তোমরা কি নজর করেছো- যেই না তুমি একটা উদ্বেগ থেকে মুক্তি পেলে, তখুনি তোমার মধ্যে- আরও একটা নতুন উদ্বেগ চড়ে বসলো? এই ঘটনার মধ্যে কি কোন শিক্ষা আছে?
দুর্ভাগ্যবশতঃ মানুষের জীবনে, শুধু 'সোনালী রোদ ভরা দিন' বলে কিছু নেই। মানুষের জীবনটা বর্ষা ঋতুর মতো। জীবনের বেশীর ভাগ সময়টাই, মেঘলা আকাশ আর ঘন ঘন বৃষ্টির তান্ডব। তাই- জীবনে সোনালী রোদ্দুর যখন আসবে-
১. তখন তোমার দু হাত তুলে, ধেই ধেই করে নাচা উচিৎ। হিংসা বিদ্বেষ অভিমান বা ঝগড়া করার, বড় একটা সময় নেই।
২. যেহেতু সোনালী রোদের স্থায়িত্ব খুব অল্প, তাই তোমাকে- কাদা জল, আর ঝড় বৃষ্টির মধ্যেও হৈ হুল্লোড় আর আনন্দ করা শিখতে হবে। নইলে জীবনের বেশির ভাগটা তুমি, অন্ধকারে দুঃখের খাঁচার মধ্যে বন্দী কাটাবে।
আমার ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে, আমার এক দাদুর ঊরুতে, আস্ত এক বাঁশ ঢুকে গেছিলো। দাদু দাঁতে দাঁত চেপে আমার এক কাকাকে বলেছিলো- 'তাপস, আমার হুঁকোটা দে! ' কাকা খেঁকিয়ে বলেছিলো- 'কি আশ্চর্য! এখন তোমার হুঁকো টানার সময়? ' দাদু নির্বিকার চিত্তে বলেছিলো- 'যে ঢুকেছে, সে তো ঢুকেছে। তা বলে হুঁকো টানার আনন্দ থেকে, নিজেকে বঞ্চিত করবো কেন? '
জীবনে বাঁচার এই হলো সঠিক মানসিকতা। এই দাদুকে কখনো দুঃখী বা অসুখী আমি দেখিনি। মনে হয়েছিলো- দাদুর প্রত্যেকটা দিনই 'সোনালী রোদ্দুর'! ঊরুতে আস্ত বাঁশ ঢুকলেও, সেই মুহূর্তটা তার কাছে সোনালী রোদ্দুর।
তুমি যদি এই মানসিকতা নিয়ে বাঁচতে না পারো, তাহলে কি হবে? তুমি হয়তো বয়সে বাঁচবে একশো বছর, কিন্তু তোমার জীবনে আনন্দের দিন হবে, মাত্র সাড়ে একুশ দিন। বাকি নিরানব্বই বছর তিনশো সাড়ে তেতাল্লিশ দিন তুমি নরকের যন্ত্রণায় রগড়ে রগড়ে মরবে।
নেচে নে ভাই, নেচে নে
দু হাত তুলে নেচে নে।
কিবা ঝঞ্ঝা, কিবা বৃষ্টি
ধেই ধেই করে নেচে নে।
ঝঞ্ঝা দিনে,
উনুনে খিঁচুড়ি চড়িয়ে দে।
বাদলা দিনে,
কাদাজলে তুই গড়াগড়ি দে।
প্লাবন দিনে,
ভেলায় চড়ে তুই পাড়ি দে।
নেচে নে ভাই, নেচে নে
দু হাত তুলে নেচে নে।
© অরুণ মাজী
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem