প্রণাম কবিগুরু। শত প্রণাম আপনাকে।
প্রণাম, বাংলা সাহিত্যের সমস্ত লেখককেও।
প্রণাম, বাংলা সাহিত্যের সমস্ত অনুরাগীকেও।
কবি গুরু যদি বেঁচে থাকতেন, উনি হয়তো আমাদেরকে বলতেন-
ওরে উন্মাদ অরুণ মাজী, আমার ছবি বুকে সেঁটে, আমার কবিতা আওড়ালেই হবে?
সাহিত্য আর সংস্কৃতির মাধ্যমে, আমি যে মানবিকতা জাগাতে চেয়েছিলাম, তা তোদের মধ্যে কোথায়?
সাহিত্য আর সংস্কৃতির মাধ্যমে, আমি যে মানুষে মানুষে বন্ধন গড়তে চেয়েছিলাম, তা এখন কোথায়?
সাহিত্য আর সংস্কৃতির মাধ্যমে, আমি যে মানুষের চেতনার উন্মেষ ঘটাতে চেয়েছিলাম, তা এখন কোথায়?
আর উন্মাদ অরুণ মাজী তার উত্তরে কি বলতো? কিচ্ছু না। কিচ্ছু না।
কবিগুরুর চোখটা তখন জলে ভেসে যেত। জলভরা চোখে উনি মহাশূন্যের দিকে তাকাতেন। হয়তো বা আমাদের জন্য উনি, প্রার্থনাও করতেন।
মৃতের কান্না চোখে দেখা যায় না ঠিকই। কিন্তু অনুভব করা যায়।আমি তাই কবিগুরুর কান্না শুনি, সুভাষ বসুর কান্না শুনি, স্বামীজীর কান্না, শুনি, বিদ্যাসাগরের কান্না শুনি, মাতঙ্গিনী হাজরা আর ক্ষুদিরাম বসুর কান্না শুনি।
এদের প্রত্যেকের পথ হয়তো আলাদা, বিশ্বাসও হয়তো আলাদা। কিন্তু গন্তব্য এদের একই। কি সেই গন্তব্য?
নিজের বাইরে গিয়ে, অন্যের জন্য কিছু করা। অন্যের জন্য একটু আত্মত্যাগ।
আজ আমরা দেবী পূজা করি, অথচ নারীকে ধর্ষণ করি। স্বামীজীর ছবি বুকে সাঁটি, অথচ জাত পাত নিয়ে হানাহানি করি। নেতাজীর ছবি বুকে সাঁটি, অথচ চুরি করে দেশকে সর্ব্বশান্ত করি। কবি প্রণাম করি, অথচ মনকে কুসংস্কারে আচ্ছন্ন রাখি।
এ আমাদের কবি প্রণাম? অথবা কবিকে অপমান?
© অরুণ মাজী
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem