ভূবন বদলের স্বপ্ন
মাধবী বন্দ্যোপাধ্যায়
ছেলেবেলায় জ্ঞান হতে মেয়েটি শুনে এসেছে
দেশটা নাকি স্বাধীন হয়েছে-আর কোনো চিন্তা নেই
বড়দের কি যে চিন্তা ছিল, আর এখন কি যে চিন্তা নেই
ও বুঝতে পারেনা।
পনের ষোল ঘরের একটি পাড়া ।এ পাড়াটাই মেয়েটির ভূবন
স্বাধীনতার পরে দেশভাগের পর এ পাড়ার সৃষ্টি, সৃষ্টি ওর ছোট্ট ভূবনের
দেশভাগের ফলে সকলে কুড়ে ঘরেই বাস করে
সদ্য দেশভাগের ফলে সবাই শরনার্থী
কেউ পাকা বাড়ি করতে পারেনি
তাতে মেয়েটির আনন্দের ঘাটতি কোনোদিন পড়েনি।
কিন্তু মাঝে মাঝে মেয়েটি বিমর্ষ হয়।
যখন খেতে বসে থালা ভর্তি ভাত ওর পাতে
কিন্ত প্রতিবেশীর রান্নাঘরে তখন ও কোরাস শুনতে পায়
‘মা আর দু'টি ভাত দেবে'।
ওর তখন ইচ্ছে করে ওর পাতের ভাতগুলো ওদের দিয়ে আসে।
স্বাধীনতার মানে জানে ও, স্বাধীনতা দিবস পালন করে ও
ভেবে কুল পায় না স্বাধীনতা আসলে কি?
একজনের ভরা পেট আর একজনের ভাতের চাহিদা?
বাবাকে প্রশ্ন করে ও।
এরই মাঝে ধাপে ধাপে বড় হচ্ছে মেয়েটি
এখন বুঝতে পারে ও পাড়াময় এক দারিদ্রতা বিরাজ করছে
শুধু এ পাড়া নয় সর্বত্র বিরাজিত এক দারিদ্রতা
চারিদিকে শুধু নেই নেই নেই
প্রয়োজন মত অন্ন নেই ব্স্ত্র নেই
বাসস্থান নেই চিকিৎসা নেই শিক্ষা নেই চাকরি নেই
আছে শুধু বেকারত্ব!
ও এখন বুঝতে পারে অবাক হয় ভাবে এর ই নাম কি স্বাধীনতা!
ও বুঝতে পারে এ অভাব মানুষের সৃষ্ট অভাব
তখন থেকে এ সমাজটাকে বদলে দেবার স্বপ্ন দেখে
প্রতিটি মানুষকে হতে হবে শিক্ষিত হতে হবে স্বাবলম্বি
না হলে প্রকৃত স্বাধীনতার ফল পাওয়া যাবে না।
শুরু হ'ল তার জেহাদ-বাবার প্রতি ঘোষনা চাকরির আগে বিয়ে নয়।
সরকার শুধু গদি জেতার জন্য নয়
ভাবতে হবে জনগনের কথা
জীবনের এ পর্য্যায় পৌঁছে
এত খুন রাহাজানি ধর্ষণ অবহেলার মাঝেও
ওর মনে আছে এক প্রত্যয়
একদিন এক নূতন সূর্য উঠবে
ভূবনটা বদলে যাবে একদিন।
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem