ঘেঁটে ঘ হওয়া ঘি
ঘিয়ের ঘটিতে, ঘি-ই থেকে যায়।
বিধবার বেকার বাউন্ডুলে সন্তান
মা বুকে, সন্তান-ই থেকে যায়।
সুন্দরী বধূর আউল বাউল বর
বধূ বক্ষে, বর-ই থেকে যায়।
তলে তলে তালপাকানো প্রেম
প্রেমিক প্রাণে, প্রেম-ই থেকে যায়।
জটে জটে জট পাকানো জীবন
জীব মনে, জীবন-ই থেকে যায়।
বলি, ও মুখপুড়ী মন্দাকিনী,
মন্দ মন্দ তালে মরতে চললি?
মরদ মন্দ বলেই কি
তোকে মরতে হবে বাছা?
মরদের মেরুদণ্ডে
লঙ্কা ঘষে দিতে পারিস নে?
ছুঁড়ীর অভিমান হলো
তো মরতে চললো!
বলি- জীবনটা কি
ফ্যালনা না কি রে হতচ্ছাড়ী?
জীবনটা ফ্যালনা নয়।
জটে জটে জট পাকানো জীবন
সেও ফ্যালনা নয়।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণকেও আমি
হাপুস নয়নে কাঁদতে দেখেছি।
কুবেরকেও আমি
রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করতে দেখেছি।
দ্রৌপদীকেও আমি
অবসাদে, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
অনুতাপ করতে দেখেছি।
অর্জুনকেও আমি
হীনমন্যতায়
নিজেকে অভিশাপ দিতে দেখেছি।
কেবল
নড়তে পাড়ার নাম জীবন নয়।
কষ্টে কষ্টে ক্লিষ্ট হয়ে
তড়পে তড়পে
আর্তনাদ করার নামও জীবন।
আর্ত পীড়িত জীবন
সেও ফ্যালনা নয়।
অবসাদে অবসন্ন জীবন
সেও ফ্যালনা নয়।
যা জন্মে, তাই মরে।
যা উপরে উঠে, তাই ধপাস করে পড়ে।
কিছুই চিরস্থায়ী নয়।
না দুঃখ, না সুখ।
না কান্না, না হাসির বন্যা।
সবই সরে যায় গো
সবই সরে যায়।
মুখপুড়ী মন্দাকিনীর ফাটা কপাল
সেও একদিন জোড়া লেগে যায়।
পেন্তীর মায়ের রঙ চটা স্বপ্ন
সেও একদিন সুগন্ধে ভরে যায়।
যা আজ আঁধার, কাল তা আলো।
যা আজ মন্দ, কাল তা ভালো।
বুকে বল রাখো হে মানুষ
বুকে বল রাখো।
দুর্ভাগ্যকে দাঁত কেলিয়ে ভেংচি না কাটলে
দুর্ভাগ্য জয়ী হবে।
হেরে, কলসী দড়ি নিয়ে নদীর কিনারে ছুটলে
কেবল মৃত্যু জিতে যাবে।
সাঁটাও এক থাপ্পড় দুর্ভাগ্যের গালে,
দেখবে- তুমি জিতে যাবে।
জীবনটা ফুটো গামছা হতে পারে
তবুও ফ্যালনা নয়।
জীবনটা ভাঙা মুড়ির টিন হতে পারে
তবুও ফ্যালনা নয়।
জীবনটা ভাগ্যের পুতুল হতে পারে
তবুও ফ্যালনা নয়।
জীবনটা মরণ হতে পারে
তবুও ফ্যালনা নয়।
মরতেই যদি হয়
নক্ষত্র ছুঁতে গিয়ে মরো।
দুর্ভাগ্যের লাথি খেয়ে নয়।
© অরুণ মাজী
Painting: Amit Bhar
This poem has not been translated into any other language yet.
I would like to translate this poem