জানে না- জীবনের জ্যোতি আর দ্যুতি
সবই কোন গুন্ঠনবতী নারীর হাসির মধ্যে লুক্কায়িত!
মানুষ বেল আর চাঁপার মধ্যে সুগন্ধ খুঁজে মরে।
সে জানে না- আসল সুগন্ধ তো, উচ্ছ্বাসী হাসির,
সিক্ত বসনা নারীর, ভেজা ভেজা, নরম নরম বুকে!
মানুষ জীবনে বৃথাই খ্যাতি আর সুখ খুঁজে মরে
সে জানে না- আসল খ্যাতি আর প্রতিপত্তি তো,
কোন নারীর নরম নরম বুকে, শয়নের অধিকারে!
মানুষ এভারেস্ট শৃঙ্গ বিজয়ে বৃথাই আস্ফালন করে
সে জানে না- পাহাড়ে চড়ার আসল আনন্দ তো,
কোন যুবতী নারীর হলদে হলদে নরম পাহাড়ে!
রমণী আঁচলের সুবাস যারা শুঁকে নি
তারাই কেবল আতরের জয়ধ্বনি করে!
রমণী বাহুর আবেশে আবিষ্ট যারা হয় নি
তারাই কেবল ভেলভেট বিছানার জয়ধ্বনি করে!
রমণীর নাভিতে যারা কাটাকুটি খেলে নি
তারাই কেবল মোটর রেস্ বা ক্রিকেট খেলে
জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করে!
কত মূর্খ ছিলাম গো, কত মূর্খ ছিলাম আমি!
স্কুলের রাস্তায় কত যে দেখেছি তোমাকে
তবুও তোমাকে দেখি নি!
তারপর সেই বিশেষ দিনটা!
সেদিন ভীষণই ঝড় আর ঝঞ্ঝা!
আমাকে তুমি, তোমার ছাতার তলায় ডেকে নিলে!
ছাতাটা ভালো করে ধরতে গিয়ে........
মরিমরি একি! এ যে ফুল! এ যে সুগন্ধ!
এ যে মোক্ষ! এ যে উত্তরণ!
হে ভগবান! এতো নিষ্ঠুর কেন তুমি!
কেন তোমাকে আগে ছুঁয়ে দিই নি?
কেন তোমাকে আগে, অনেক আগে
তোমার জন্মেরও আগে, ছুঁয়ে দিই নি?
তোমাকে ছুঁয়ে দিলেই যদি
আমার সুখ, আমার সৌন্দর্য্য, আমার মোক্ষ
তবে তোমাকে কেন আগে ছুঁয়ে দিই নি?
বাকিটা কাব্যগ্রন্থে প্রকাশ পাবে।
© অরুণ মাজী
Painting: Amit Bhar
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem