কার জীবন বাঁচবো মাস্টার
আমি কার জীবন বাঁচবো?
তুমি বলতে
মানুষ হ অমল
নিজের মতো করে মানুষ হ।
নিজের মতো করে
ফুটতে শেখ। হাসতে শেখ।
আমি নিজের মতো করে
দড়ি দেওয়া প্যান্ট পরে স্কুল যেতাম।
ওরা হেসেছিলো
বলেছিলো-
দ্যাখ দ্যাখ অমলটা কেমন ক্যাবলা
দড়ি দেওয়া প্যান্ট পরে স্কুল আসে।
মেডিকেল কলেজে আমি
আমার মতো করে কথা বলতাম।
ওরা টিটকিরি করে বলেছিলো
দ্যাখ দ্যাখ অমলটা কেমন
গাঁইয়া এক ভুত!
কাঁহাতক আর অপমান সহ্য করা যায় মাস্টার
কাঁহাতক আর অপমান সহ্য করা যায়?
আমিও তো রক্ত মাংসের মানুষ!
মালবিকাকে ভালোবেসে
ওর প্রতি আমি অপলকে চেয়ে থাকতাম।
মালবিকা একদিন রাগত স্বরে বলেছিলো
ফুলকে কি কেবল দেখতেই হয়?
তাকে একটু আদর করতে নেই?
তার পাপড়িগুলো তালুতে নিয়ে
তাকে কি একটু মাখতে নেই?
মালবিকার কথার
প্রতিবাদ করেছিলাম আমি।
বলেছিলাম-
সুন্দরকে কেবল
তাড়িয়ে তাড়িয়ে দেখতে হয়।
আর দূর থেকে
তার স্বাদ আর ঘ্রাণ নিতে হয়।
স্পর্শ করলে
ফুলের অপমান হয়। লাঞ্ছনা হয়।
একদিন চূর্ণী নদীর ধারে
সন্ধ্যেবেলায়-
আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে
আমার চুলের মুঠি ধরে
কাঁদতে কাঁদতে মালবিকা বলেছিলো-
কেমন পুরুষ তুমি? কেমন পুরুষ?
আমার বুক ছুঁয়ে
আমার রূপের তারিফ তুমি করো না;
কেমন পুরুষ তুমি?
সকলেই আমাকে
তাদের মতো করে বদলাতে চায় মাস্টার
তাদের মতো করে বদলাতে চায়।
তুমিই বলো-
আমি কার জীবন বাঁচবো?
© অরুণ মাজী
Painting: Henri-Guillaume-Schelesinger
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem