তুমি দৌড় অভ্যাস করছো। দৌড়তে দৌড়তে তোমার পেশীর যন্ত্রণা শুরু হলো। তোমার কষ্ট দেখে- দয়ালু একজন মানুষ, তোমার প্রতি সহানুভূতি দেখালো। তার সহানুভূতিতে তোমার চোখ ছল ছল করে উঠলো। তুমি ভাবলে- ব্যাস ঢের হয়েছে আজ। ভাবো- তুমি কি তাহলে তোমার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে?
তোমার কষ্টে, তুমি লোকের কাছ থেকে সহানুভূতি আশা করো। তাতে হয়তো মনটা একটু শান্ত হবে। কিন্তু তাতে কি তোমার সমস্যা মিটে যাবে? না। কক্ষনো না। তোমাকে নিজেকে হাড়ভাঙা খাটুনি খেটেই, তোমার সমস্যার সমাধান করতে হবে। তাহলে লোকের কাছে নিজেকে, অসহায় পরিত্যক্ত, যন্ত্রণাকাতর প্রতিপন্ন করে সহানুভূতি ভিক্ষা করো কেন?
সহানুভূতি ভিক্ষা- তোমার সমস্যা কখনো মেটায় না, বরং তোমাকে তা দুর্বল করে। তোমার যাত্রাপথে তা বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বীর হও। যন্ত্রণাকে হাসি মুখে গ্রহণ করো। যন্ত্রণা সহ্য করার অভ্যাস করো। দেখবে- সমস্ত যন্ত্রণা তখন দুধভাত মনে হবে।
সেনাবাহিনীতে- "স্পেশ্যাল ফোর্স"কে ভয়ঙ্কর যন্ত্রণা পাওয়া শেখানো হয়। পরপর দুদিন হয়তো তাদেরকে একটুও ঘুমুতে দেওয়া হবে না, তারপর পিঠে ৪০ কেজি ওজন নিয়ে, তাদেরকে প্রতিদিন ৪০ কিমি মার্চ করতে হবে, তারপর প্রখর বুদ্ধি লাগবে, এমন সব সমস্যা তাদেরকে সমাধান করতে বলা হবে। তারা যতক্ষণ পর্যন্ত তা না পারছে, তাদেরকে এই ট্রেনিং করে যেতে হবে। কেন তাদেরকে এই রকম অমানবিক নির্যাতন করা হয়?
উদ্দেশ্য- তাদেরকে মানসিক দিক থেকে ভয়ঙ্কর রকম শক্ত করা। দৈনন্দিন জীবনেও তোমরা- এইরূপ যন্ত্রণা পাওয়ার অভ্যাস করো। তবেই না তুমি জীবনে একজন সিংহ মানব হবে। মাঝে মাঝে উপোষ করো। মাঝে মাঝে AC ছাড়া গরমের দিনে, দিন কাটাও। মাঝে মাঝে ত্রিশ কিলোমিটার হাঁটো। নিজেকে যত পারো যন্ত্রণা দেওয়া অভ্যাস করো। আমি আজকাল গাড়ি চড়া ছেড়ে দিয়েছি। যেখানেই যাই, হেঁটে যাই। মেঝের উপর ইচ্ছে করি শুই। AC চালাই না। এইভাবেই আমি, শারীরিক আর মানসিক ভাবে নিজেকে শক্ত করি।
সিংহমানব কেউ এমনি এমনি হয়ে যায় না। তার জন্য তাকে ভয়ঙ্কর যন্ত্রণা পাওয়ার অভ্যাস করতে হয়।
© অরুণ মাজী
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem