আমাদের ছেলেবেলায়চিলেকোঠা ছিল
সে সময়ে একটি দোতলা বাড়ি থাকলেই
সে বাড়িতে একটি চিলেকোঠা থাকত।
আমরা যে পাড়ায় থাকতাম
সেখানে একটি মাত্রই দোতলা বাড়ি ছিল
আর সে বাড়ির একটি চিলে কোঠাও ছিল।
বাড়ির বয়স্ক সদস্যরা অবশ্য সচরাচর চিলেকোঠায় উঠতে পছন্দ করতো না।
কিন্তু আমরা যারা কিশোর কিশোরীরা ছিলাম
তাদের কাছেচিলেকোঠাটির আকর্ষণ খুব বেশি ছিল।
আমরা ক'জন ওখানে যেন নিজস্ব দুনিয়া পেতাম সেকালে।
বাড়ির মালিক মাসিমার বিশেষ কোনো আপত্তি ছিল না।
চাইলেই চাবিটা দিয়ে দিত।
চিলেকোঠায় আমরা সিগারেটের প্যাকেট দিয়ে তাস, লুডো, ক্যারম খেলতাম
খুব মজা লাগত শীতের দুপুরে', বর্ষার অবিরত ধারার দুপুরে
সবথেকে যেটা মজার ব্যাপার
সেটা হ'ল টিপ টিপ বর্ষার অন্ধকার রাতে
একটি টেমি জ্বালিয়ে বন্ধুরা মিলে প্ল্যান্টচেটের আসর বসাতাম
তখনও বিদ্যুতের আলো ছিল ও তল্লাটে।
পরীক্ষার সময় পড়তে যেতাম বই পত্র নিয়ে।
নিজের অজান্তে কখন যেন আমরা বড় হয় গেলাম
কেউ চাকরি পেল কেউ চেষ্টা করতে লাগল
পাড়াতে কয়েকটি পাকাবাড়িও হল, বিদ্যুতের আলো এল,
আমরা বড় হলাম।
আর পা রাখা হয়নি ঐ চিলেকোঠায়
নিজেদের জীবনযুদ্ধে ব্যস্ত যখন আমরা সবাই
একদিন শুনলাম বাড়িটি প্রোমোটারকে দেওয়া হয়েছে
বহুতল বাড়ি হবে ওখানে।
যে বহুতলে চিলেকোঠার অস্তিত্বও থাকবে না -আর।
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem