আজন্ম পিতা মাতা পরিত্যক্ত
আমৃত্যু পতিতালয়ে নির্বাসিত
শ্রীহীন "শ্রীমতী একাকীত্বের" সাথে
গাঢ় ঘন প্রেম আমার।
দিনরাত আমাদের-
থেকে থেকে ফষ্টিনষ্টি
কথা কাব্য- দুষ্টু মিষ্টি।
ছোঁয়াছুঁয়ি হাতাহাতি
কানাকানি মাখামাখি
চুলোচুলি দলাদলি।
এতো ভেজা ভেজা মাখা মাখা
প্রেম আমাদের;
অথচ আমাদের এই প্রেম
"প্রথম দর্শণেই প্রেম"
এ জাতীয় তেমন কিছু নয়।
সত্যি কথা বলতে কি
প্রথম যখন দেখি শ্ৰীমতীকে
বড় কান্না এসেছিলো বুকে!
শীর্ণ দীর্ণ বুভুক্ষু মুমূর্ষু
শতচ্ছিন্ন অর্ধবসনা এ হেন নারীকে
শ্রদ্ধা করা গেলেও
কখনো ভালোবাসা যায় না!
অবশ্য উপায়ও আমার ছিলো না।
ফাউ পাওয়া জীবনে,
চামচিকে কি আর ভেলভেটের পর্দা
আর সিল্কের মশারি চাইতে পারে?
"জীবন" নামের নৃশংস সুদখোর তখন
অসংখ্য গ্রন্থিযুক্ত বংশদন্ড হাতে,
লোলুপদৃষ্টিতে
দিনরাত আমার পশ্চাৎদেশ
পরখ করে চলেছে।
চুন থেকে পান খসলেই
হারামজাদা "জীবন"
তার আসল পরিচয় (মৃত্যু)
আমার বুকে এঁকে দেবে।
অনেকটা
"নেই কাজ তো খই ভাজ"
মানসিকতা নিয়ে
সেদিন শ্রীমতীর বারান্দায়
ঠাঁই নিয়েছিলাম আমি।
আমাদের প্রথম রাতের অভিজ্ঞতাও
বলার মতো কিছু নয়।
"শ্রীমতী একাকীত্ব" একাকী ঘরের মধ্যে।
আর আমি খোলা বারান্দায়
কান্না চোখে
সারারাত আকাশের দিকে চেয়ে।
ক্ষণে ক্ষণে
ভগবানকে অভিশাপ দিয়েছি আমি।
পাড়া প্রতিবেশী বন্ধু বান্ধব
জনম কপাল বংশ ইত্যাদি
সবারই গুষ্ঠীর ষষ্ঠী পূজা করেছি আমি।
অথচ "শ্রীমতী একাকীত্ব"
তখনও ভীষণ নীরব নির্লিপ্ত আর নিঃশব্দ।
বড় রাগ হয়েছিলো আমার!
আমি জ্বলছি জ্বালায়
আর শ্রীমতী ডাকছে নাক!
দুঃখে দুঃখে দিন যায়
রাত যায়।
বছর কেটে নতুন বসন্ত এলে
হটাৎই একদিন
শ্রীমতী
সুন্দর এক গান এঁকে দিলো বুকে।
"তুমি নাগর আস্ত বাঁদর
ফুল চিনতে পারো না।
আলোয় তুমি আলো খুঁজো
আঁধারে তুমি খুঁজো না।
ঘোমটা ঢেকে আছি বলে
হেয় আমায় করো না।
ঘোমটা খুলে দেখলে আমায়
না চুমে তুমি পারবে না। "
অবিশ্বাস্য তার সুর! অনন্ত তার আবেগ!
অন্তহীন তার আকর্ষণ!
সেই মুহূর্তেই
শ্রীমতীর ঘোমটা খুলে দেখি-
আহাঃ মরি মরি
এ কি রূপ শ্রীহরি!
এ যে রম্ভা ঊর্বশী
এলোকেশী বিভাবরী!
সংসার জীবনের
গোপন নিষিদ্ধ কথা বলতে নেই;
নইলে তোমাদেরকে বলতাম
সেদিন রাতে
আমাদের খাটটা ঠিক কতবার
আর্তনাদ করেছিলো!
সেই রাতই একমাত্র রাত নয়।
আমাদের প্রেম বরং
এখন আরও বেশি রসালো
চটচটে আর আঁঠালো।
আকণ্ঠ শ্রীমতীর প্রেমে নিমজ্জিত
আমিও আজকাল থেকে থেকে গাই
"ওগো নারী ওগো সুন্দরী,
কি করি গো কি করি
তোমা বিনা আমি কি করি!
© অরুণ মাজী
Painting: Chen Yan Ning
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem