ঈশ্বরের উপর তুমি যা ছেড়ে দেবে, ঈশ্বর তাই করবেন। তবে তোমার দেখানো পথে নয়। ঈশ্বর সে কাজ- ঈশ্বরের পথে করবেন। সে পথ তোমার দুর্বোধ্য বা অবোধ্য হতেই পারে! তুমি যদি সেজন্য- ঈশ্বরকে দিন রাত দোষারোপ করো বা গালি দাও, তাতে ঈশ্বরের কাঁচকলা!
আমাদের সমস্যা আমাদের তৈরী। তা ঈশ্বরের অকর্মণ্যতার ফল নয়। ঈশ্বর আমাদেরকে নদী দিয়েছেন, পাহাড় দিয়েছেন, সাগর দিয়েছেন, অক্সিজেন দিয়েছেন। ঈশ্বর আমাদেরকে ফুল দিয়েছেন গন্ধ দেওয়ার জন্য, নারী দিয়েছেন পৃথিবীকে আকর্ষণীয় করার জন্য, বন্ধু দিয়েছেন আমাদেরকে সাহচর্য্য দেওয়ার জন্য। আমাদের শান্তিময় অস্তিত্বের জন্য, ঈশ্বর আমাদেরকে সব কিছুই দিয়েছেন।
কিন্তু তবুও আমরা শান্তিতে আছি কি? আমরা একে অপরকে, দিনরাত কাঠি করছি। ঈশ্বরকে, আড়াআড়ি আর লম্বালম্বি ভাগ করে- ঝগড়া করছি, কোন ঈশ্বরটা ভালো? ইত্যাদি! আমরা জানি না- আমরা যাকে নিয়ে ঝগড়া করছি, তা খন্ড ঈশ্বর মাত্র।
তোমরা বলো- ঈশ্বর সবকিছুর মালিক। আবার তার সঙ্গে বলছো- ঈশ্বর কিন্তু হিন্দু বা মুসলমানদের মালিক নয়! তাহলে তোমাদের কথা তোমরা নিজেরাই ফেলছো, তাই না? ঈশ্বর যদি ঈশ্বর হন- তিনি হিন্দু, মুসলমান, খৃষ্টান- নাস্তিক সবারই মালিক।
কাজেই হিন্দু বা মুসলমান হিসেবে, তোমরা যে ঈশ্বরের পূজা করছো তা ঈশ্বরের খন্ড মাত্র। তা পূর্ণ ঈশ্বর নয়।
রাজনীতির ব্যবসায়ীরা- জড় পদার্থ নিয়েই কেবল ব্যবসা করছে না! তারা মানুষের রক্ত নিয়েও ব্যবসা করছে। এখন তারা ঈশ্বর নিয়েও ব্যবসা করছে। একদল ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে সুড়সুড়ি দিচ্ছে; আর এক দল ধার্মিকতার নামে সুড়সুড়ি দিচ্ছে। খেলাটা তো সেই একই। ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের সংহতি আর শান্তিকে ভেঙে দাও। কিছু বুদ্ধু মানুষ- নিজেদেরকে সেকুলার বলে চীৎকার করছে! আর কিছু বুদ্ধু মানুষ নিজেদেরকে ধার্মিক বলে চীৎকার করছে। তোমরাই বলো- কে বেশী বুদ্ধু?
এটা এদের বুদ্ধুগিরি অথবা জেনে বুঝে শয়তানি? নেহেরু, প্রকাশ কারাত, মমতা ব্যানার্জী আর যোগী আদিত্যনাথ- এরা সবাই একই পাপে পাপী! একদল ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে মানুষের সংহতিকে ভেঙেছে, আরেক দল ধার্মিকতার নামে মানুষের সংহতিকে ভাঙছে। তোমাদের কার হিম্মৎ আছে, আমার এই দাবীকে তোমরা যুক্তি আর তথ্য দিয়ে খণ্ডন করো!
ঠিক এই মুহূর্তে, অর্দ্ধেক পৃথিবীতে আগুন জ্বলছে! ধর্মের নামে নরসংহার চলছে। কারা করছে- এসব? সাধারণ মানুষ কি সত্যিই নির্দোষ? অথবা সাধারণ মানুষের পরোক্ষ সমর্থন রয়েছে, এই নরসংহারে?
© অরুণ মাজী
Painting: William-Adolphe Bouguereau
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem