অরুণ মাজী মস্ত বড় এক হিঁজড়া! (Essay On Inquisitive Mind) Poem by Arun Maji

অরুণ মাজী মস্ত বড় এক হিঁজড়া! (Essay On Inquisitive Mind)

আমি উত্তর চাই না। আমি প্রশ্ন চাই। আমি চাই- তোমরা কেবল প্রশ্ন করতে শেখো। সকলকে প্রশ্ন করতে শেখো। বাবা-মা, ধর্মগুরু, মহাপুরুষ, এমনকি স্বয়ং ঈশ্বরকেও তোমরা প্রশ্ন করতে শেখো।

উত্তর ধ্বংসমূলক। কিন্তু প্রশ্ন সৃষ্টিমূলক। উত্তর বুদ্ধির অন্তিমযাত্রা। কিন্তু প্রশ্ন, নতুন সৃষ্টির আনন্দ। উত্তর- মানুষকে বিশেষ কোন বেড়াজালে বেঁধে ফেলে। কিন্তু প্রশ্ন, মানুষকে অসীম আকাশে উড়ার জন্য তাকে পাখা যোগায়।

ব্যাপারটা তোমরা বুঝলে না। তাই না? ধরো আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করলাম- ঈশ্বর আছেন? তুমি বললে- হ্যাঁ, আছেন।

তোমার উত্তরের অর্থ কি? তোমার উত্তরের অর্থ হলো- ঈশ্বরের প্রকৃতি সম্বন্ধে, আরও নতুন কিছু জিনিস তুমি যে খুঁজতে পারতে, সে সব কিছু খুঁজতে, তুমি আর কখনো যাবে না। তোমার উত্তর, তোমার নতুন কিছু খোঁজার- বাধা হয়ে দাঁড়ালো।

তুমি যদি বলতে, "আমি ঈশ্বর খুঁজছি"। তখন তার অর্থ হতো- তুমি এখনো নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কার করে চলেছো। ঈশ্বর খুঁজতে গিয়ে তুমি কি কি অনির্বচ্চনীয় জিনিস আবিস্কার করছো?
১. দিনের পর রাত, রাতের পর দিন। জন্ম শেষে মৃত্যু, তারপর আবার জন্ম। সবই যেন নিখুঁত এক অঙ্কের মতো। অঙ্ক কারা সৃষ্টি করে? যাদের বুদ্ধি আছে, তারা। তাহলে মহাবিশ্বে যে এতো কঠিন কঠিন অঙ্ক, সে সব অঙ্ক কোন বুদ্ধিমান শক্তি সৃষ্টি করেছেন?

২. দুর্ঘটনার কারনে যদি মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়, তাহলে মহাবিশ্বে এতো জটিল জটিল অঙ্কের জন্ম হলো কি করে?

৩. ভাইরাস অতীব ক্ষুদ্র এক জীব! সে কি করে, তার কোটি কোটি কোটি গুন বড়, আস্ত একটা মানুষকে মুহূর্তেই মেরে ফেলে? কি এই ভাইরাস? কোথা থেকে পায় সে তার মারণ ক্ষমতা? ইত্যাদি সব প্রশ্ন।

এইধরণের উল্টাপাল্টা প্রশ্ন, তুমি নিজে নিজেকে করছো, আর সৃষ্টির অপরূপ রূপ- তোমার চোখের সামনে ধীরে ধীরে খুলে যাচ্ছে। মনে মনে তখন তুমি কি ভাবছো? আহাঃ সৃষ্টির কি অপরূপ রূপ আজ দেখলাম!

কিন্তু তুমি যদি নিজেকে আস্তিক বা নাস্তিক ধরে নাও, তাহলে তুমি সৃষ্টির অপরূপ রূপ কখনো আবিষ্কার করতে পারবে না। সেজন্যই, অরুণ মাজী নিজেকে, মস্ত বড় এক "হিঁজড়া" বলে। সে আস্তিকও নয়, আবার নাস্তিকও নয়। সে ঈশ্বরকে পূজাও করে; আবার কখনো কাখনো সে-ঈশ্বরের দাড়িতে, রক্ত চোষা উকুন ছেড়ে দেয়।

তবুও বলছি- ঈশ্বর আমার খুব কাছের মানুষ। আজ আমি যা হয়েছি, সবই তার কল্যাণে। আমি বিশ্বাস করি- ঈশ্বর আমাকে মস্তিস্ক দিয়েছেন, তার কারন- উনি চান, আমি আমার চিন্তা শক্তিকে আকাশ সমান উঁচুতে নিয়ে যাই। ঈশ্বর যদি আমাকে আকাশ সমান উঁচু না- ই দেখতে চাইবেন, তাহলে উনি ঈশ্বর কেন? কোন পিতা যদি তার সন্তানকে আকাশ সমান উঁচু না- ই দেখতে চাইবেন, তাহলে উনি পিতা কেন?

দেখলে? প্রশ্ন নিজেই কেমন ঈশ্বরের এক স্বরূপ। সেজন্যই তোমাদেরকে বলি-
বড় হতে চাও? তাহলে প্রশ্ন করো।
মহান হতে চাও? তাহলে প্রশ্ন করো।
মালবিকাকে ভালোবাসতে চাও? তাহলে প্রশ্ন করো। (কি প্রশ্ন, সেটা তোমরা মাথা চুলকে ভাবো!)
ঈশ্বর লাভ করতে চাও? তাহলে প্রশ্ন করো।

তোমাদেরকে, কানে কানে একটা কথা বলবো? বাঁশ নিয়ে তাড়া করবে না তো? ভয় হয় গো, ভয় হয়। তোমাদের দাদা-দিদিদের আজকাল যা দাপট! কিছু বললেই বলবে- "তোর যুবতী মেয়ের ঘরে ছেলে ঢুকিয়ে দেবো! "

মারবে না যখন বলছো, তো বলেই ফেলি-
"ঈশ্বর খোঁজার জন্য, পাওয়ার জন্য নয়।"

প্রবন্ধঃ © অরুণ মাজী

অরুণ মাজী মস্ত বড় এক হিঁজড়া! (Essay On Inquisitive Mind)
Friday, November 24, 2017
Topic(s) of this poem: bangla,god,inquisitive,mind
COMMENTS OF THE POEM
READ THIS POEM IN OTHER LANGUAGES
Close
Error Success