এখন আমি বেশ বড়।
জন্ম থেকে জানি, জন্ম মোর কোনো এক রাস্তায়,
হয়তো বা কোনো এক অন্ধকার ঘরের কোনে,
হয়তো বা কোনো বড়লোক বাড়ির কালো চিলেকোঠায়।
হয়তো কেউ আমার ফেলেছিল ওই আস্তাকুড়ে,
নাম না জানা কোনো এক নারীই আমার মা।
আচ্ছা, নরক যন্ত্রনা পেতেই কি জন্ম নিয়েছি আমি?
এখন আমি আট।
করি কাজ চায়ের দোকানে,
দেয় টাকা দশ, সঙ্গে রুটি আর ঘুগনি,
তারি সাথে লেগে থাকে অকারণ বকুনি!
তবু কাজ করি, আমি থাকি আনন্দে,
দশটা থেকে দশটা কি? -নেই যে ঘড়ি।
এখন আমি ষোলো, জ্ঞান হয়েছে বেশ ভালো
চায়ের দোকান ছেড়ে হলাম চটকল শ্রমিক কালো।
এখন আছে আমার নিজ বাসা, আয় করি বেশ খাসা।
আছে আমার সেভিংস আকাউন্ট, বাড়ছে টাকার অ্যামাউন্ট।
আমি এখন সবার নেতা যখন আমি সাতাশ বসন্তের মালিক,
পড়েছি প্রেমে এক কলকন্যার নাম তার মিষ্টি ঝিলিক।
শ্রমিকেরা সব সেলাম করে, বলে আমায় দাদা
ঝিলিকের ঝলকানিতে আমার জামায় লেগেছে কাদা।
করলাম বিয়ে যেকোন আমি ট্রেড ইউনিয়ন এর সভাপতি,
পাইনি পণ ওই অনাথের ঠিকানাহীন ঘর থেকে।
পয়সা এখন জমছে ভালোই বিদ্যুতের বেগে,
করেছি বাড়ি ওই দূরে মস্ত ম্যালকাতাতে!
নাম লিখিয়েছি ওই নামকরা রাজনৈতিক দলে।
ভোট আসছে, ভোট আসছে, বিধানসভার ভোট!
হয়েছি ম্যালকাতার প্রার্থী, জিতে বিধায়ক।
এখন আমার ক্ষমতা প্রচুর, সবাই বলে 'স্যার'!
মনে লাগে ভয় যেকোন একলা ভাবি একান্তে,
'স্যার'-এর বানান বোধ হয় 'এস-আই-আর'!
লেখাপড়া? সহজপাঠ? ক দশ কয়?
দুঃছাই জানিনে! সুযোগ পাইনি তো জীবনে।
যাইহোক সই করি কোনো রকমে;
শিক্ষিত, পাশ ছাত্ররা এখন আমার কাছে
'স্যার' বলে আসে ইনকাম সার্টিফিকেট নিতে!
আক্ষেপ আমার রয়েই গেল,
পারলাম না হতে মন্ত্রিসভার সদস্য।
যাইহোক, আমি পাই শান্তি ভেবে,
চায়ের দোকানের বোকা ভোলা
ও চটকলের ঝিলিকের কালো
হয়েছে যে বড় ম্যালকাতার আলো।
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem